বিচ্ছেদের পেছনে ছিল মন্ত্রীর হাত, যা বললেন সামান্থা
বলিউড অভিনেত্রী সামান্থা রুথ প্রভু ও অভিনেতা নাগা চৈতন্য দীর্ঘ চার বছর সংসার করার পর বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ২০২১ সালে তাদের বিচ্ছেদ হয়। আর তাদের এ বিচ্ছেদের মূল কারণ ছিল— সম্পর্কে তৃতীয় ব্যক্তির আগমন।
মন্ত্রী আরও বলেন, এই চক্রান্তের পেছনে হাত ছিল তৎকালীন মন্ত্রী কেটি রামা রাওয়ের। এক রাজনৈতিক সভায় দেওয়া বক্তব্যেই এমনটি দাবি করেন কোনডা সুরেখা।
বনমন্ত্রী বলেন, কেটি রামা রাওয়ের জন্যই সামান্থার বিচ্ছেদ হয়েছে। উনি তৎকালীন সময়ে মন্ত্রী ছিলেন। বিভিন্ন অভিনেত্রীর ফোনে আড়িপাতা তার কাজ ছিল। সেই আড়ি পেতে অভিনেত্রীদের হাঁড়ির খবর খুঁজে বের করতেন তিনি। এরপর সেই গোপন তথ্য পাওয়ার পর অভিনেত্রীদের ব্ল্যাকমেইল করতেন! অভিনেত্রীদের মাদকের নেশা ধরাতে একপ্রকার বাধ্য করতেন। যে কারণে সংসার জীবনে বিচ্ছেদের পথে হাঁটা ছাড়া তাদের আর কোনো গতি থাকত না। এ কথা সবাই জানেন। সামান্থা জানে, নাগা চৈতন্য জানে, তাদের বাড়ির লোক জানে বলে জানান কোনডা সুরেখা।
তেলেঙ্গানার বনমন্ত্রীর মুখে এ কথা শুনে ঝড় উঠেছে সামাজিকমাধ্যমে। নেটিজেনদের তীব্র নিন্দার সম্মুখীন হতে হচ্ছে কোনডা সুরেখাকে। তেলেঙ্গানার বনমন্ত্রীকে নিন্দা জানিয়ে পাল্টা জবাব দিয়েছেন খোদ সামান্থা নিজে।
সামাজিকমাধ্যমে একটি পোস্ট করেছেন এ অভিনেত্রী। সামান্থা পরিস্কার ভাষায় জানিয়েছেন— তার ব্যক্তিগত জীবনকে যেন রাজনীতির আখড়ায় না টানা হয়।
এ অভিনেত্রী আরও বলেন, আমার বিবাহবিচ্ছেদের ঘটনা অত্যন্ত ব্যক্তিগত। এ বিষয়টি সম্পর্কে কোনো রকম মন্তব্য করা থেকে দয়া করে দূরে থাকুন। ব্যক্তিগত বিষয়ে নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলি না মানে এই নয়— সে বিষয়ে যা তা যে কেউ বলতে পারবেন। তিনি বলেন, আমি পরিষ্কার করে জানিয়ে দিতে চাই— এই বিচ্ছেদ ছিল দুটি মানুষের যৌথ ভাবনার ফসল। এর সঙ্গে কোনো রকম রাজনীতি জড়িয়ে নেই।
এরপর মন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে সামান্থা বলেন, ‘আর কোনডা সুরেখা একটা কথা বলি— আপনি নিশ্চয়ই জানেন, একজন রাজ্যের মন্ত্রী হওয়ার সুবাদে আপনার কোনো বক্তব্য অথবা মন্তব্য সমাজে কতটা ছাপ ফেলতে পারে। এ অভিনেত্রী বলেন, আপনাকে মনে করিয়ে দিতে চাই— অন্যদের ব্যক্তিগত বিষয় ও জীবনের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করুন। অন্যদের ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে একটু দায়িত্বশীল হন।
প্রসঙ্গত, অভিনেত্রী সামান্থা ও অভিনেতা নাগা চৈতন্যের বিচ্ছেদের কারণ কি শুধু তৃতীয় ব্যক্তির আগমন। তা কিন্তু তারা দুজনেই ভালো জানেন। অবশ্য এ বিচ্ছেদের পর এক সাক্ষাৎকারে নাগা চৈতন্য স্বীকার করে বলেছিলেন— সামান্থাকে তিনি ঠকিয়েছেন। নাগা বলেন, জীবন একটাই। সব রকম অভিজ্ঞতা থাকা দরকার। তবে এখন বয়স হয়েছে, নিজেকে বুঝতে শিখেছি। এখন মনে হচ্ছে, এবার থিতু হওয়ার সময় এসেছে। তবে হ্যাঁ— একটা সম্পর্কে থাকার সময় আমি ঠকিয়েছি তাকে। এরপর বহু আলোচনা-সামালোচনা শেষে গত ৮ আগস্ট বাগদান সারেন নাগা চৈতন্য ও অভিনেত্রী শোভিতা ধুলিপালা।
অভিনেত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর অবসাদে ভুগছিলেন নাগা। সামান্থার সাবেক শ্বশুর নাগার্জুন আক্কিনেনি জানান, প্রথম বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পর তার ছেলে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তবে দ্বিতীয়বার মনের মানুষ খুঁজে পেয়ে নাকি নাগা চৈতন্য খুব খুশি।
সাবেক স্বামীর বাগদান সারতেই প্রেমে পড়লেন সামান্থা রুথ প্রভু। তিনি নাকি নতুন করে প্রেম খুঁজে পেয়েছেন। বলিউড ইন্ডাস্ট্রির অন্দরেই মনের মানুষ খুঁজে পান এ অভিনেত্রী। এবার নতুন অধ্যায় শুরু করেছেন তিনিও। যদিও এই খবর চাউর হতেই অবশ্য ইঙ্গিতপূর্ণ একটি ছবি পোস্ট করেন সামান্থা। গাড়িতে তোলা নিজস্বীতে দেখা যাচ্ছে, মধ্যমা আঙুল মাথায় ঠেকিয়ে ইঙ্গিত দিচ্ছেন তিনি। অভিনেত্রীর টিশার্টে লেখা— ‘শান্তিতে ও নীরবে।’নেটিজেনদের অনেকেরই ধারণা— অভিনেত্রী হয়তো তাকে নিয়ে ঘনীভূত হওয়া গুঞ্জন সম্পর্কে সবাইকে চুপ করিয়ে দিলেন।
এদিকে শোভিতার সঙ্গে বাগদানের আগেই সামান্থাকে নিয়ে যে ঘটনা ঘটালেন নাগা চৈতন্য, তাতে ভক্ত-অনুরাগীরা অবাক। বৈবাহিক জীবনে নাগা চৈতন্য ও সামান্থার একসঙ্গে একাধিক ছবি ছিল। কখনো বাড়িতে, কখনো বা বেড়াতে, আবার কখনো অন্দরমহলের বেশ কিছু ছবি ছিল নাগা চৈতন্য ও সামান্থার। শোভিতার সঙ্গে জীবনের নতুন অধ্যায় শুরুর ঠিক আগেই সামান্থার সঙ্গে সেই ছবিগুলো সামাজিকমাধ্যম থেকে মুছে ফেলেন এ অভিনেতা। তবে ‘মজিলি’ ছবির পোস্টার ও সেটের কিছু ছবি এখনো রয়ে গেছে। সামান্থার সঙ্গে এ ছবিতে জুটি বেঁধেছিলেন নাগা চৈতন্য।