কে এই লিজ ট্রাস? কীভাবে হলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী?
সাদাকালো নিউজ
নানা জল্পনা কল্পনা শেষে নতুন প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস। বরিস জনসন সরে যাওয়ার পর কনজারভেটিভ দলের নেতৃত্ব জিতে আসা লিজ ট্রাসকে যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করা হয়েছে।
কিন্তু এই নির্বাচনের জন্য কোনও সাধারণ ভোট হয়নি। নিজ রাজনৈতিক দলের এক লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি সদস্য জনসনের উত্তরসূরি হিসাবে ট্রাসকে নির্বাচিত করেছেন। সদস্যদের এ সংখ্যা যুক্তরাজ্যের জনসংখ্যার ১ শতাংশেরও কম। তাহলে প্রশ্ন, এত কম সংখ্যক লোক কীভাবে দেশের নেতা?
যুক্তরাজ্যে কোনও প্রধানমন্ত্রী তার মেয়াদকালের মধ্যে পদত্যাগ ঘোষণা করলে সাধারণ নির্বাচন ডাকা হয় না। বরং ক্ষমতাসীন দলের সদস্যরা নতুন নেতা বেছে নেন। এ প্রক্রিয়ায় নেতা বেছে নেয়া এবারি প্রথম নয়। এর চেয়েও কম মানুষেরও নতুন নেতা বেছে নেয়ার নজির আছে।
গেল সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাসের জয় ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে মার্গারেট থ্যাচার এবং টেরিজা মে-এর পর তৃতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন ট্রাস।
ট্রাসের এই পথ পরিক্রমায় নির্বাচনী প্রক্রিয়া এবং চলমান পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত খুঁটিনাটি তুলে ধরেছে বিবিসি। তাঁরা বলছেন, ১৯২২ কমিটি অব কনজারভেটিভ ব্যাকবেঞ্চ’ এমপি’দের চেয়ারম্যান গ্রাহাম ব্র্যাডি ভোটের ফলে ট্রাসের জয় ঘোষণা করেন।
ট্রাস পেয়েছেন ৮১ হাজার ৩২৬ ভোট। আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী ঋষি সুনাক পেয়েছেন ৬০ হাজার ৩৯৯ ভোট। তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন আজ মঙ্গলবার রানি এলিজাবেথের কাছে গিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ ঘোষণা করবেন। এর পরই ট্রাসকে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করবেন রানি।
সাংবিধানিক নিয়মানুযায়ী, একজন প্রধানমন্ত্রী সবসময়ই থাকতে হয়। সেকারণেই একজন উত্তরসূরি আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব না নেয়া পর্যন্ত বরিস জনসনকে প্রধানমন্ত্রী থাকতে হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রীকে সাধারণত রানি এলিজাবেথ বাকিংহাম প্রাসাদে আনুষ্ঠানিক ভাবে নিয়োগ দেয়া হয়। সেটিই রীতি। কিন্তু এবার তার ব্যতিক্রম হচ্ছে। স্কটল্যান্ডের বালমোরাল প্রাসাদে নতুন নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী এবার রানির হাত থেকে নিয়োগপত্র নেবেন।
ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলের সদস্যরা দুই প্রার্থী ঋষি সুনাক এবং লিজ ট্রাসের মধ্য থেকে একজনকে বেছে নিয়েছেন। দলের সদস্যদের ভোট জিততে দুই প্রার্থীকেই যুক্তরাজ্য জুড়ে প্রচার চালাতে হয়েছে। তাদের নীতি নিয়ে অনেকে অনেক প্রশ্নও করেছে।
২০১৬ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের পর টেরিজা মে এসে তাৎক্ষণিকভাবে নির্বাচন না দেওয়ারই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এখন লিজ ট্রাস আগাম নির্বাচন না দেয়ার পক্ষপাতি হয়ে থাকলে পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারবে ২০২৫ সালের জানুয়ারির মধ্যে।
গত শুক্রবার কনজারভেটিভ পার্টির সদস্যরা শেষ ভোট দিয়েছেন। ভোট দিতে পারার জন্য সদস্যদেরকে ২০২২ সালের ৩ জুন কিংবা তার আগেই দলে যোগ দিতে হয়েছে। দলের যোগ্য ভোটার বা সদস্যরা ডাকযোগে কিংবা অনলাইনে ভোট দিয়েছেন। আদতে সদস্যরা দু’বার ভোট দিতে পারেন এবং তাদের দ্বিতীয় ভোট গণনা হয়।
কিন্তু ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি সেন্টার এই ভোট প্রক্রিয়ায় বিদেশি কোনও রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের চেষ্টা নেয়ার ঝুঁকি আছে বলে সতর্ক করার পর দলের পক্ষ থেকে সদস্যদেরকে কেবল একবারি ভোট দিতে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।