কে এই হামাস নেতা মোহাম্মদ দায়েফ ? ইসরায়েলকে নাস্তানাবুদ করার মূল কারিগর ?
সাদাকালো নিউজ
চার দিন ধরে ইসরায়েলের বিপক্ষে লড়ছে হামাস। এ ঘটনার মূল কারিগর হিসেবে সামনে আসছে গোষ্ঠীটির সামরিক শাখা আল-কাসাম ব্রিগেডের প্রধান মোহাম্মদ দায়েফের নাম। ফিলিস্তিনিদের মধ্যে বিপুল জনপ্রিয় তিনি। হামাসের এই নেতাকে চিহ্নিত করতে ৩০ বছর ধরে চেষ্টা চালাচ্ছে ইসরায়েলের গোয়েন্দারা। তবে কোনো অভিযান সফল হয়নি।
১৯৬০ এর দশকে গাজার একটি শরণার্থী শিবিরে জন্ম নেন দায়েফ। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যোগ দেন ইসরায়েলবিরোধী লড়াইয়ে। ২০০২ সালে আল-কাসাম ব্রিগেডের প্রধান নিযুক্ত হন তিনি। দায়েফকে চিরতরে শেষ করে দিতে ইসরায়েলি বাহিনী অন্তত সাতবার সর্বাত্মক চেষ্টা চালায়। এসব ঘটনায় প্রাণ যায় দায়েফের স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তানের। দায়েফও হারান এক হাত, এক পা ও এক চোখ।
১৯৭৩ সালে আরব-ইসরায়েল সংঘাতে ফিলিস্তিনের হয়ে লড়েন দায়েফ। নিজের লক্ষ্যের বিষয়ে এই নেতা বলেছিলেন, আমাদের জনগণের বিরুদ্ধে ক্রমাগত অপরাধ, দখলদারদের আন্তর্জাতিক আইনবিধি অস্বীকার, দখলদারদের প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা সমর্থনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা এসব বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকট সমাধানের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সংলাপ-রাজনীতির পরিবর্তে তেল আবিবের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে যেতেই বেশি আগ্রহী দায়েফ। সেই ধারাবাহিকতায় ২০১০ সালে একটি নিবন্ধ লেখেন তিনি। সেখানে চলমান সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে কীভাবে ইসরায়েলের সঙ্গে লড়তে চান, তা তুলে ধরেন।
দায়েফের শৈশব-কৈশোরের ব্যাপারে খুব একটা তথ্য পাওয়া যায় না। এমনকি তার পরিবার ও বাবা-মায়ের বিষয়েও বিশেষ কিছু জানা যায়নি। তবে ইসরায়েলি গোয়েন্দারা মনে করে, মোহাম্মদ দায়েফের আসল নাম মোহাম্মদ দিয়াব ইব্রাহিম আল-মাসরি।
দায়েফের হামাস-সংশ্লিষ্টতার শুরু হয় তার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম দিকে। তিনি যখন ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব গাজায় পড়ালেখা করছিলেন, তখন তিনি মুসলিম ব্রাদারহুডের আদর্শে অনুপ্রাণিত হন। পরে তিনি সক্রিয়ভাবে হামাসে যোগ দেন।
১৯৯০ দশকের শুরুর দিকে ফিলিস্তিনি লিবারেশন অর্গানাইজেশনের প্রধান ইয়াসির আরাফাত অসলো অ্যাকর্ডে স্বাক্ষর করলে মোহাম্মদ দায়েফসহ অন্যান্য হামাস নেতা ক্ষুব্ধ হন। কারণ এই চুক্তির কারণেই অনেক ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড ইসরায়েলের দখলে চলে যায়।
এই ঘটনার পরেই আল-কাসাম বিগ্রেড গঠন করে হামাসের সমরকৌশলবিদরা। সেখানে প্রধান করা হয় দায়েফকে। এরপর থেকেই ইসরায়েলের অভ্যন্তরে বিভিন্ন লড়াই পরিচালনা করে আসছেন ৬৩ বছর বয়সী এই হামাস নেতা।