কে এই ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খান ? মেধাবী প্রকৌশলী থেকে যেভাবে ওয়াসার এমডি !
সাদাকালো নিউজ
তাকসিম এ খান। ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক। টানা ১৩ বছর ধরে ওয়াসার দায়িত্ব পালন করে আসছেন তিনি। কখনও মেয়াদ বৃদ্ধি, কখনও আবার ভর্তুকি দিয়ে চলা প্রতিষ্ঠানটি থেকে মোটা অংকের বেতন-ভাতা নেয়াসহ বিভিন্ন কারণে আলোচিত ও সমালোচিত তাকসিম এ খান। সম্প্রতি তিনি আলোচনায় এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রে তার ১৪টি বাড়ি থাকার খবরে।
শিক্ষাজীবনে সেন্ট গ্রেগরিজ স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও নটর ডেম কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক সম্পন্ন করেন তাকসিম এ খান। এরপর ১৯৭৫ সালে উচ্চশিক্ষার জন্য রাশিয়ায় যান তিনি। ১৯৮১ সালে মস্কোর একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যন্ত্রপ্রকৌশলে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
শিক্ষাজীবন শেষে দেশে ফিরে ফিলিপস বাংলাদেশ লিমিটেডের প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন তাকসিম। ১৯৮৮ সালে তিনি ঢাকার আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্রে প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
২০০৯ সালের ১৪ই অক্টোবর তাকসিম এ খান ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে নিযুক্ত হন। এরপর আর তাকে এ পদ ছাড়তে হয়নি। নানা অভিযোগ আর বিতর্কের মুখে পড়লেও দফায় দফায় ওয়াসার এমডি পদে নিয়োগ পেয়েছেন তিনি। সবশেষ ২০২০ সালের পহেলা অক্টোবর তাকসিমকে ষষ্ঠবারের মতো ওয়াসার এমডি হিসেবে নিয়োগের অনুমোদন দেয়া হয়।
আজ সোমবার দৈনিক সমকালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একটি-দুটি নয়, ১৪ বাড়ি! দেশে নয়, সুদূর যুক্তরাষ্ট্রে। ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক শহরে কিনেছেন এসব বাড়ি। সব বাড়ির দাম টাকার অঙ্কে হাজার কোটি ছাড়াবে। দেশ থেকে অর্থ পাচার করে তিনি এসব বাড়ির মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
আর এসব বাড়ি কেনার অর্থের উৎস ও লেনদেন প্রক্রিয়ার তথ্য অনুসন্ধানে নেমেছে ইন্টারপোলসহ একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা। বিপুল পরিমাণ অর্থে একের পর এক বাড়ি কেনার ঘটনায় দেশটির গোয়েন্দা তালিকায় সন্দেহভাজন হিসেবে তাকসিমের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এমনকি বাড়িগুলোর সুনির্দিষ্ট তথ্য এবং ছবিও প্রকাশ করেছে সমকাল। তবে এমডি তাকসিম দৈনিক ডেইলি স্টারের কাছে এমন তথ্য সত্য নয় বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, সমকালের প্রতিবেদন শতভাগ মিথ্যা। যুক্তরাষ্ট্রে নিজের নামে কিংবা কোন আত্মীয়ের নামেও কোনো বাড়ি নেই।
তিনি বলেন, অনিয়ম এবং দুর্নীতির দায়ে যাদের ওয়াসা থেকে চাকরিচ্যুত করেছি, তারাই আজ আমার পিছু লেগেছে। তারা বিভিন্ন জায়গায় মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছেন। তারা চান, মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমাকে ওয়াসার এমডির চেয়ার থেকে সরাতে।
তাকসিম এ খানের যুক্তরাষ্ট্রে ১৪টি বাড়ি থাকার অভিযোগ বিষয়ে দুদকের তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে আজ জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে দুদককে এ সংক্রান্ত তদন্তের অগ্রগতি জানানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।