‘দত্তক দিতে চাই না, নিজেদের কাছে রাখতে চাই’
ময়মনসিংহে দুর্ঘটনার সময় সড়কে জন্ম নেয়া শিশু ফাতেমাকে কয়েক মাসের মধ্যেই নিয়ে যেতে চান তার দাদা। সরকারের কাছ থেকে পাওয়া অর্থসহায়তা দিয়ে পাকা ঘর তুলবেন তিনি। এরপর সেই ঘরে তুলতে চান নাতনিকে।
ছোট্ট ফাতেমা এখন রাজধানীর আজিমপুরে ছোটমণি নিবাসে। গত ২৯ জুলাই সেখানে তাকে রেখে যান দাদা মোস্তাফিজুর রহমান। ওই সময় তিনি জানান, ‘সরকার সব দায়িত্ব নেয়ার আশ্বাস দিয়েছে। নাতনির ভাত খাওয়ার বয়স হইলেই নিয়ে যাব। এখন আমার একটু সমস্যা চলছে।’
জন্মের পর মার্তস্নেহে থাকার কথা শিশু ফাতেমার। কিন্তু কপালে তাঁর চুমু মিলেনি মায়ের। মিলেনি মায়ের হাতে দেয়া কাজলের টিপ। পৃথিবীতে আসার আগেই মাকে হারায় ফাতেমা। ১৬ জুলাই ময়মনসিংহে একটি দুর্ঘটনা কেড়ে নেয় ফাতেমার বাবা-মা ও বোনকে। অলৌকিকভাবে বেঁচে যায় ফাতেমা।
সেই ছোট্ট ফাতেমা পরম মমতায় বেড়ে উঠছে ঢাকা ছোটমণি নিবাসে। বাবা-মা ও বোনকে হারিয়ে এখানে প্রায় ৪০ জনের পরিবারে নতুন কুড়ি ফাতেমা। গেল মঙ্গলবার দাদা মোস্তাফিজুর দেশের একটি গণমাধ্যমকে বলেন, নাতনির ভাত খাওয়ার বয়স পর্যন্ত তিনি অপেক্ষা করবেন না। কয়েক মাসের মধ্যে বাড়িতে পাকা ঘর তুলে তাকে নিয়ে যাবেন।
মোস্তাফিজুরের দুই ছেলে ছিল। ফাতেমার বাবা জাহাঙ্গীর দুর্ঘটনায় না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। আরেক ছেলে ১৩ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ছাড়েন। এখন তাঁর তিন মেয়ে আছে। গ্রামে তাঁর একটি চায়ের দোকান রয়েছে। টানাটানির সংসার আর চিকিৎসার কথা চিন্তা করে ফাতেমাকে ছোটমণি নিবাসে দিয়েছেন।
সমাজসেবা অধিদপ্তর পরিচালিত ছোটমণি নিবাসে ফাতেমা এসেছে ১৫ দিন বয়সে। এখন বয়স দেড় মাস। সেখানে নবজাতক থেকে ৭ বছর বয়সী প্রায় ৪০টি শিশুর সঙ্গে আছে ফাতেমা।
ছোটমণি নিবাসে গিয়ে দেখা যায়, শিশুরা দোলনা ও বিছানায় সারিবদ্ধভাবে ঘুমাচ্ছে। জেগে রয়েছে কেবল তিনটি শিশু। তাঁদের একজন ফাতেমা। দোলনায় সে আপনমনে হাত-পা নাড়ছিল। সড়ক দুর্ঘটনায় আঘাত পাওয়া ডান হাতে প্লাস্টার ছিল। এখন প্লাস্টার নেই।
সাদাকালো নিউজ