মালিকরা কারাগারে, তহবিল নেই, কী হবে ইভ্যালির গ্রাহকদের?
জহুরা প্রিতু
ইভ্যালির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির সব অফিস।
ফেসবুক ভেরিফায়েড পাতায় ইভ্যালি বলছে, ‘বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ শনিবার থেকে ইভ্যালি এমপ্লয়িগণ নিজ নিজ বাসা থেকে অফিস কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।’
গত কয়েকদিন পাওনা টাকা বা পণ্যের দাবিতে ইভ্যালির অফিসগুলোর সামনে বিক্ষোভ করেছে গ্রাহকরা। এরইমধ্যে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটি এই ঘোষণা দিল।
কিন্তু ইভ্যালি একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান। তাদের গ্রাহক ব্যবস্থাপনা, পণ্য সরবরাহকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ, পণ্য প্যাকিং ও সরবরাহ ইত্যাদি কাজ করতে হয়। এমন একটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে হোম অফিস থেকে কীভাবে এসব কর্মকাণ্ড চালানো হবে, তা পরিষ্কার নয়।
ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ- ই-ক্যাব বলছে, যেহেতু এখানে অনেক মানুষের স্বার্থ জড়িত, সরকার চাইলে প্রতিষ্ঠানটি নিজেরা পরিচালনা করতে পারে অথবা কোন একটা প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দিতে পারে।
বড় কোন প্রতিষ্ঠানের কারণে যখন অসংখ্য মানুষ আর্থিকভাবে ঝুঁকির মুখোমুখি হন তখন প্রশাসক নিয়োগ দিতে পারে সরকার। তবে সেজন্য আদালতের আদেশের প্রয়োজন হয়। সাধারণত সরকারের পক্ষে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কোন প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে থাকেন প্রশাসক। এই সময় গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষায় নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেন তাঁরা।
এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডিজিটাল কমার্স সেলের প্রধান হাফিজুর রহমান বিবিসি বাংলাকে জানান, , সরকার চাইলেই প্রশাসক নিয়োগ দিতে পারে না। আদালত আদেশ দিলে তখন সরকার প্রশাসক নিয়োগ দেয়। বিষয়টি নিয়ে যেহেতু মামলা হয়েছে, আইনি প্রক্রিয়ায় রয়েছে। সেখানে আদালত যদি আদেশ দেয়, তখন সরকার সেটি পালন করবে।’
তিনি আরও বলেন, যেহেতু মামলা হয়েছে, তা নিয়ে তদন্ত চলছে। তদন্তে কি বেরিয়ে আসে, আদালত কি বলেন, সেটা দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
সরকারি এই কর্মকর্তার পরামর্শ, ভুক্তভোগী গ্রাহকদের জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ জানিয়ে রাখা উচিত। তাহলে যদি গ্রাহকদের টাকা ফেরতের কোন প্রক্রিয়া শুরু করা হয়, তখন তাদের সেটা সুবিধা দেবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ডিজিটাল ই-কমার্স পরিচালন সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির তথ্য অনুযায়ী, গ্রাহক, পণ্য সরবরাহকারী ও অন্যান্য সংস্থার কাছে ইভ্যালির দেনা ৫৪৩ কোট টাকা। প্রতিষ্ঠানের গ্রাহক রয়েছে দুই লাখের বেশি। তবে প্রতিষ্ঠানটির হাতে রয়েছে একশো কোটি টাকারও কম সম্পদ।