ইসরাইলের এতো গভীরে কীভাবে হামলা চালাল হিজবুল্লাহর ড্রোন?
ইসরাইলের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা খুবই ‘নির্ভরযোগ্য’ হিসেবে বিবেচিত। তবে সেই প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে রোববার ইসরাইলের অনেকটা ভেতরে ঢুকে প্রাণঘাতী হামলা চালাতে সক্ষম হয় হিজবুল্লাহর ড্রোন।
স্থানীয় সময় রোববার দিনের শেষ ভাগে ওই ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটে। গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজা যুদ্ধ শুরুর পর এদিনই নিজ ভূমে সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলার শিকার হলো ইসরাইল।
আইডিএফ জানিয়েছে, হিজবুল্লাহর পাঠানো একটি ড্রোন বিন্যামিনা শহর-সংলগ্ন একটি ইসরাইলি সেনাঘাঁটিতে হামলা চালায়। শহরটির অবস্থান তেলআবিবের উত্তরে, লেবানন সীমান্ত থেকে প্রায় ৪০ মাইল দূরে।
এর আগে, হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা বিন্যামিনায় ইসরাইলি বাহিনীর একটি পদাতিক প্রশিক্ষণ শিবির লক্ষ্য করে হামলা চালাতে একঝাঁক ড্রোন পাঠিয়েছে।
হিজবুল্লাহর এই ঘোষণার পরই ইসরাইলে ড্রোন হামলার খবর আসে।হিজবুল্লাহ জানায়, গত বৃহস্পতিবার লেবাননে চালানো ইসরাইলি হামলার বদলা হিসেবে তারা রোববার ইসরাইলে ড্রোন হামলা চালিয়েছে।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গত বৃহস্পতিবার লেবাননে ইসরাইলি হামলায় ২২ জন নিহত এবং ১১৭ জন আহত হন।
হিজবুল্লাহ আরও জানায় যে, তারা ইসরাইলের গোলানি ব্রিগেডকেও হামলার লক্ষ্যবস্তু করেছে। ইসরাইলি গোলানি ব্রিগেড মূলত আইডিএফের একটি পদাতিক ইউনিট। এই ইউনিটের সদস্যদের দক্ষিণ লেবাননে মোতায়েন করা হয়েছে।
সিএনএনের খবরে বলা হয়, ইসরাইলের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা খুবই নির্ভরযোগ্য হলেও রোববার এই আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে পেরেছে হিজবুল্লাহর ড্রোন। তবে এ হামলার সময় বিন্যামিনা এলাকায় কোনো সতর্কবার্তার খবর পাওয়া যায়নি। ফলে হিজবুল্লাহর এই ড্রোনগুলো কীভাবে ইসরাইলি ভূখণ্ডের এতটা গভীরে প্রবেশ করতে সক্ষম হলো, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, তারা ইসরাইলের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ব্যতিব্যস্ত রাখার জন্য উত্তর ইসরাইলি শহর নাহরিয়া ও একর লক্ষ্য করে বেশ কয়েক ডজন রকেট ছোড়ে। একই সঙ্গে তারা একঝাঁক ড্রোন পাঠায়।
আর এ কারণেই মূলত এই ড্রোনগুলো আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে এড়াতে পেরেছে। ইসরাইলি প্রতিরক্ষা রাডারগুলোকে ফাঁকি দিতে পেরেছে। ড্রোনগুলো বিন্যামিনার অভিজাত গোলানি ব্রিগেডের প্রশিক্ষণ শিবিরের লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছে আঘাত হানতে পেরেছে।
এ বিষয়ে আইডিএফের শীর্ষ মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, ইসরাইলি সামরিক বাহিনী এ ঘটনার তদন্ত করবে। কীভাবে ঘাঁটিতে ড্রোন প্রবেশ করল এবং কোনো সাইরেন বাজল না, তা খতিয়ে দেখা হবে।
ওই ঘাঁটি থেকে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় হাগারি জানান, তারা এ ঘটনা থেকে শিক্ষা নেবেন এবং ঘটনার তদন্ত করবেন।
আইডিএফের এই মুখপাত্র বলেন, ইসরাইলি বাহিনী যুদ্ধের শুরু থেকেই ড্রোনের হুমকি মোকাবিলা করে আসছে। তবে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় আরও উন্নতি দরকার বলেও মনে করেন তিনি। সূত্র: সিএনএন