নির্বাচন নিয়ে কেনো আবারও আদালতে নিপুণ
নির্বাচনে হেরে গিয়ে আবারও আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সমালোচিত সাধারণ সম্পাদক নিপুণ আক্তার। নির্বাচনে মিশা-ডিপজলের প্যানেলের কাছে হেরে তাদের গলায় ফুলের মালা পরিয়ে দিয়েছিলেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্যানেলের এই সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী। কিন্তু মাস না পেরোতেই সেই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে আদালতে রিট করেছেন সদ্য সাবেক এই সাধারণ সম্পাদক। তবে কি তার দেওয়া ফুলের মালা এখন মিশা ডিপজলের গলার কাটা হয়ে দাঁড়াবে!
গত ১৯ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২৪-২০২৬ মেয়াদের নির্বাচন। এবারের নির্বাচনে মাহমুদ কলি-নিপুণ আক্তার এবং মিশা সওদাওগর-ডিপজল দুটি প্যানেলে নির্বাচন হয়। সদস্যদের ভোটে মিশা-ডিপজল প্যানেল থেকে সভাপতি পদে ২৬৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন মিশা সওদাগর। তার প্রতিদ্বন্দ্বী মাহমুদ কলি ১৭০ ভোট পেয়ে পরাজিত হন। অন্যদিকে সদ্য সাবেক ও আলোচিত সাধারণ সম্পাদক অভিনেত্রী নিপুণ আক্তারকে ১৬ ভোটে হারিয়ে বিজয়ের মালা ছিনিয়ে নেন ডিপজল। তিনি ২২৫ ভোট পেয়ে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।
ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার পরেরদিন ভোরে নির্বাচন কমিশনার এই ফলাফল ঘোষণা করলে তা মেনে নিয়ে বিজয়ীদের ফুলের মালা গলায় পরিয়ে দেন নিপুণ। তবে মাস না ঘুরলেও মাথা ঘুরে গেছে এই অভিনেত্রীর। কারণ, নির্বাচনের ফল বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেছন নির্বাচনে পরাজিত এই সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী।
চলতি মাসের ১৫ মে বুধবার আদালতে রিট দায়ের করেন নিপুণ। রিটে মিশা-ডিপজলের নেতৃত্বাধীন কমিটির দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞাও চাওয়া হয়েছে। বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চে রিট আবেদনটি দায়ের করা হয়। জানা গেছে, নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে এই ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিটে। পাশাপাশি নতুন করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার নির্দেশনাও চেয়েছেন এই অভিনেত্রী।
এতদিন পর কেন এই রিট- গণমাধ্যমকর্মীদের এমন প্রশ্নের উত্তরে নিপুণ বললেন, ‘রিট আরও আগেই করা উচিত ছিল। ভোট হয়েছে শুক্রবার। ভোটের ফল এসেছে শনিবার সকালে। রোববারই রিটটি করা দরকার ছিল। কিন্তু আমি অসুস্থ হয়ে পড়া এবং জরুরি কাজে যুক্তরাজ্য আসার কারণে সেটা করা সম্ভব হয়নি। আমি আসার সময় সবকিছু প্রসেস করে রেখে এসেছিলাম। গত মঙ্গলবার আমার আইনজীবীর মাধ্যমে রিটটি করেছি।’
আলোচিত এই অভিনেত্রী জানান, শুধু ভোটের দিনই নয়, ভোটের আগের দিন থেকে তিনি নির্বাচনকে ঘিরে নানান অনিয়মের ঘটনার স্বাক্ষী হয়েছেন। আর মিশা-ডিপজল প্যানেলের সঙ্গে নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন আপিল বোর্ডের যোগসূত্রে এই অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করে নিপুণ । তাছাড়া, ভোট শেষ হওয়ার পর থেকেই নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান ও আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যানের কথাবার্তা রহস্যজনক মনে হয়েছে তাঁর কাছে।
এছাড়াও নিপুণ জানান, তাঁর প্যানেল থেকে নির্বাহী পরিষদের সদস্য পদপ্রার্থী সাদিয়া মির্জা তাকে ফোন করে জানান, মিশা-ডিপজল প্যানেল থেকে কেউ কেউ হুমকি দিচ্ছেন তাকে। কারণ আগের দিন সাদিয়া ডিপজলের বিরুদ্ধে ভোট কেনার ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন। একইসাথে নির্বাচনের রাতের অনিয়মের অনেক কিছুই প্রমাণ হিসেবে নিপুণের কাছে রয়েছে বলেও জানান তিনি।
দুই বছর আগেও শিল্পী সমিতির এই নির্বাচন নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন নিপুণ। সেবার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জায়েদ খানকে নিয়ে আপত্তি জানান অভিনেত্রী। এরপর জায়েদ খানের সদস্যপদও বাতিল করেন এই শিল্পী নেত্রী। আর এবারতো পুরো শিল্পী সমিতির কমিটির বিরুদ্ধেই আদালতে গেলেন তিনি। শিল্পী সমিতির এবারের নির্বাচনের ফল এবার কোথায় গিয়ে দাড়ায় সেটিই এখন দেখার পালা।