গণ অধিকারে বিভক্তি নুরের ঘনিষ্ঠরা রেজার পক্ষে!
সাদাকালো নিউজ
রেজা কিবরিয়া এবং নুরুল হক নুরের দ্বন্দ্ব শেষ পর্যন্ত ভাঙনের মুখে ঠেলে দিয়েছে গণ অধিকার পরিষদকে। এই দুই নেতার বিরোধ যখন দলে বিভক্তি এনেছে, তখন নুরুল হকের দীর্ঘ সময়ের সঙ্গী বা ঘনিষ্ঠরা তার পক্ষ ত্যাগ করে কিবরিয়ার পক্ষ নেয়ায় নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। নুরুল হকের ঘনিষ্ঠরা কেন তাকে ছেড়ে গেলেন এই প্রশ্ন এখন সবার মনে।
এদিকে রেজা কিবরিয়ার পক্ষে গণ অধিকার পরিষদের যে নেতারা অবস্থান নিয়েছেন, তাদের দলছুট বলে উল্লেখ করেছেন নুরুল হক। তবে ওই নেতারা তাদের অবস্থান পাল্টানোর পেছনে বেশ কিছু কারণ তুলে ধরছেন। তারা দলের আর্থিক অস্বচ্ছতাকে বড় কারণ হিসেবে বলছেন।
গণ অধিকার পরিষদে রেজা কিবরিয়ার পক্ষে অবস্থান নেয়া নেতাদের মধ্যে দুজন যুগ্ম আহ্বায়ক ও একজন যুগ্ম সদস্যসচিব আছেন। তারা নুরের পক্ষ ছাড়ার পেছনে দলের আর্থিক অস্বচ্ছতা, সিদ্ধান্ত গ্রহণে অগণতান্ত্রিক মনোভাব, প্রতারণামূলকভাবে আহ্বায়ক পদ থেকে রেজা কিবরিয়াকে অপসারণ, ইসরায়েলের নাগরিক মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে নুরুল হকের বৈঠক করার বিষয়কে কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এ ছাড়া হুট করে গণতন্ত্র মঞ্চ থেকে গণ অধিকার পরিষদের বেরিয়ে যাওয়ার বিষয়টিও তাদের ক্ষুব্ধ করেছে বলে জানিয়েছেন।
রেজা কিবরিয়ার পক্ষ নেয়া নেতারা অভিযোগ করেন, দল গঠনের পর থেকে এখন পর্যন্ত দলের কোনো মাসিক সভায় আর্থিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়নি। প্রতি মাসেই কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে কেউ না কেউ এই প্রতিবেদন উপস্থাপনের তাগিদ দিতেন। কিন্তু প্রতিবেদন প্রস্তুত হচ্ছে, আগামী মাসে দেখানো হবে—এমন টালবাহানা করে সময় পার করা হয়েছে। দলের আহ্বায়ককে অপসারণ নিয়েও অসন্তোষ তারা। তাদের রেজা কিবরিয়ার অপসারণ প্রতারণামূলকভাবে নেয়া হয়েছে।
এছাড়া ইসলায়েলের নাগরিক মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে নুরের বৈঠকের বিষয়টি নিয়েও ক্ষুব্ধ হয়েছেন দলটির নেতা–কর্মীদের অনেকেই। তারা অভিযোগ করেন, ১৮ই জুনের বৈঠকে নুর কাতারে ইসরায়েলি নাগরিক মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি স্বীকার করেন। তবে বৈঠকের কথা স্বীকার করলেও এ বৈঠকের আলোচ্যসূচি কী ছিল, তা কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদের অবহিত করতে অস্বীকৃতি জানান।
দলের কাউন্সিল নিয়েও অভিযোগ আছে নেতাদের। তাদের ভাষ্য, কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা তরুণদের দল গণ অধিকার পরিষদে নুরুল হক নিজের একক আধিপত্য স্থায়ী করতে চাইছেন। এছাড়া অগণতান্ত্রিক আচরণের অভিযোগও রয়েছে নুরের বিরুদ্ধে।
এদিকে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নুরুল হক নুর। তার দাবি, নিজ দলের ভেতরেই খেলা চলছে। পাল্টা অভিযোগও করেন তিনি। জানান, রেজা কিবরিয়াকে অপসারণের পর থেকে তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তোলা হচ্ছে। গণ অধিকার পরিষদকে ভাঙার চেষ্টা হচ্ছে। দলে বিভক্তির পরও ১০ জুলাই তাদের কাউন্সিল করবেন বলে জানান নুর।
এদিকে গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ছাড়তে নোটিশ দিয়েছে ভবনের মালিকপক্ষ। নোটিশে ভবন থেকে কার্যালয় সরানোর জন্য দুই দিনের সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পাওয়ার জন্য গণ অধিকার পরিষদ যে আবেদন করেছিল, সে আবেদনের তথ্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ১০ জুলাই সরেজমিনে যাচাই করার কথা বলা হয়েছে।