রাজকে বিক্রি করে পণ শোধ করবেন আসমা
সাদাকালো নিউজ
স্বামীর মৃত্যুর পর একমাত্র মেয়েকে নিয়ে অভাবের সংসার আসমার। অভাব দূর করতে হাঁস-মুরগির পাশাপাশি গরু লালনপালন শুরু করেন। এদিকে মেয়ে বড় হলে যৌতুকের শর্তে তাকে বিয়ে দেন। কিন্তু দেরি হওয়া মেয়ের ওপর ক্ষণে ক্ষণে নেমে আসে নির্যাতন। তাই সিদ্ধান্ত নেন, যত্নে লালন করা গরু ‘রাজ’কে বিক্রি করে মেয়ের শ্বশুরপক্ষকে শোধ করবেন সেই পণ।
আসছে কোরবানিতে নিজ এলাকায় বড় গরুর চাহিদা নেই। কাঙ্ক্ষিত দামও বলে না কেউ। শেষমেশ নিজেই ঢাকার গাবতলীর হাটে গরুটিকে নিয়ে যান আসমা। এবার কাঙ্ক্ষিত দাম পেলে গরু বিক্রির টাকা দিয়ে মেয়ের বিয়ের পণ পরিশোধ করবেন বলে জানিয়েছেন মেহেরপুর গাংনী উপজেলার চেংগাড়া গ্রামের মৃত আমিরুল ইসলামের স্ত্রী আসমা।
আসমা খাতুন জানান, ১৭ থেকে ১৮ বছর আগে তার স্বামী মারা যান। তখন তাদের নাজমা খাতুন নামে একটি মেয়েসন্তান ছিল। স্বামীর মৃত্যুর পর সংসারে অভাব-অনটন শুরু হয়। পরে নাজমা উপযুক্ত হলে বিয়ে দেন এলাকায়। বিয়েতে শর্ত ছিল জামাইকে পণ দিতে হবে। এত দিন পণ দিতে না পারায় মাঝেমধ্যে নাজমাকে শ্বশুরবাড়ির বঞ্চনা-গঞ্জনা সহ্য করতে হয়েছে। শেষে শ্বশুরবাড়ির লোকজন চাপাচাপি করলে আসমা গরু বিক্রি করে পণ দিতে প্রতিজ্ঞা করেন।
তিনি আরও জানান, বছর তিনেক আগে স্থানীয় এক এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে একটি বাছুর গরু কেনেন। পরে এর নাম রেখেছেন ‘রাজ’। প্রাকৃতিক উপায়ে গরুটিকে তিনি বড় করে তুলেছেন। খাইয়েছেন গমের ভুসি, ছোলা, কাঁচা ঘাস ও ভুট্টা। প্রায় ৪০ মণ ওজনের রাজের দাম স্থানীয় ব্যাপারিরা কম বলায় তিনি গাবতলীর হাটে নিয়ে যান।
গত শনিবার (২ জুলাই) বিকেলে তিনি বাড়ি থেকে রওনা হয়ে (৫ জুলাই) মঙ্গলবার সকালে হাটে পৌঁছান। আসমা খাতুন গরুটির দাম হাঁকছেন ১৫ লাখ। সাড়ে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত দাম বলেছে অনেকে। চাহিদা মোতাবেক দাম পেলেই রাজকে বিক্রি করবেন।