শাকিব খান কি সত্যি ধ-র্ষ-ণে জড়িত?
সাদাকালো নিউজ
আপত্তিকর কর্মকাণ্ডের মতো গুরুতর অভিযোগ ঢাকাই সিনেমার সুপারস্টার শাকিব খানের বিরুদ্ধে। এমন অভিযোগ স্বয়ং তার নির্মাণাধীন সিনেমা ‘অপারেশন অগ্নিপথের’ প্রযোজক রহমত উল্যাহর। ১৫ই মার্চ প্রযোজক সমিতি, পরিচালক সমিতি, শিল্পী সমিতি ও ক্যামেরাম্যান সমিতিতে দেয়া লিখিত অভিযোগপত্রে শাকিবের বিরুদ্ধে অসদাচরণ এবং মিথ্যা আশ্বাসের অভিযোগও তুলেছেন এই প্রযোজক।
কিন্তু সত্যিই কি এমন গুরুতর অপরাধের সঙ্গে জড়িত শাকিব খান? নাকি তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের নেপথ্যে আছে অন্য কোনো কারণ? সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন প্রশ্নেরই জবাব খুঁজছেন কিং খানের ভক্ত-অনুরাগীরা।
সম্প্রতি এফডিসির ১৯টি সংগঠনকে নিয়ে অত্যন্ত কড়া ভাষায় সমালোচনা করেন শাকিব খান। দেশের প্রথম সারির একটি দৈনিকের সঙ্গে আলাপে তিনি বলেন, অনেকে কাজ বাদ দিয়ে সমিতি নিয়ে পড়ে থাকে। এফডিসি হয়ে গেছে সমিতি-নির্ভর প্রতিষ্ঠান। কিছু অযোগ্য লোকের কাছে সিনেমার পরিবর্তে সমিতি হয়ে গেছে ধ্যান-জ্ঞান। সমিতির নির্বাচন, পিকনিক আর ইফতার পার্টি নিয়ে তারা ব্যস্ত থাকে সারা বছর।
শাকিব খান আরও বলেন, ‘গেল পাঁচ বছর ধরে এফডিসিতে সমিতি নিয়ে হানাহানিতে সিনেমার পরিবেশ নষ্ট হয়েছে।’ তিনি মনে করেন, ‘এসব চর্চা না করে জরুরি ছিল এফডিসি থেকে সার্ভার সিস্টেমের মাধ্যমে সিনেমা প্রদর্শন করা। এফডিসিতে পোস্ট প্রোডাকশনের কাজের ব্যবস্থা করা। অথচ সবাই সমিতি নিয়ে ব্যস্ত। তাতে চলচ্চিত্রের বারোটা বেজেই চলেছে।’
কিং খানের এমন মন্তব্যের দুদিন না যেতেই তার বিরুদ্ধে উঠল অসদাচরণ, মিথ্যা আশ্বাস ও আপত্তিকর কর্মকাণ্ডের অভিযোগ। কাজেই সমিতি নিয়ে করা শাকিব খানের মন্তব্যের সঙ্গে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। শাকিব-ভক্তরা মনে করছেন, সমিতি নিয়ে মুখ না খুললে তাদের প্রিয় তারকার বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অভিযোগ উঠতো না।
যদিও কিং খানের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ নতুন নয়। গেল বছরের দোশরা অক্টোবর মিলি সুলতানা নামে আমেরিকা প্রবাসী এক বাংলাদেশি সাংবাদিক তার ফেসবুকে দেয়া পোস্টে দাবি করেন, ২০১৮ সালে অস্ট্রেলিয়ায় ‘সুপার হিরো’ ছবির শুটিং চলাকালীন এক নারী সহ-প্রযোজককের সঙ্গে জোরপূর্বক আপত্তিকর কাজ করে শাকিব। এ ঘটনায় তার নামে মোকদ্দমাও হয়। আটকও হয়েছিলেন তিনি। পরে প্রভাব খাটিয়ে ছাড়া পান।
এবার প্রযোজক রহমত উল্যাহ তার লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, ভুক্তভোগী নিজেও একজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নারী। আমি সেই ফৌজদারি অভিযোগের সাক্ষী ছিলাম। এই ঘটনার পর তিনি এবং তার পরিবার সামাজিকভাবে যেই গ্লানি এবং কুৎসার স্বীকার হন, তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।
প্রযোজকের দাবি, এর বিচার চাইতে গিয়ে একটা পর্যায়ে ওই নারী এবং তার পরিবারের টিকে থাকাটাই অসম্ভব হয়ে পড়ে। ঘটনার দিন ওই সহকর্মীকে নিয়ে আমরা যখন হাসপাতালে ব্যস্ত, শাকিব সেদিন কাউকে কিছু না জানিয়ে অস্ট্রেলিয়া থেকে চুপিসারে চলে যান। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে তিনি আবার অস্ট্রেলিয়ায় গেলে পুলিশ তাকে আটক করে। তবে সামাজিক চাপে ভুক্তভোগী মুখ খুলতে না চাওয়ায় শাকিব সে যাত্রায় ছাড়া পেয়ে যান।
২০১৮ সালে শাকিব খানের নামে যখন অভিযোগ আনা হয় তখন অস্ট্রেলিয়াতে চলছিল কিং খানের ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ ছবির শুটিং। যেটির কাজ এখনো শেষ হয়নি। একি বছর শাকিব যখন অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে দেশটির পুলিশের হাতে আটক হন তখন চলছিল ‘সুপার হিরো’ ছবির শুটিং। যেটির নায়িকা অভিনেতার দ্বিতীয় স্ত্রী শবনম ইয়াসমিন বুবলী। কিন্তু আসলেই কি এমন গুরুতর অপরাধ করেছেন শাকিব খান? অভিনেতা দেশের বাইরে থাকায় আপাতত এ বিষয়ে তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি।