হজ প্যাকেজের দাম বাড়ার কারণ জানালো ধর্ম মন্ত্রণালয়
সাদাকালো নিউজ
হজ প্যাকেজ নিয়ে সর্বশেষ সিদ্ধান্ত কী, তা জানাতে আদালতের নির্দেশনার পর ধর্ম মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিল করা হয়েছে। বুধবার প্রতিবেদনটি বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চে দাখিল করা হয়।
প্রতিবেদনে হজ প্যাকেজের দাম বাড়ানো নিয়ে বলা হয়েছে, ডলারের দাম ও বিমান ভাড়া বৃদ্ধি, বাসা ভাড়া এবং মোয়াল্লেম ফি বাড়ায় হজ প্যাকেজের দাম বাড়ানো হয়েছে।
আদালতের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার বলেন, যেভাবে বলা হচ্ছে সেভাবে আসলে হজের খরচ নির্ধারণ করা হয়নি। সরকারি এবং বেসরকারিভাবে সমন্বয় করে খরচ নির্ধারণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ অংশে হজের যে ব্যয় তার পরিমাণ আড়াই লাখ টাকা আর সৌদি অংশে সাড়ে ৪ লাখ টাকা। ফলে সৌদি অংশের ব্যয় নিয়ে সরকারের কিছু করার থাকে না। এটা আন্তর্জাতিকভাবেই সমন্বয় করা হয়। এছাড়া বাংলাদেশ অংশে যে ব্যয়ের কথা বলা হয়েছে, সেখানে বিমান ভাড়া বেড়েছে, ডলারের মূল্য বেড়েছে আবার সৌদি আরবের বাসা ভাড়া এবং মোয়াল্লেম ফি সেটাও বেড়েছে।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, এখানে দুটি দেশের সমন্বয় করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার চাইলেই এটা কমানো বা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। মন্ত্রণালয়ও এমনটি জানিয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
এদিকে গেল মঙ্গলবার হজের খরচ কমানোর নির্দেশনা চেয়ে করা এই রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশে হজের জন্য সরকার আলাদা বাজেট রাখে কিন্তু বাংলাদেশে তা নেই। হজের প্যাকেজমূল্য অনেক বেশি হওয়ায় আমরাই হজে যাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। আর সেখানে গরিব মানুষ কীভাবে যাবে। এটা অমানবিক।
এর আগে ১২ই মার্চ হজের প্যাকেজ মূল্য কমিয়ে পুনরায় প্যাকেজ ঘোষণা করতে রিট দায়ের করা হয়। এরও আগে হজ প্যাকেজের খরচ কমিয়ে ৪ লাখ টাকা নির্ধারণ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়। ৬ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও আল কোরআন স্টাডি সেন্টারের প্রধান সমন্বয়ক আশরাফ উজ জামান হজের প্যাকেজ কমানোর নির্দেশনা চেয়ে নোটিশটি পাঠান। জবাব না পেয়ে পরে তিনি রিট করেন।
এবার সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে মাথাপিছু খরচ পড়বে ৬ লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা। কোরবানির খরচ এই প্যাকেজের মধ্যে ধরা হয়নি। এর আগের বছর হজ খরচ ছিল ৫ লাখ ২২ হাজার ৭৪৪ টাকা। অর্থাৎ আগের বছরের চেয়ে দেড় লাখ টাকা বেশি।
এক বছরের ব্যবধানে প্রায় দেড় লাখ টাকা বেড়ে যাওয়া নিয়ে সমালোচনা চলছে বিভিন্ন মহলে। হজের আগাম নিবন্ধনেও এর প্রভাব পড়েছে। অনেকে খরচ বেড়ে যাওয়ায় এবার হজে যাওয়ার ইচ্ছা বাদ দিয়েছেন। কেউ কেউ হজের পরিবর্তে ওমরায় যাচ্ছেন।