হার্ট ও পালস দুটোই ভালো আছে কুমার বিশ্বজিতের ছেলের
সাদাকালো নিউজ
কানাডায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত সংগীতশিল্পী কুমার বিশ্বজিতের ছেলে নিবিড়ের শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। টরেন্টোর সেন্ট মাইকেল হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে। খবরটি জানিয়েছেন বিশিষ্ট গীতিকবি শহীদ মাহমুদ জঙ্গী।
দেশের একটি গণমাধ্যমকে শহীদ মাহমুদ বলেন, ‘বিশ্বজিতের সঙ্গে কিছুক্ষণ আগে আমার কথা হয়েছে। সে হাসপাতালেই আছে। আমাকে জানাল, নিবিড় এখন আগের চেয়ে ভালো আছে। এখনও আইসিইউতে চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে তাকে। বিশ্বজিৎ সকলের কাছে ছেলের জন্য দোয়া কামনা করেছে।’
এর আগে নিবিড়ের সর্বশেষ শারীরিক অবস্থার খবর জানিয়েছিলেন কুমার বিশ্বজিতের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও চ্যানেল আইয়ের জেনারেল ম্যানেজার ইজাজ খান স্বপন। তিনি বলেন, নিবিড়ের শরীরের কিছু অংশে ক্ষত হয়েছে। তবে হার্ট ও পালস দুটোই ভালো আছে। এখন তার অবস্থা কিছুটা ভালো, তবে পুরোপুরি সংকট কাটেনি।
জানা গেছে, নিবিড়ের শরীরে দুটি অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। একটি মাথায় অন্যটি চোখে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, নিবিড় কুমারকে সারিয়ে তুলতে তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তার আরও একাধিক অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে। তবে নিবিড়ের শারীরিক অবস্থা দেখে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
চিকিৎসকরা আরও বলছেন, দুর্ঘটনায় নিবিড়ের মাথার একটি বড় অংশ ও চোখের একটি বড় অংশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এছাড়া বুকের পাঁজরেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শরীরের আর কোথায় কোথায় ক্ষত হয়েছে তা দেখার জন্য ক্যামেরা দিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এরপরে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
১৩ই ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১১টায় টরেন্টোয় এই দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার পর অন্টারিও প্রাদেশিক পুলিশ জানিয়েছিল, মিসিসাগা এলাকার ৪২৭ হাইওয়ে ও ডানডাস ইন্টারসেকশনের কাছেই গাড়িটি দুর্ঘটনার মুখে পড়ে। গাড়িটি চালাচ্ছিলেন কুমার বিশ্বজিতের ছেলে নিবিড় কুমার।
এ ঘটনায় নিবিড় অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলেও গাড়িটিতে থাকা তিন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন। তাদের দেহ বাংলাদেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। টরেন্টোর বাংলাদেশ কনসাল অফিস তাদের সার্টিফিকেট ইস্যু করেছে। এ ঘটনায় কানাডায় বাংলাদেশি কমিউনিটির মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
টরেন্টো পুলিশের ভাষ্য, সংগীতশিল্পী কুমার বিশ্বজিতের ছেলে নিবিড় গাড়িটি চালাচ্ছিলেন। গাড়িটি খুব দ্রুতগতিতে চলছিল। এক হাইওয়ে থেকে আরেক হাইওয়েতে উঠার সময় টার্ন নিতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে চালক। এ সময় গাড়িতে চারজন আরোহী ছিলেন। তাঁরা সবাই বাংলাদেশি। শিক্ষার্থী ভিসায় তাঁরা টরেন্টোয় অবস্থান করছিলেন। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে।
তবে কেন দ্রুত গতিতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন নিবিড়? কোথা থেকেই বা আসছিলেন? সে ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো তথ্য দিতে পারেনি স্থানীয় পুলিশ। তবে তারা চারজন মিলে কানাডার দক্ষিণাঞ্চলের দিকে যাচ্ছিলেন বলে জানা গেছে।
এদিকে কানাডার স্থানীয় সময় বুধবার দুপুরে কুমার বিশ্বজিৎ ও তার স্ত্রী নাঈমা সুলতানা হাসপাতালের আইসিইউতে তাদের একমাত্র ছেলেকে দেখতে যান। সন্তানকে দেখার পর বিমর্ষ হয়ে পড়েন তারা।