মায়োসাইটিসে আক্রান্ত সামান্থা প্রভু! এই রোগ কি প্রাণঘাতী হতে পারে?
সাদাকালো নিউজ
গত কয়েক দিন আলোচনায় সামান্থা রুখ প্রভু। তার কারণ ‘যশোদা’ নামে এক ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। সেটির ট্রেলর মুক্তির পর থেকেই আলোচনায় রয়েছেন অভিনেত্রী। কিন্তু সেটিলই এক মাত্র কারণ নয়, অন্য একটি কারণেও আলোচনায় সামান্থা। কারণ তিনি জানিয়েছেন, এক বিরল অসুখে আক্রান্ত হয়েছেন তিনি। সেই অসুখটির নাম মাইয়োসাইটিস। সামান্থা জানানোর পর থেকেই এই অসুখটি সম্পর্কে অনেকেই খোঁজখবর শুরু করেছেন। জেনে নেওয়া যাক, এই অসুখটি আসলে কী?
মায়োসাইটিস কী?
চিকিৎসক সুধা মেনন হিন্দুস্তান টাইমসকে জানিয়েছেন, মায়োসাইটিস হল এমন একটি অবস্থা যেখানে পেশিতে প্রদাহ হয়। মায়ো মানে পেশি, আইটিস মানে প্রদাহ। এর কারণ সম্পর্কে বলতে গিয়ে চিকিৎসক বলেছেন, ‘নানা কারণে এটি হতে পারে। ভাইরাল সংক্রমণ, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং অটোইমিউনের সমস্যার মতো বিষয় থাকতে পারে এর পিছনে।’
চিকিৎসক সন্তোষ কুমার আগরওয়ালের মতে, ‘মায়োসাইটিস হল মূত একটি অটোইমিউন সমস্যা। যেখানে রোগীর পেশিগুলিকে তাঁর রোগ প্রতিরোধ শক্তিই আক্রমণ করে।’ চিকিৎসকদের মতে, বাহু, কাঁধ, পা, নিতম্ব, পেট এবং মেরুদণ্ডের আশপাশের পেশিগুলি মূলত এতে আক্রান্ত হয়। অসুখটি বাড়তে থাকলে এটি খাদ্যনালী, মধ্যচ্ছদা (ডায়াফ্রাম) এবং চোখের পেশিকে প্রভাবিত করতে পারে। রোগীরা সাধারণত বসার পরে দাঁড়াতে, সিঁড়ি বেয়ে উঠতে, জিনিস তোলার সময় অসুবিধা অনুভব করেন।
মায়োসাইটিস-এর লক্ষণ
চিকিৎসক সুধা মেনন বলছেন, এর ফলে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। ‘পেশিতে তীব্র ব্যথা, পেশির দুর্বলতা এবং দৈনন্দিন জীবনের সাধারণ কাজ করতে সমস্যা দেখা দিতে পারে। অল্প জ্বর, ফুসকুড়ি এবং গাঁটের ব্যথাও হতে পারে এর ফলে। সন্তোষ কুমার আগরওয়াল বলছেন, জ্বর, ওজন হ্রাস, গাঁটে ব্যথা, ক্লান্তি এবং পেশিতে ব্যথাই এর প্রাথমিক লক্ষণ।
রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা
সন্তোষ কুমার আগরওয়াল জানিয়েছেন, ক্লিনিকাল পরীক্ষা, রক্তের কাজ, এমআর ইমেজিং, ইএমজি এবং পেশি বায়োপসি করার পরে এই রোগটি নির্ণয় করা হয়। এই গ্রুপের রোগগুলি সাধারণত স্টেরয়েড এবং ইমিউনোসাপ্রেসিভ ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা হয়।
চিকিৎসার আলাদা আলাদা পদ্ধতিও আছে। বলছেন চিকিৎক মেনন। তাঁর কথায়, ‘রোগটি যদি ভাইরাল সংক্রমণের কারণে হয় তবে এটি সাধারণত নিজে থেকেই সারে। ‘যদি এটি ওষুধের কারণে হয়, তবে ওষুধ বন্ধ হয়ে গেলে এটি সেরে যায়। তবে সবচেয়ে পরিচিত কারণ হল অটোইমিউন। এটিতে শরীরে যে অ্যান্টিবডি রয়েছে, সেগুলি পেশি কোষগুলিকে লক্ষ্য করে প্রদাহ সৃষ্টি করে। এতেই ব্যথা এবং দুর্বলতা দেখা দেয়।’ এমনই বলছেন তিনি।
কত দিন লাগে এটি সারতে?
চিকিৎসকরা বলছেন, কোনও নির্দিষ্ট সময় বলা যায় না। পুরোটাই নির্ভর করে, এই অসুখটির কারণের উপর। কারও ক্ষেত্রে খুব দ্রুত সেরে যেতে পারে এটি। কারও আবার সারা জীবনও লেগে যায় এটি সারতে।