চলমান মশা নিধন কার্যক্রম হাস্যকর, বললেন কীটতত্ত্ববিদেরা
সাদাকালো নিউজ
দেশে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে ডেঙ্গু। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী ও মৃতের সংখ্যা। কর্তৃপক্ষ ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর মশা নিধনের প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কীটতত্ত্ববিদরা।
‘কেন এই ডেঙ্গু মহামারি? পরিত্রাণ কোন পথে?’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে দেশের কয়েকজন শীর্ষ কীটতত্ত্ববিদ এসব মন্তব্য করেন। শনিবার (১৯ আগস্ট) সকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশ ভেক্টর ম্যানেজমেন্ট গ্রুপের আয়োজনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে কীটতত্ত্ববিদ মনজুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, দেশে মশা নিয়ন্ত্রণের নামে তামাশা চলছে। ব্যাঙ, হরিণ আর হাঁস দিয়ে মশা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। পৃথিবীর আর কোথাও এমনটা দেখা যায় না।
তিনি বলেন, যেখানে অল্প সময়ে বেশি সংখ্যক রোগী, যেখানে পাওয়ার কথা না সেখানেও রোগী পাওয়া যায় সেটাই মহামারী। জুলাই মাসে যে আক্রান্ত এবং মৃত্যু হয়েছে, সেটা আক্ষরিক অর্থেই মহামারী। মানুষ ভয় পেতে পারে এজন্য সরকার ঘোষণা করতে পারছে না।
এ সময় মনজুর আহমেদ চৌধুরী আরও বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, মশা ও মানুষের সংযোগের বিচ্ছেদ ঘটাতে হবে। তা না হলে, ডেঙ্গু কমবে না। এ জন্য মশারি ব্যবহার করতে হবে, মশা নিয়ন্ত্রণের স্প্রে ব্যবহার, ফুলহাতা জামা ও প্যান্ট পরা, নিয়মিত বিরতিতে জমে থাকা পানি ফেলে দেওয়াসহ পূর্ণাঙ্গ মশা মারতে হবে।
মশার লার্ভা নিধনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) বিদেশ থেকে যে ব্যাকটেরিয়া বিটিআই (বাসিলাস থুরিনজেনসিস ইসরায়েলেনসিস) আমদানি করেছে, তা আদতে বিটিআই কি না, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন কীটতত্ত্ববিদেরা।
এ ছাড়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নতমানের ল্যাব না থাকা সত্ত্বেও বিটিআই কীটনাশকটিকে তারা ডেঙ্গু মশার লার্ভা নিধনে কিভাবে কার্যকরী বললো এবং গবেষক কবিরুল বাসারের কাজ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কীটতত্ত্ববিদরা। পাশাপাশি ডেঙ্গুর বর্তমান ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে দায়ী করেছেন তারা।
ডেঙ্গু মোকাবেলায় কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা তুলে ধরেন সংস্থাটির কীটতত্ত্ববিদরা।
উল্লেখ্য, ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে এডিস মশার লার্ভা ধ্বংসে ডিএনসিসির জন্য সিঙ্গাপুরের বেস্ট কোম্পানির কাছ থেকে কেনা হয় লার্ভা ধ্বংসকারী বিটিআই কীটনাশক। যা গত ৭ আগস্ট অনেকটা আয়োজন করেই প্রয়োগ করা হয়।
আমদানিকারক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ওই কীটনাশক সিঙ্গাপুরের বেস্ট কেমিক্যাল লিমিটেডের প্রস্তুত করা বলে দাবি করলেও সেটা সত্য নয় বলে দাবি করছে কোম্পানিটি। এ নিয়ে সিঙ্গাপুরের ওই কোম্পানি নিজেদের ফেসবুক পেজে একটি সতর্কবার্তাও দিয়েছে।
বেস্ট কোম্পানি জানায়, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কাছে তারা লার্ভা ধ্বংসকারী কীটনাশকটি বিক্রি করেননি। এরপর থেকেই এ নিয়ে চলছে আলোচনায়-সমালোচনা।