‘স্বাধীনতা ঘোষণার একমাত্র বৈধ অধিকার ছিল বঙ্গবন্ধুর’
সাদাকালো নিউজ
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, স্বাধীনতা ঘোষণার একমাত্র বৈধ অধিকার ছিল বঙ্গবন্ধুর। অনেকেই ছিলেন পাঠক। পাঠক আর ঘোষক এক না।
মঙ্গলবার সকালে ৭ মার্চ উপলক্ষে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের কাছে একথা বলেন তিনি।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ৭ মার্চ বাংলাদেশের ইতিহাসের বাঁক পরিবর্তনের এক ঐতিহাসিক মাইলফলক। রেসকোর্স ময়দানে বিশাল জনসমুদ্রে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ স্বাধীনতার ডাক।
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতা ঘোষণার একমাত্র বৈধ অধিকার ছিল বঙ্গবন্ধুর। কারণ, তিনি জনগণের বিপুল ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ছিলেন। স্বাধীনতা ঘোষণার অন্য কারো বৈধ অধিকার ছিল না। অনেককেই ঘোষক দাবি করা হয়; তারা ছিলেন পাঠক। পাঠক আর ঘোষক এক কথা না।’
’৭১ এ পাকিস্তানি সেনাবাহিনী যখন গণহত্যা শুরু করে তখন ধানমণ্ডির ৩২ নং বাড়িতে শেখ মুজিবুর রহমান ২৫ মার্চ রাত ১২টা ২০ মিনিটে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু। এরপর চট্টগ্রামের ‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে’র কর্মীরা বঙ্গন্ধুর ‘স্বাধীনতার ডাক’ জনসাধারণে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য জিয়াউর রহমানকে বেছে নিয়েছিলেন। চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রের তখনকার কর্মকর্তা বেলাল মোহাম্মদের ভাষ্য অনুযায়ী, ২৭শে মার্চ সন্ধ্যায় জিয়াউর রহমানকে ডেকে নিয়ে এসে তারা স্বাধীনতার ঘোষণাটি পাঠ করান। এর আগের দিন ২৬শে মার্চ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা হান্নানও বেতার কেন্দ্রে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন। তবে বিএনপি মেজর জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে দাবি করে। এ বিষয়টি সামনে রেখেই ওবায়দুল কাদের বলেন, পাঠক আর ঘোষক এক না।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সেদিন বলেছিলেন ‘এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাাম, এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ সে দিনই ছিল আসলে স্বাধীনতার মূল ঘোষণা। ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তারের পর রাত সাড়ে ১২টা যে স্বাধীনতার ঘোষণা সেটা আনুষ্ঠানিকতা। কিন্তু স্বাধীনতার মূল ঘোষণা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ ভাষণের মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়েছে। এই ভাষণের মধ্য দিয়ে আমাদের ২৩ বছরে স্বাধিকার সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রামে পরিণত হয়। স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতা এটা হলো পরিবর্তন।’
সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, যারা ৭ মার্চ পালন করে না তারা স্বাধীনতার পক্ষের নয়। বিএনপির সময় ৭ মার্চ ভাষণ নিষিদ্ধ ছিলো, যে ভাষণ ইউনেসকো পৃথিবীর অন্যতম সেরা ভাষণের স্বীকৃতি দিয়েছে, সেই ভাষণ তারা ক্ষমতায় থাকাকালে নিষিদ্ধ করেছিল। এই দিবসের প্রতি, তথা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি তাদের ন্যূনতম বিশ্বাস আছে, চেতনা ধারণ করে—সেটা আমরা বিশ্বাস করি না।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি গণতন্ত্র ধংস করেছে। তারা এমন এক দল যাদের নিজেদের ঘরে দল নেই। গণতন্ত্র একটা দীর্ঘস্থায়ী প্রক্রিয়া। রাতারাতি গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পাবে না। আমাদের চেষ্টা আছে। গণতন্ত্র ক্রমে ক্রমে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পাচ্ছে। যেটুকু আছে সেটা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে হয়েছে।
এর আগে সকালে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন বঙ্গবন্ধু দৌহিত্র রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি।