রেকর্ড দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ!
সাদাকালো নিউজ
ভরা মৌসুমেও ইলিশের আকাল। তাই আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে শঙ্কায় জেলেরা। অন্যদিকে, সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে গেলো কয়েক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। ফলে বেচাকেনায় ভাটা পড়ায় লোকসানের মুখে আড়তদাররা।
দিনপঞ্জির হিসাবে আগস্ট-সেপ্টেম্বরকে বলা হয় ইলিশের ভরা মৌসুম। অন্যান্য বছরগুলোতে এই ধারণা সত্য হলেও এবারের বাস্তবতা যেন ঠিক উল্টো। লম্বা সময়ের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার এক মাস পরও নদী কিংবা সমুদ্র থেকে প্রায়ই খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে জেলেদের।
এক জেলে বলেন, অন্যান্য সময় মনে করেন ৫০, ৬০, ১০০ মণ ইলিশ আল্লাহই দিছে। কিন্তু এবার সেই ছিটেফোঁটা নেই।
এক আড়তদার বলেন, একেক বোটে ২০ লাখ টাকা করে লস। এবার কেউ ইলিশ পাচ্ছে, কেউ পাচ্ছে না। এভাবেই কমবেশি করে বেচছি।
এই আকালের ছাপ পড়েছে ইলিশের স্বর্গখ্যাত বরিশাল জেলায়ও। চলতি মৌসুমে ৩৯ হাজার টন আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও মৌসুমের মাঝামাঝিতে এসেও বেশ দূরে জেলেরা। যার কারণ হিসেবে অতিরিক্ত তাপমাত্রাকে দুষছেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা।
বরিশাল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ইলিশ আহরণের পরিমাণ বাড়বে। নদী-সাগরে তা প্রচুর রয়েছে। জেলেরা যা শঙ্কা করছেন, তা ঠিক নয়। সামনে পর্যাপ্ত পরিমাণেই ইলিশ পাওয়া যাবে।
মৎস্য অধিদপ্তরের হিসাবে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ইলিশ ধরা পড়ে সাড়ে ৫ লাখ টন। ধারাবাহিকভাবে যা বেড়েছে ২১-২২ পর্যন্ত। তবে এবারের প্রবণতা বিশ্লেষণ করে সার্বিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে শঙ্কা রয়েছে বিশেষজ্ঞদের। অন্যদিকে, প্রত্যাশামাফিক ধরা না পড়ায় সাধারণের নাগালের বাইরে চলে গেছে আমিষের অন্যতম এই উৎস।
এক ক্রেতা বলেন, আসছি তো ইলিশ কিনতে। দাম দেখছি, এখনও কেনা হয়।
এক বিক্রেতা বলেন, এই বছর লোকসান গুনছি আমরা। ভারতের জেলেরা বোট নিয়ে এসে আমাদের ইলিশ ধরে নিয়ে চলে যাচ্ছে।
অবশ্য ইলিশ কম ধরা পড়ার পেছনে ভারতীয় জেলেদের অবাধ বিচরণকে দোষ দিচ্ছে মৎস্য আড়তদার সমিতি।
বরিশাল জেলা মৎস্য আড়তদার সমিতি কোষাধ্যক্ষ মো. ইয়ার হোসেন সিকদার বলেন, কিছু সময়ের জন্য ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ করে সরকার। সেসময় জেলেরা তা ধরে না। কিন্তু ভারতের জেলেরা সেগুলো ধরে নিয়ে যায়। এতে সংকট দেখা দিচ্ছে। সরকার এটা প্রতিরোধ না করলে সমস্যা আরও বাড়বে।
বর্তমানে এক কেজি আকারের ইলিশের জন্য গুণতে হচ্ছে ১৬০০ টাকা পর্যন্ত। এই দাম গেলো কয়েক বছরের মধ্যে রেকর্ড।