কীভাবে মাত্র ৮ মাসে ৩০ কেজি ওজন ঝরালেন এই গৃহবধূ?
নাফিজা আক্তার
আমাদের ওজন বৃদ্ধির নেপথ্যে রয়েছে অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার, জাঙ্ক ফুড খাওয়া, কম ঘুমের মতো বেশকিছু কারণ। ভারতীয়দের মধ্যে অনেকেই আছেন যাদের যতক্ষণ না ওভার ওয়েট হয় ততক্ষণ তাঁরা অসুস্থতা বুঝতে পারেন না। আবার অনেকেই আছেন যাদের, ভুড়ি ভাড়া কিংবা ওঠা বসা করতে কষ্ট বা শ্বাস কষ্ট হচ্ছে ততক্ষণ মানতেই চান না যে তাদের ওজন বাড়ছে।
তবে একটা বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে, ওজন কখনোই নিজ থেকে কমে না। ওজন কমানোর জন্য প্রয়োজন ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি, সঠিক খাবার এবং পর্যাপ্ত ঘুম।
আজ আপনাদের বলবো ৩০ বছর বয়সী জ্যোতি থরওয়ে নামে এক গৃহবধূর কথা। তিনি থাকেন ইউনাইটেড কিংডমের এভরডিন শহরে। নিজের চেষ্টায় তিনি শরীরের ৩০ কেজি ওজন কমিয়েছেন। আগে তার ওজন ছিলো ৯০ কেজি। বর্তমানে তার ওজন ৬০ কেজি।
জ্যোতি জানান, ২০১৮ সালে অন্তঃস্বত্ত্বা হওয়ার পর তার ওজন বাড়তে শুরু করে। বাড়তে বাড়তে ৯০ কেজিতে পৌঁছে যায়। ২০২১ সাল পর্যন্ত তার ওজন ওইরকমই ছিলো। এমনকি তিনি নিজেও কখনও ওজন কমানোর বিষয়ে ভাবেননি। তবে একবার আত্মীয় ও বন্ধুরা তার ওজন নিয়ে খুব মজা করেন। তারপরেই তিনি ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত নেন।
সম্প্রতি স্বামীর সঙ্গে ইউকে-তে যান জ্যোতি। সেখানে গিয়ে তিনি দেখেন যে, সে দেশের মানুষ খুবই ফিট। তারা অনেক ধরনের অ্যাক্টিভিটিও করেন। তখন সেগুলো করা তার কাছে চ্যালেঞ্জ হয়ে ওঠে। এরপর তিনি নিজের ডায়েটে নজর দেন। যার জেরে ধীরে ধীরে তার ওজন কমতে থাকে। এবং ৭ থেকে ৮ মাসের মধ্যে তার ওজন ৩০ কেজি কমে যায়।
মূলত দিনে ৩ বার খাবার খেতেন জ্যোতি থরওয়ে। সকাল, দুপুর ও রাত্রি। এই তিন বেলার খাবারের মোট ক্যালরি হত প্রায় এক হাজার ৭০০। রাতের খাবার তিনি সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে সেরে ফেলতেন। তারপর কিছুটা হাঁটতেন। এছাড়াও প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ও সন্ধ্যায় এক গ্লাস গরম পানিতে লেবু ও আদা মিশিয়ে খাওয়াও ছিলো তার রুটিন।
জ্যোতি ব্রেকফাস্টে খেতেন বাদাম, কাজু ও প্রোটিন শেক। লাঞ্চ করতেন দুইটি রুটি বা একটি বাজরা ভাকরি। দুই কাপ ডাল বা ১ কাপ সবজি। সবুজ সালাদ সঙ্গে এক গ্লাস ঘোল। ডিনারের সময় তিনি খেতেন সালাদ ও সোয়া চাপ বা সালাদের সঙ্গে প্রোটিন শেক।
এছাড়া সপ্তাহে একদিন তিনি নিজের পছন্দের সমস্ত খাবার খেতেন। তবে কোনওদিনই তিনি জিমে এক্সাসাইজ করেননি বলে জানিয়েছেন। কিন্তু প্রতিদিনই প্রায় প্রতি ঘণ্টা বেগে ৭ কিলোমিটার হাঁটতেন তিনি। এতে করে তার ৭০০ ব্যালরি বার্ন হতো। এরপর ঘরে সামান্য ব্যায়াম করতেন। একটা সময় ৭ কিলোমিটার থেকে বাড়িয়ে ১০ কিলোমিটার হাঁটতে শুরু করেন জ্যোতি। এভাবেই ধীরে ধীরে নিজের ওজন কমিয়ে ফেলেন তিনি।