সীমান্তের কাঁটায় বিদ্ধ ভালোবাসা!
নাফিজা আক্তার
সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া হয়তো ভূখণ্ডকে দ্বিখণ্ডিত করতে পারে কিন্তু মানব হৃদয়কে কতটুকু পৃথক করতে পারে সেই প্রশ্ন বরাবরই থেকে যায়। কিন্তু ভালোবাসর কাছে কোনো কিছুই যে বাধা মানে না, তার একটি প্রমাণ সীমান্তবর্তী জেলা মেহেরপুরের শোলমারী গ্রাম। নদিয়া এবং শোলমারী পাশাপাশি দুটি গ্রাম, কিন্তু দেশ ভিন্ন। শোলমারী গ্রামের অনেকের ভালোবাসার মানুষ থাকে ভারতে। তাই সীমান্তে সব সময় থাকে কড়া প্রহরা। আর অপরাধ ঠেকাতে আছে কাঁটাতারের বেড়া।
বিভিন্ন পূজা-পার্বণ আর নানা উৎসবে খুব অল্প সময়ের জন্য খুলে দেওয়া হয় সীমান্ত। তখনই দেখা হয় প্রতিবেশী গ্রামের মানুষের সাথে। কিছুক্ষণের এই দেখা সাক্ষাতেই একে অপরের প্রেমে পড়ে যান অনেকে। কারও কারও সম্পর্ক গড়ায় বিয়ে পর্যন্ত। কেউ কেউ আবার সুযোগ পেলেই সীমান্ত পেরিয়ে ছুটে যান প্রিয় মানুষটির কাছে। ওই গ্রামের এমনই একজন হলেন রবিউল ইসলাম। ২০১৬ সালে কাঁটাতারের বেড়ার আড়ালেই নদিয়া গ্রামের এক মেয়ের প্রেমে পড়েন তিনি। একটা সময় বিজিবি-বিএসএফের চোখ ফাঁকি দিয়ে ওই গ্রামেও চলে যান রবিউল।
কিন্তু সেখানে গিয়ে রবিউল পরে যান আইনি জটিলতায়। এ কারণে আর বিয়ে করা সম্ভব হয়নি তার। ফিরে এসেছেন নিজ গ্রামে। তবে হাল ছাড়েননি এখনও। রবিউল বলেন, ‘মন তো চায়নি ওকে ওই পারে রেখে চলে আসি। তাকে সব সময় মিস করি আমি। তার এক জোড়া পায়েল আছে আমার কাছে, যেটা আমি প্রতিদিন একবার হলেও দেখি।’ রবিউলের মতো এমন অনেক প্রেমের নজির রয়েছে গ্রামটিতে। সময়ের ব্যবধানে হয়তো কমেছে যোগাযোগ, কিন্তু মন থেকে মুছে যায়নি প্রিয়জনের মুখ। আবার অনেকেই আছেন যারা কাঁটাতারের বেড়া ডিঙিয়ে সংসার পেতেছেন।