সরকারের ক্ষতি করতে গিয়ে রাষ্ট্রের ক্ষতি করছে বিএনপি: হানিফ
সাদাকালো নিউজ
বিএনপি সরকারের ক্ষতি করতে গিয়ে রাষ্ট্র ও জনগণের ক্ষতি করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের লক্ষ্য একটাই, শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটনো কিন্তু তাদের উদ্দেশ্য সফল হবে না।
রবিবার রাজধানীর পল্টন কমিউনিটি সেন্টারে পবিত্র মাহে রমজান মাস উপলক্ষে পল্টন থানা আওয়ামী লীগ আয়োজিত ইফতার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, আন্দোলনের নামে অহেতুক রাজনৈতিক খেলা খেলে মানুষকে কষ্ট দেয়া ছাড়া আর কিছুই নয়। আগামী জাতীয় নির্বাচন সরকারের অধীনে বর্তমান নির্বাচন কমিশন করবে। আপনারা যদি মনে করেন দেশের মানুষ সরকারকে পছন্দ না করে আপনাদের পছন্দ করে, তাহলে ভোটে আসেন। ভোটের মাধ্যমে জনগণ সিদ্ধান্ত নিবে কারা সরকারে আসবে। কাদের দ্বারা দেশের জনগণ উপকৃত হয়, কোন সরকারের অধীনে দেশের উন্নয়ন হয় সেটা জনগণ সিদ্ধান্ত নিবে।
বিএনপির কঠোর সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিদেশিদের কাছে ধর্ণা দিয়ে কোনও লাভ হবে না। দেশের জনগণের প্রতি বিএনপির আস্থা নেই। এদের আস্থা বিদেশিদের ওপর। তাই তারা বিদেশদের কাছে ধর্ণা দেয়। বিদেশি দূতাবাসগুলোতে দৌঁড়ঝাপ করে।
তিনি বলেন, ২০১২ সালে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা শুরু হয়েছিল তখন থেকে বিএনপি আন্দোলন করে যাচ্ছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার যখন হলো তখন থেকে আন্দোলন করছে। আন্দোলন করে লাভ কোনও হয়নি। বিএনপি-জামায়াত আন্দোলন করে সরকারের পতন ঘটাতে পারবে না। এটা বিএনপিও জানে। তাই তারা ষড়যন্ত্র শুরু করেছে।
হানিফ বলেন, তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা পৃথিবীতে মন্দা ভাব চলছে, অর্থনীতি দুরবস্থার মধ্যে আছে। সেই ধাক্কা বাংলাদেশেও লেগেছে। এ মন্দা ভাব কাটিয়ে উঠার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে নানা ধরণের পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার ধাক্কা আমাদের দেশেও লেগেছে তারপরও আমাদের দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। এই চরম দরিদ্র দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করতে পেরেছেন।
তিনি বলেন, এই সময়ে বিশেষ করে রমজান মাসে যাতে মানুষের কষ্ট না হয় সেজন্য ইফতার অনুষ্ঠান না করে মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইউনিয়ন, ওয়ার্ড এমনকি প্রত্যেকটি গ্রাম পর্যায়ে মানুষের কাছে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। শেখ হাসিনার এই সিদ্ধান্ত আবারো প্রমাণ করেছে তিনি গণমানুষের নেত্রী।
আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর দুঃস্থা ভাতা, বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতাসহ ৪৪ ধরণের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। দরিদ্র মানুষের যাতে কষ্ট না হয় সেটা নিশ্চিত করেছেন। কেউ যেন খাওয়ার কষ্ট না পায়, একবেলা অনাহারে না থাকে সেই ব্যবস্থা করছেন। তিনি যে মাটি মানুষের নেতা বঙ্গবন্ধুর কন্যা তার কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তিনি সেটা প্রমাণ করেছেন।
বিএনপি সরকাররের শাসনামলের সঙ্গে বর্তমান সময়ের তুলনা করে হানিফ বলেন, আগে মানুষের মাথাপিছু আয় ছিল ৫০০ ডলারের নিচে। আজ মাথাপিছু আয় ২৯০০ ডলার ছাড়িয়েছে। আজকে অনেকে দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি নিয়ে কটাক্ষ করে বলেন রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট হয়েছে কিন্তু দ্রব্যমূল্য নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষের সঙ্গে না মিশে ঢালাওভাবে সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার জন্য এসব বলেন। দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির কারণে সরকারের বিরুদ্ধে বলতে পারেন না তাই এখন দ্রব্যমূল্যের কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি নেতারা সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা করেন। বিএনপি ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে ক্ষমতায় ছিল। তখন কি দাম বাড়েনি? আপনারা আগের টেলিভিশনের ফুটেজ দেখেন। আপনাদের নেতা তারেক রহমান সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন দ্রব্যমূল্য বাড়া স্বাভাবিক। তখন মানুষের দৈনিক মজুরি ছিল ৬০ টাকা। পরে মানুষের মজুরি বাড়লে উনি বললেন- ৬০ টাকা মজুরি ১০০ টাকা হয়েছে জিনিসপত্রের দাম তো বাড়বেই। বিএনপির শাসনামলের চেয়ে বর্তমান বাংলাদেশের মানুষ ভালো আছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী ও প্রধান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরসহ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।