রিজার্ভ ব্যাটালিয়নের শিবিরে অস্ত্র লুটের চেষ্টা, মণিপুরে নিহত ১
সাদাকালো নিউজ
ভারতের মণিপুরে রিজার্ভ ব্যাটালিয়নের শিবিরে দুই দফায় হামলা চালিয়েছে উত্তেজিত জনতা।
ওই হামলার সময় গুলি ও পাথরের আঘাতে ১ জন নিহত এবং ২৩ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, মঙ্গলবার (৪ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে প্রায় ৫০০ জন মিলে থৌবালের ৩ নম্বর রিজার্ভ ব্যাটালিয়নের শিবিরে চড়াও হয়ে গুলি ও অস্ত্র লুট করার চেষ্টা করে।
সে সময় কথা কাটাকাটির মধ্যে রিজার্ভ ব্যাটালিয়নের এক জওয়ানের গুলিতে এক কংগ্রেসকর্মীর মৃত্যু হয়।
তখন সবাই পালিয়ে গেলেও পরে ওই জওয়ানের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়।
বিকালে প্রায় ৭০০ জন ফের ওই রিজার্ভ ব্যাটালিয়নের শিবিরে হামলা করে। তখন সংঘর্ষ শুরু হলে আহত হন দুই জওয়ান ও ২১ জন হামলাকারী।
থৌবালের পরিস্থিতি এখনও উত্তপ্ত বলে জানা গেছে।
এদিকে, উপজাতি যৌথ মঞ্চের সম্মতি ছাড়াই মণিপুরের ২ নম্বর মহাসড়কে চলা অবরোধ রবিবার উঠিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কুকি জঙ্গিদের যৌথ মঞ্চ কেএনও।
শোনা যাচ্ছিল, উত্তর-পূর্বের এক প্রতাপশালী বিজেপি নেতার চাপেই এই সিদ্ধান্ত নেয় তারা। এই ঘটনার পরে কুকিদের নিজেদের মধ্যে ক্ষোভ ও মতানৈক্য বেড়েছে।
সোমবার রাতে কেএনওর মুখপাত্র সেইলেন হাওকিপের লামকার বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। পুড়েছে তার গাড়িও। তবে কেউ হতাহত হননি।
কুকি জঙ্গিদের দুটি মঞ্চ কেএনও ও ইউপিএফ প্রথমে ওই বিজেপি নেতার নাম না জানিয়েই তাদের গোপন আলোচনা সম্পর্কে বিবৃতি দিয়েছিল।
পরে তারা জানায়, ওই নেতা তার নাম বা ওই বৈঠকের কথা প্রচার করতে নিষেধ করেছেন। ততক্ষণে অবশ্য বিবৃতি ছড়িয়ে পড়েছে।
এর পর সেইলেন সোমবার জানিয়েছিলেন, সবার সঙ্গে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং ইউনিফায়েড কমান্ডের সঙ্গে বৈঠকের পরে রাজ্যে থাকা সব অবৈধ বাংকার গুঁড়িয়ে ফেলার ঘোষণা দেন।
ওই ঘোষণার বিরোধিতা করে উপজাতি যৌথ মঞ্চ আইটিএলএফ জানিয়েছে, কুকিরা মৈতৈদের আক্রমণ করেনি। কিন্তু মৈতৈরা বারবার হানা দিচ্ছে, তাই কুকিদের গ্রাম রক্ষা করতে বাংকার জরুরি।
গত ৩ মে থেকে জাতিগত সহিংসতার সাক্ষী মণিপুর। মাঝে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলেও তা পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। এখন পর্যন্ত ৫০ হাজার মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চূড়াচাঁদপুর, মোরে, কাকচিং ও কাংপোকপি জেলার অধিকাংশ মানুষকে সরানো হয়েছে।
ইম্ফল উপত্যকায় সংখ্যাগরিষ্ঠ হলো মৈতৈ জনজাতি। তবে তারা সম্প্রতি দাবি তুলেছে তাদের তফসিলি উপজাতির মর্যাদা দিতে হবে। তাদের এ দাবির প্রতি বিরোধ জানিয়েছে স্থানীয় আদিবাসীরা।
এ অবস্থার মধ্যে গত এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে মণিপুরের অল ট্রাইবাল স্টুডেন্ট ইউনিয়ন একটি মিছিলের আয়োজন করেছিল। সেই মিছিল ঘিরেই সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে চূড়াচাঁদপুর জেলায়।
এদিকে তফসিলি উপজাতির ইস্যুর পাশাপাশি সংরক্ষিত জমি এবং সার্ভে নিয়েও উত্তাপ ছড়িয়েছে রাজ্যটিতে। এ আবহে গত এপ্রিলে এ চূড়াচাঁদপুর জেলাতেই মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের সভাস্থলে আগুন দিয়েছিল ইন্ডিজেনাস ট্রাইবাল লিডারস ফোরামের সদস্যরা।