৫ কারণে চাকরি হারান দুদক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন
রাকিবুল ইসলাম
র্যাবের অভিযানে উদ্ধার হওয়া প্রায় ৯৪ লাখ টাকার চালান বাংলাদেশ ব্যাংক কিংবা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা না দিয়ে নিজের কাছে রেখে দেন দুর্নীতি দমন কমিশন- দুদকের চাকুরিচ্যুত কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন। একইসঙ্গে আদালতের অনুমতি না নিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব বন্ধ রাখার মতো গুরুতর পাঁচটি অভিযোগ এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এসব ছাড়াও কাঙ্খিত অঙ্কের ঘুষ না পেয়ে শরীফ হয়রানি করেছেন এমন ছয়জন ব্যক্তির লিখিত অভিযোগ জমা আছে দুদকের কাছে। আর এসব অভিযোগের সত্যতা মিলেছে বলেই শরীফকে দুদক থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সংস্থাটির শীর্ষ কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, ২০২০ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি র্যাবের অভিযানে কক্সবাজারের ভূমি অফিসের কর্মচারী সার্ভেয়ার ওয়াসিম খানকে আটক করা হয়। এসময় ওয়াসিমের বাড়ি থেকে জব্দ করা হয় ৯৩ লাখ ৬০ হাজার ১৫০ টাকা। জব্দ করা প্রায় ৯৪ লাখ টাকা তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে দুদকের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিনের কাছে হস্তান্তর করা হয় সরকারি কোষাগারে জমা দেয়ার জন্য। কিন্তু শরীফ উদ্দিন বাংলাদেশ ব্যাংক কিংবা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে টাকাগুলো জমা দেননি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০২১ সালের ১৩ ডিসেম্বর রুল জারি করে এক দিনের মধ্যে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন উচ্চ আদালত। গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর দেয়া দুদকের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, টাকাগুলো তাদের ভল্টেই আছে। তবে জব্দ টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক কিংবা সরকারি কোষাগারে জমা না হওয়ায় দুদক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত।
এদিকে আদালতের অনুমতি ছাড়াই কক্সবাজারে একটি ব্যাংক হিসাব জব্দ করেন দুদক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন। বিষয়টি আদালতের নজরে এলে শরীফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার এবং অসদাচরণের অভিযোগ তুলেন। এ বিষয়টিও তদন্ত করেছে দুদক। এছাড়া গত বছরের ১৬ জুন শরীফ উদ্দিনকে চট্টগ্রাম থেকে পটুয়াখালীতে বদলি করা হয়। কিন্তু শরীফ উদ্দিন নতুন কর্মস্থলে যোগ না দিয়ে বদলি আদেশ চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন আদালতে। একইসঙ্গে চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে নির্ধারিত সময়ের এক মাস পর ই-মেইলে জয়েনিং লেটার পাঠানে এবং এরও এক মাস পর সশরীরে কাজে যোগ দেয়াকে শরীফের দোষ হিসেবেই গণ্য করেছে দুদক।