সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়া নিয়ে চবি ছাত্রলীগের ত্রিমুখী সংঘর্ষ
সাদাকালো নিউজ
রাত তখন ১১টা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রেলস্টেশনের একটি চায়ের দোকানে বসে ধূমপান করছিলেন চবির দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্র। তিনি সিক্সটি নাইন গ্রুপের কর্মী। সেখানে পাশের একটি টেবিলে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন বিজয় ও সিএফসির তৃতীয় বর্ষের কয়েকজন কর্মী। এক পর্যায়ে ধূমপানের ধোঁয়া ছড়ালে সিএফসির এক কর্মী প্রতিবাদ করেন। ধূমপানকারীর শিক্ষাবর্ষ জানতে চান তিনি। পরে সিক্সটি নাইনের ওই কর্মী নিজেকে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী পরিচয় দিলে সিএফসির কর্মী তার ওপর চড়াও হন। জুনিয়র হয়ে কেন এভাবে প্রকাশ্যে ধূমপান করছেন এসব নিয়ে তর্কাতর্কিতে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী, শাহ আমানত ও শাহজালাল হলে সংঘটিত ঘটনাটি জানাজানি হলে সিক্সটি নাইন গ্রুপের কর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে স্টেশন এলাকায় এসে বিজয় ও সিএফসির দুই কর্মীকে মারধর করে। এরপর ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। রাত সাড়ে ১১টার পর সিক্সটি নাইনের কর্মীরা শাহজালাল, সিএফসির নেতাকর্মীরা শাহ আমানত ও বিজয়ের নেতাকর্মীরা সোহরাওয়ার্দী হল থেকে লাঠিসোঁটা নিয়ে বের হয়। একদিকে সিক্সটি নাইন ও আরেকদিকে বিজয় ও সিএফসি অবস্থান নেয়। এরপর উভয়ের মধ্যেই ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও ইটপাটকেল, কাচের বোতল নিক্ষেপ চলতে থাকে। এতে তিনটি গ্রুপের ৮ জন কর্মী আহত হন।
চবি ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও বিজয়ের নেতা নজরুল ইসলাম বলেন, সমস্যা হয়েছে সিএফসির কর্মীর সঙ্গে সিক্সটি নাইনের এক কর্মীর। তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছিল। এ ঘটনায় বিজয় গ্রুপ কোনোভাবেই জড়িত ছিল না। তবুও কোনো কারণ ছাড়াই সিক্সটি নাইনের নেতাকর্মীরা বিজয় গ্রুপের ওপর হামলা চালিয়েছে। আমরা তাদের প্রতিহত করেছি।
সিক্সটি নাইন গ্রুপের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম বলেন, স্টেশনে জুনিয়রদের মধ্যে তর্কাতর্কির জের ধরে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে। আমরা সিনিয়ররা বসে বিষয়টি সমাধান করে নেব।
দুই ঘণ্টা সংঘর্ষের পর প্রক্টরিয়াল বডি গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন। জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর শহীদুল ইসলাম বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় আটজনের মতো আহত হয়েছে জেনেছি। সংঘর্ষের সূত্রপাতের বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। দোষীদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের মূলত দুইটি পক্ষ রয়েছে। একটি পক্ষ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর ও আরেকটি পক্ষ সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেন। এ দুটি পক্ষের আবার ১১টি উপগ্রুপ রয়েছে। এর মধ্যে বিবাদমান বিজয় ও সিএফসি মহিবুল হাসানের ও সিক্সটি নাইনসহ বাকি নয়টি নাছিরের অনুসারী হিসাবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।