৭ বার ছদ্মবেশ ধারণ, খালিস্তানপন্থী ধর্মগুরু অমৃতপালকে ধরতে মরিয়া পুলিশ
সাদাকালো নিউজ
বারবার নিজের চেহারা বদলাচ্ছে খালিস্তানপন্থী স্বঘোষিত শিখ ধর্মগুরু অমৃতপাল সিং। ভারতের পাঞ্জাব পুলিশের চোখে ধুলো দিতে গত ৭২ ঘণ্টায় অন্তত সাতবার নিজের চেহারা বদলানোর চেষ্টা করেছেন তিনি।
ছদ্মবেশের ছবি প্রকাশ্যে আনলেও পুলিশ তাকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি। পাঞ্জাব পুলিশের বরাতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে অমৃতপালের। পাঞ্জাবের নেশামুক্তি কেন্দ্র ও বেশ কয়েকটি গুরুদ্বারে আগ্নেয়াস্ত্র জমা করেছিল সে। তবে চার দিন পরেও খোঁজ নেই ‘ওয়ারিশ পাঞ্জাব দে’ সংগঠন প্রধান ধর্মগুরু অমৃতপাল সিং এর।
মঙ্গলবার (২১ মার্চ) পাঞ্জাব পুলিশ অমৃতপালের সম্ভাব্য সাতটি চেহারার ছবি প্রকাশ করেছে। পরিচিত স্বাভাবিক চেহারার পাশাপাশি রয়েছে দাড়ি-গোঁফ কামানো এবং পাগড়িহীন ছবিও। তবে আশির দশকের কট্টরপন্থী শিখ নেতা জার্নেল সিংহ ভিন্দ্রানওয়ালের ভক্ত অমৃতপাল কোনো অবস্থায়ই শিখদের ধর্মের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ পাগড়ি এবং দাড়ি বিসর্জন দেবেন না বলে মনে করছেন তার ভক্তরা।
গত শনিবার থেকে অমৃতপালকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে পাঞ্জাব পুলিশ। ইতিমধ্যেই তার চাচা ও গাড়ির চালকসহ শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পাঞ্জাব পুলিশ জানায়, প্রথমে এক ড্রাগ মাফিয়ার মার্সিডিজ গাড়িতে পালায় সে। বেশ কিছুটা যাওয়ার পর গাড়ি বদল করেন খালিস্তানপন্থী এই নেতা। এরপর মার্সিডিজ ছেড়ে একটি এসইউভি গাড়িতে পালায় অমৃতপাল। পরে ওই গাড়িটিও ছেড়ে দিয়ে একটি বাইকে পালান।
শনিবার থেকে এ পর্যন্ত পাঞ্জাবে পুলিশি অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১২০ জনকে।
এদিকে, রাজ্যে ৮০ হাজার পুলিশ থাকা সত্ত্বেও জাতীয় নিরাপত্তা আইন (ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট) এবং অস্ত্র আইনে (আর্মস অ্যাক্ট) অভিযুক্ত অমৃতপাল কী ভাবে পালিয়ে গেলেন তা নিয়ে মঙ্গলবার প্রশ্ন তুলেছে পাঞ্জাব এবং হরিয়ানা হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে তিরস্কার করেছে পাঞ্জাব পুলিশকে।
প্রসঙ্গত ফেব্রুয়ারি মাসে আজনালায় থানায় হামলার ঘটনার জেরেই ‘ভাই সাব’ (অমৃতপাল নামে পরিচিত) এবং তার ঘনিষ্ঠদের গ্রেপ্তারের জন্য সক্রিয় হয়েছে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানের সরকার। শনিবার অমৃতপালের সংগঠনের ছয়জন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপরেই খলিস্তানপন্থী নেতাকে ধরতে তৎপরতা শুরু হয়।
দুবাইয়ে ট্রাকচালকের কাজ করতেন অমৃতপাল সিং। পরে তার সঙ্গে ব্রিটেনে বসবাসরত খালিস্তানি নেতা অবতার সিংয়ের যোগাযোগ হয়। অবতারের সংস্পর্শে আসার পরই গত বছর দেশে ফিরে আসেন তিনি। ফিরে এসেই ‘ওয়ারিশ পাঞ্জাব দে’ সংগঠনের প্রধান হয়ে যায় সে।