শুভ জন্মদিন প্রজন্মের কিংবদন্তি শেখ হাসিনা
আজ ২৮ সেপ্টেম্বর, দেশরত্ন শেখ হাসিনার জন্মদিন। ১৯৪৭ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় তিনি জন্মগ্রহণ করেন। বাংলাদেশের চারবারের সফল প্রধানমন্ত্রী। ডিজিটাল বাংলাদেশের রুপকার। দেশের সর্ববৃহৎ দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি। শেখ হাসিনা বর্তমান প্রজন্মের কাছে এক কিংবদন্তির নাম।
বাংলাদেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা হিসেবে গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু। সেই স্বপ্নপূরণ করে চলেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বেগম শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের প্রথম সন্তান শেখ হাসিনা। মা বাবা আদর করে ডাকতেন হাসু নামে। ভাই বোনের প্রিয় হাসু আপা। রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। তাই শিক্ষাজীবনের শুরু থেকেই যুক্ত ছিলেন প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে।
শেখ হাসিনার বাল্যশিক্ষা টুঙ্গিপাড়ায়। ১৯৫৪ সাল থেকে ঢাকায় তিনি। পরিবারের সাথে মোগলটুলির রজনীবোস লেনের বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। পরে মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে ওঠেন। টিকাটুলির নারী শিক্ষা মন্দির বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি হন ১৯৫৬ সালে। মাধ্যমিক শেষ করেন আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয় থেকে। সেটা ১৯৬৫ সালে। এর দুই বছর পর গভর্নমেন্ট ইন্টারমিডিয়েট গার্লস কলেজ থেকে পাস করেন উচ্চ মাধ্যমিক। শেখ হাসিনা ১৯৬৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। মাঝে কয়েক বছর বিয়ের কারণে স্বাভাবিক শিক্ষাজীবনে ছেদ পড়ে।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন শেখ হাসিনা। রাজনীতিতেও সক্রিয় ছিলেন তিনি। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সরকারি ইডেন মহিলা কলেজের ছাত্রসংসদের সহ-সভাপতি অর্থাৎ ভিপি হন। তিনি এই কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগেরও সদস্য ছিলেন শেখ হাসিনা। ছাত্রলীগের রোকেয়া হল শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি। ছাত্রজীবন থেকেই শেখ হাসিনা সকল গণআন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ছোট বোন রেহানা ছাড়া পরিবারের সবাইকে হারিয়েছেন শেখ হাসিনা। শোকাবহ সেই দিনে শেখ হাসিনা ও তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা ছিলেন পশ্চিম জার্মানিতে। পরবর্তীতে ৬ বছর রাজনৈতিক আশ্রয়ে ভারতে অবস্থান করেন তিনি। ১৯৮০ সালে ইংল্যান্ড থেকে তিনি স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন শুরু করেন।
১৯৮১ সালে দেশের মাটিতে ফেরেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। ঢাকায় লাখো জনতা তাকে স্বাগত জানায়। এরপর নতুন সংগ্রামের পথে হাটেন শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বে দ্বিধাবিভক্ত আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ হয়। বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ে আন্দোলনে নামেন সামরিক স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে। কারাগারে গিয়েছেন অনেকবার। তাঁকে হত্যার জন্য কমপক্ষে ১৯ বার চেষ্টা করেছে ষড়যন্ত্রকারীরা।
এরপরও এগিয়ে চলেছেন শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বে চারবার রাষ্ট্রক্ষমতায় গেছে আওয়ামী লীগ। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে টানা তৃতীয়বার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়। চারবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। বিরোধী দলের নেতা ছিলেন তিনবার। দেশের গণ্ডী পেড়িয়ে শেখ হাসিনা এখন বিশ্ব নেতা।
শেখ হাসিনার স্বামী আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম ওয়াজেদ মিয়া। এই দম্পতির বড় ছেলে সজীব আহমেদ ওয়াজেদ জয় একজন তথ্যপ্রযুক্তি বিশারদ। একমাত্র কন্যা সায়মা হোসেন ওয়াজেদ পেশায় মনোবিজ্ঞানী। তিনি অটিস্টিক শিশুদের কল্যাণে বিশ্বব্যাপী কাজ করছেন। শেখ হাসিনার নাতি-নাতনীর সংখ্যা সাত।