টাইটানিকের কাছে গিয়ে কেন হারিয়ে গেল টাইটান?
সাদাকালো নিউজ
সমুদ্রের তলদেশে ঠিক কী হয়েছিলো ডুবোযান টাইটানের- এমন প্রশ্ন এখন সবার মনে? সঙ্গে বাড়ছে রহস্যও। আটলান্টিক মহাসাগরের গভীরে টাইটানিকের কাছেই পাওয়া গেছে টাইটানের কিছু অংশ। মার্কিন কোস্টগার্ডের দাবি, সমুদ্রের গভীরে একেবারে দুমড়ে-মুচড়ে গেছে ডুবোযানটি। ২২ ফুটের ডুবোযানটি পাঁচ ভাগে ভাগ হয়ে গেছে। সেগুলোর খোঁজ মিলেছে। কিন্তু পাঁচ অভিযাত্রীর দেহের কোনও হদিস মেলেনি।
গেল ১৮ই জুন পাঁচ আরোহীকে নিয়ে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে আটলান্টিকের ১৩ হাজার ফুট গভীরে নেমেছিলো টাইটান। সমুদ্রের উপরে থাকা সহযোগী জাহাজকে প্রতি পাঁচ মিনিট পরপর সিগন্যাল পাঠানোর কথা ছিলো টাইটানের। একটা সময় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় টাইটানের। নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও টাইটান না ফেরায় মার্কিন কোস্টগার্ডের কাছে খবর পোঁছে যায়।
পরে ১৯ জুন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডা টাইটানের খোঁজে সাগরে নামে। সমুদ্রের ৪০০০ মিটার গভীরে শব্দ নিরীক্ষণ যন্ত্র পাঠানো হয়। সিএনএনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেই শব্দযন্ত্রের মাধ্যমে ৩০ মিনিট পরপর কয়েকটি শব্দ শুনতে পাওয়া যায়। সেই শব্দ কোথা থেকে আসছিলো সেটি চিহ্নিত করতে ২১ জুন দূরনিয়ন্ত্রিত একটি সমুদ্রযানকে পানির গভীরে পাঠানো হয়।
জানা গেছে, ৯৬ ঘণ্টার মতো অক্সিজেন ছিল টাইটানে। কিন্তু যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর তিন দিন কেটে যাওয়ায় অক্সিজেনের পরিমাণও কমেছিলো। তাই দ্রুত উদ্ধারের জন্য আরও দু’টি দূরনিয়ন্ত্রিত সমুদ্রযান পাঠানো হয়। কিন্তু তখনও কোনও হদিস পাওয়া যায়নি টাইটানের। পরে ২২ জুন এক সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র কোষ্টগার্ড জানায়, টাইটানের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়া গেছে।
সমুদ্র বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যে জোরালো শব্দ চিহ্নিত করা গিয়েছিল, সেই সময়েই টাইটানের সাথে কিছু একটা ঘটেছিল। অনুমান করা হচ্ছে, পানির প্রবল চাপে দুমড়ে যায় ডুবোযানটি।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এই ধরনের ডুবোযান কার্বন ফাইবার এবং টাইটানিয়াম দিয়ে তৈরি করা হয়। যদি তাতে কোনও ত্রুটি থাকে বা কোনও ভাবে চিড় ধরে তা হলে দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কারো জীবিত থাকারও কথা নয়। সামুদ্রিক প্রাণীর কারণে দেহ না পাওয়ারও কারণ হতে পারে।
১৮ই জুন ওয়াশিংটনের এভারেট কাউন্টিভিত্তিক কোম্পানি ওশানগেটের সোবমেরিন টাইটানে চড়ে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়েছিলেন পাঁচ পর্যটক। তারা হলেন- পাকিস্তানের ধনকুবের শাহজাদা দাউদ, তার ছেলে সুলেমান, যুক্তরাজ্যের ধনকুবের হ্যামিশ হার্ডিং, ফরাসি সাবমার্সিবল পাইলট পল হেনরি ও টাইটানিক অভিযান সংস্থার সিইও স্টকটন রাশ।