শুভ জন্মদিন বিশ্বজয়ী মেসি
সাদাকালো নিউজ
মেসি, অন্য গ্রহের বলবেনই বা না কেন? মেসি যেভাবে খেলেন তাতে করে তাকে অন্য গ্রহের ফুটবলার বা এলিয়ান ফুটবলার বলাটাই বেশি যৌক্তিক যে হবে সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না। ক্ষুদে জাদুকর প্রতি খেলাতেই যেভাবে জাদু দেখান সেটি সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব না।
মেসির সাবেক গুরু পেপ গার্দিওলা বলেছিলেন, ‘তাকে নিয়ে লিখো না। তাকে বর্ণনা করার চেষ্টা করো না। শুধু দেখে যাও।’ সত্যিই তাই। মেসি এমন একজন যে কিনা সকল ভাষার উর্দ্ধে। সকল বর্ণনার বাইরে।
বর্তমানে তারকা এই ফুটবলার রয়েছেন ফুটবল থেকে ছুটিতে। ছুটির সব সকাল অন্যরকম হলেও আজকের সকালটা মেসির জন্য বিশেষ। কেননা আজ যে তারকা এই ফুটবলারের জন্মদিন। ৩৫ পেরিয়ে ৩৬ এ আজ পা রেখেছেন আর্জেন্টাইন তারকা এই ক্রীড়াবিদ।
১৯৮৭ সালের ২৪ জুন আর্জেন্টিনার রোসারিওতে জন্ম নেন লিওনেল আন্দ্রেস মেসি। তিনি ছিলেন জর্জ মেসি ও সেলিয়া কুচিত্তিনির তৃতীয় সন্তান। পরিবারের থেকে উদ্বুদ্ধ হওয়ায় ছোটবেলা থেকেই ফুটবলের প্রতি আলাদা নেশা ছিল মেসির। বড় দুই ভাই রদ্রিগো ও মাতিয়াস আর তার কাজিন ইমানুয়েন বিয়াঙ্কুকি, ম্যাক্সিমিলিয়ানো ছিলেন মেসির ফুটবল খেলার সঙ্গী।
ছয় বছর বয়সে মেসি যোগ দেন নিউওয়েলস অল্ড বয়েজ ক্লাবে। সেখানে তিনি খেলেন ছয় বছর। এই ছয় বছরে তার পা থেকে গোল আসে প্রায় ৫০০। আর সেই সুবাদে তখন তার নাম হয় ’৮৭ এর গোল মেশিন।’
১০ বছর বয়সে গ্রোথ হরমোন ডেফিসিয়েন্সি নামক এক রোগ বাসা বাধে তার দেহে। যে কারণে থমকে যায় তার দেহের বৃদ্ধি। প্রতিমাসে তার এই রোগের চিকিৎসার জন্য খরচ হতো ১ হাজার ডলার। প্রথমে তার ক্লাব নিউওয়েলস সেই খরচে অংশীদার হতে চাইলেও পরে তারা হাত গুটিয়ে নেয়।
পরে রিভারপ্লেট ক্লাব তাকে দলে ভিড়িয়ে চিকিৎসা খরচ বহন করতে চাইলেও শেষ মুহূর্তে তারাও পিছিয়ে যায়। যে কারণে শঙ্কা দেখা দেয় মেসির বেড়ে ওঠা নিয়ে। ২০০০ সালের সেপ্টেম্বরে বার্সেলোনা তার জুনিয়র দলের জন্য মেসির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়। এরপর শুরু হয় তার চিকিৎসা। ১৪ বছর বয়সে এসে শেষ হয় তার চিকিৎসা।
২০০৫ সালে নিজের ১৮তম জন্মদিনের দিন মেসি যোগ দেন বার্সেলোনার মূল দলে। সেই থেকে শুরু। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকানো লাগেনি তারকা এই ফুটবলারকে। ২০০৬ সালে বিশ্বকাপে অভিষেক হয় তার।
২০০৮-০৯ মৌসুমে প্রথম ট্রেবলের স্বাদ পান মেসি। ২০০৯-১০ মৌসুমে জেতেন প্রথম ব্যালন ডি’অর।
২০১২ সালটা ছিল মেসির রেকর্ড গড়ার বছর। এ বছরই প্রথম এক ম্যাচে পাঁচ গোল দেয়ার রেকর্ড গড়েন তিনি। সে আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতাও ছিলেন তিনি। সে বছরেই মেসি বনে যান বার্সেলোনার সর্বোচ্চ গোলদাতা।
২০১৪-১৫ মৌসুমে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ট্রেবল জয় করেন মেসি। ২০১৯-২০ মৌসুমে রেকর্ড ষষ্ঠ ব্যালন ডি’অর নিজের ঝুলিতে পুরেন মেসি। ২০২১ সালে তিনি বার্সেলোনার সঙ্গে দুই দশকের সম্পর্ক ছিউল্ল করে পাড়ি জমান ফ্রান্সের প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ে।
২০১৮ বিশ্বকাপে ফ্রান্সের কাছে স্বপ্নভঙ্গের পর সেখান থেকে শিক্ষা নিয়েই যেন ঘুরে দাঁড়িয়েছেন মেসি। ফিনালিশিমা, ফিনালিশিয়া, কোপা আমেরিকা জয়ের পর ২০২২ সালের বিশ্বকাপে এসে ক্যারিয়ারের একমাত্র অপূর্ণতাটা পূর্ণ হয় ক্ষুদে এই জাদুকরের। লুসাইল স্টেডিয়ামে সেই ফ্রান্সকেই হারিয়ে স্বাদ নেন বিশ্বকাপের।
সম্প্রতি পিএসজির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। মেজর লিগের ক্লাব ইন্টার মায়ামি হতে যাচ্ছে তার নতুন ঘর।
বিশ্বকাপজয়ী এই অধিনায়ক ৩৫ বছর শেষ করে আজ পা রাখলেন ৩৬ বছরে। শুভ জন্মদিন তোমায় লিও।