শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়ে যা বললেন শিক্ষামন্ত্রী
নাফিজা আক্তার
মহামারি করোনা শনাক্তের পর থেকে বহুবার রূপ বদলেছে ভাইরাসটি। এর আগে সবচেয়ে বেশি ভয়ঙ্কর হিসেবে পরিচিত ছিলো করোনার ডেল্টা ধরণ। এর পরেই আসে আরেক ধরণ ওমিক্রন। এর পর থেকেই বিশ্বে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। বাংলাদেশেও পড়েছে এর প্রভাব। গত তিন মাস দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব অনেক কম থাকলেও এখন আবার সেটা বাড়তে শুরু করেছে। এর ফলে আবারও দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
গেল দুদিন ধরে করোনা শনাক্ত হাজারের ওপরে। এমন অবস্থায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সঙ্গে বৈঠকেও বসে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ‘এখনই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের কোনো চিন্তাভাবনা নেই। তবে যদি প্রয়োজন হয় তাহলে বন্ধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের টিকাদান কর্মসূচি খুব জোরদারভাবে চলছে। এই মুহূর্তে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেলে এই কর্মসূচিতে ভাটা পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে, আমরা গভীরভাবে পর্যালোচনা, পর্যবেক্ষণ করছি। যদিও এখন পর্যন্ত আমরা কোনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংক্রমণের খবর পাইনি।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরও এ বিষয়ে নজর রাখছে উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘করোনা বিষয়ক কারিগরি পরামর্শক কমিটি রয়েছে, তাদের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগে আছি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের বিষয়টি নিয়ে এখনও ভাবছি না। আমাদেরকে যতটুকু পারা যায় জীবন স্বাভাবিক রেখে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে করোনা মোকাবেলা করতে হবে। অতএব এই মুহূর্তে আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের কথা ভাবছি না। তবে যদি প্রয়োজন হয় তখন আমরা প্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত নেবো।’
এদিকে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেল্টা ধরণের চেয়েও ভয়ঙ্কর ওমিক্রন। যেভাবে ধীরে ধীরে সংক্রমণের হার বাড়ছে তাতে করে আবারও বিপদের সম্মুখিন হতে পারি আমরা। এ কারণে কম করে হলেও এক মাসের জন্য সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া উচিত। সমাজে যেসব বিষয়ে জনসমাগম হয়ে থাকে, সেসব কিছুই আপাতত কমপক্ষে এক মাসের জন্য স্থগিত করে দেয়া উচিত।
সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির বরাত দিয়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনির্দিষ্টকালের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের কথা বলা হয়েছিলো যা একটি গুজব বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘এখনই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হচ্ছে না। ওগুলো সব গুজব। ওমিক্রন রোধে জাতীয় কমিটির সুপারিশ মানা হবে।’
করোনার কারণে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর কয়েক দফায় ছুটি বাড়ানো হয়। দীর্ঘ দেড় বছরেরও বেশি সময় পর ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়া হয়। তবে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের শঙ্কা তৈরি হয়েছে।