শিল্পী সমিতির নেতৃত্বে কেন নেই নারীরা?
নাফিজা আক্তার
১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্প সমিতি যাত্রা শুরু করে। এই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন নায়করাজ রাজ্জাক। সাধারণ সম্পাদক ছিলেন খল অভিনেতা আহমেদ শরীফ। এই দুজন সংগঠনটি গড়ে তুলেছিলেন শিল্পীদের এক ছায়াতলে রাখার জন্য। এদের পরে আরও অনেকে এসেছেন এই সংগঠনটির শীর্ষ নেতৃত্বে। তাদের মধ্যে অনেকেই বেচেঁ আছেন। আবার কেউ কেউ পাড়ি জমিয়েছেন না ফেরার দেশে।
কিন্তু চলচ্চিত্র শিল্পীদের পেশাগত স্বার্থ রক্ষার্থে গঠিত এই সমিতির শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃত্বে এখন পর্যন্ত দেখা মেলেনি কোনো নারীর। যদিও এবার অনেকেই ধারণা করেছিলেন, সাধারণ সম্পাদক পদে চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার জয়ী হবেন। কিন্তু মাত্র ১৩ ভোটের জন্য হেরে গেছেন নিপুণ। তিনি ভোট পেয়েছেন ১৬৩টি। বিজয়ী প্রার্থী জায়েদ খান পেয়েছেন ১৭৬ ভোট।
তবে নির্বাচনে হারলেও ভক্ত-সমর্থক থেকে শুরু করে চলচ্চিত্র পাড়ার সকলের প্রশংসায় ভাসছেন নিপুণ। সকলেই বলছেন, হেরেও জিতে গেছেন এই চিত্রনায়িকা। কারণ, তিনি এবারের শিল্পী সমিতির নির্বাচনটা পুরোপুরি জমিয়ে দিয়েছিলেন। ইলিয়াস কাঞ্চনসহ পুরো প্যানেলকে সাজাতে তার অগ্রণী ভূমিকা নজর কেড়েছে সবার। নিপুণের সাংগঠনিক দক্ষতা প্রশংসা পাচ্ছে শিল্পী সমাজে। আগামীতে তিনি যে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য প্রস্তুত, এবারের নির্বাচন যেন সেই বার্তাই দিয়ে গেছে।
এর আগে ২০১৭-১৯ মেয়াদের নির্বাচনে ওমর সানী-অমিত হাসান প্যানেল থেকে কার্যনির্বাহী পদে লড়েছিলেন চিত্রনায়িকা মৌসুমী। জয়ও পেয়েছিলেন। কিন্তু এবার ২০১৯-২১ মেয়াদের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্যানেল থেকে সভাপতি পদে নির্বাচন করেছিলেন মৌসুমী। সেবার তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন মিশা সওদাগর। কিন্তু সেবার ভাগ্যদেবী সহায় হয়নি মৌসুমীর জন্য। সভাপতি পদে তিনি হেরে যান খল অভিনেতা মিশা সওদাগরের কাছে।
এবার মিশা সওদাগর ও জায়েদ খানদের প্যানেলে থেকে কার্যনির্বাহী সদস্য পদে লড়ছেন একাধিক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া এই অভিনেত্রী। যাদের সঙ্গে তার দা-কুমড়া সম্পর্ক ছিলো তাদের সঙ্গে কাধে কাধ মিলিয়ে, হাতে হাত রেখে ভোটের প্রচার করেছেন মৌসুমী। তবে এবার জয় পেয়েছেন অভিনেত্রী। তিনি ভোট পেয়েছেন তৃতীয় সর্ব্বোচ্চ ২২৫টি।
এদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে টানা তিন বার জয়ী জায়েদ খান জানিয়েছেন, ‘প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নিপুণকে সঙ্গে নিয়েই শিল্পীদের উন্নয়নে কাজ করবো। নিপুণতো শিল্পীদের জন্য কাজ করতেই নির্বাচনে এসেছিলেন। তাই আমার নতুন সভাপতি, নতুন কমিটি এবং নিপুণকে সঙ্গে নিয়েই আমি কাজ করব।’
জায়েদ আরও বলেন, ‘আমিও শিল্পী নিপুণও শিল্পী। শুধুমাত্র নির্বাচনের জন্য আমাদের দুটি প্যানেল দিতে হয়েছিল। তাছাড়া আমাদের মধ্যে ব্যক্তিগত কোনো রেষারেষি নেই। আমরা গতকাল পর্যন্ত একে অন্যের প্রতিযোগী বা প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলাম। আজ থেকে সবাই এক। যারা জিতেছেন, যারা হেরেছেন সবাই সমান। আমরা একসঙ্গে শিল্পীদের জন্য কাজ করতে চাই।’