বিদেশি তহবিল এনে ঘুরে দাঁড়াতে চায় ন্যাশনাল ব্যাংক
বেসরকারি ন্যাশনাল ব্যাংক বিদেশি তহবিল এনে ঘুরে দাঁড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। ২০ কোটি ডলারের বিদেশি ঋণ আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ। এই তহবিল ঋণপত্র (এলসি) খোলার কাজে ব্যবহার করা হবে। ঋণপত্র খুলতে শতভাগ নগদ টাকা জমা নেবে। পাশাপাশি অন্যান্য ব্যাংক এবং গ্রাহকের কাছেও বিক্রি করবে বিদেশ থেকে আনা ডলার। এতে যে টাকার সংস্থান হবে, তা দিয়ে গ্রাহক চাহিদা মেটাতে চায় ব্যাংকটি।
এ ছাড়া ন্যাশনাল ব্যাংক ঋণ আদায় কার্যক্রম জোরদার ও নতুন আমানত সংগ্রহ করে ঘুরে দাঁড়াতে চায়।
জানা গেছে, এই তহবিল ব্যবস্থাপনায় রয়েছে জিম্বাবুয়ের একটি প্রতিষ্ঠান। তহবিলটি আসবে নিউইয়র্কের জেপি মরগ্যান ব্যাংকের মাধ্যমে। ঋণের মেয়াদ ১০ বছর, বার্ষিক সুদের হার প্রায় ৫ শতাংশ। প্রথম তিন বছর ঋণ পরিশোধে বিরতি মিলবে। এই ঋণ পাওয়া যাবে স্ট্যান্ড বাই লেটার অব ক্রেডিট (এসবিএলসি) খোলার বিপরীতে।
জানতে চাইলে ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ব্যাংকের উন্নতি ঘটানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এ জন্য দেশি-বিদেশি সহায়তা নেওয়া হচ্ছে।’
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নানা অনিয়মে জর্জরিত এই ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে পরিবর্তন আনে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে ব্যাংকটি আগে থেকে চলা তারল্যসংকট থেকে এখনো বের হতে পারেনি। ফলে গ্রাহকেরা চাহিদামতো টাকা উত্তোলন করতে পারছেন না। ব্যাংকটির ৪৯ শতাংশ ঋণই এখন খেলাপি।
জানা গেছে, গত ৩০ জুন ব্যাংকটিতে মোট আমানত ছিল ৩৯ হাজার ৮১৩ কোটি টাকা, যা গত ২৩ অক্টোবর কমে হয়েছে ৩৮ হাজার ১৯৯ কোটি টাকা। ৩০ জুন ঋণ ছিল ৪২ হাজার ৫১০ কোটি টাকা, যা ২৩ অক্টোবর কমে হয় ৪২ হাজার ১৭১ কোটি টাকা। ঋণ আদায় জোরদার করায় ঋণ কিছুটা কমেছে।
সূত্র জানায়, ব্যাংকটি খেলাপি ও পুনঃতফসিল করে গত জুলাই মাসে ৬৪ কোটি টাকা ও আগস্টে ৫৩ কোটি টাকা আদায় করে। তবে সেপ্টেম্বরে ঋণ আদায় বেড়ে ১০৫ কোটি টাকায় ওঠে। চলতি মাসের প্রথম ২৪ দিনে ঋণ আদায় হয়েছে ৪৭ কোটি টাকা।
সরকার পরিবর্তনের পর গত ২০ আগস্ট ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বিলুপ্ত করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সঙ্গে ব্যাংকটি পরিচালনার জন্য নতুন পর্ষদ গঠন করে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই ব্যাংকের পরিচালকদের অনেকেই চট্টগ্রামভিত্তিক এস আলম গ্রুপের নামে-বেনামে থাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ছিলেন। নতুনভাবে পর্ষদ গঠনের পর ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেন ব্যাংকটির উদ্যোক্তা ও সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু।