মানুষ যেন খাদ্যে কষ্ট না পায় সেটাই লক্ষ্য
সাদাকালো নিউজ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের মানুষ যেন খাদ্যে কষ্ট না পায় সেটাই তার সরকারের লক্ষ্য।
আজ বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গাজীপুরে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে কৃষকদের প্রণোদনা দিচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকার। মাঠে কাজ করা ও ফসল ফলানো গৌরবের বিষয়। সেভাবে মানুষকে সম্পৃক্ত করতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ যেন খাদ্যে কষ্ট না পায় সেটাই সরকারের লক্ষ্য।’
পর্যাপ্ত গবেষণা হয়েছে বলেই, দেশ খাদ্যে স্বয়ংসস্পূর্ণ হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষি খাতে গবেষণা ছাড়া কখনোই অগ্রগতি সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, ‘উচ্চফলনশীল বিভিন্ন শস্য উৎপাদনে নিবিড় গবেষণায় নিয়মিত অর্থ বরাদ্দ দিয়ে যাচ্ছে সরকার৷’
ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল ধানের জন্য কৃষিবিদ ও গবেষকদের ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা৷
তিনি বলেন, ‘প্রাকৃতিক বৈরি পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই কৃষি উৎপাদন অব্যাহত রাখতে হবে৷’
বিএনপির আমলের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, বিএনপির আমলে সার দাবি করায় কৃষককে গুলি করে হত্যা করা হয়। তাদের অপরাধ ছিল তারা সারের দাবি করেছিল। বিদ্যুতের দাবি করায় ৯ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
‘শ্রমিকরা ন্যায্য মজুরির আন্দোলন করতে গেলে ১৭ জন শ্রমিককে রজান মাসে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। আমরা সমস্ত জায়গায় ছুটে যাই। তখন থেকে আমাদের প্রতিজ্ঞা ছিল কৃষককে সারের পেছনে ছুটতে হবে না। সার কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাবে। আমরা সেই ব্যবস্থা করেছি।’
শেখ হাসিান বলেন, বিদেশিদের ওপর নির্ভর করে চলবে না বাংলাদেশ। প্রত্যেকটা পরিবারকে আত্মনির্ভরশীল হিসেবে গড়ে তুলতে চায় সরকার।
‘মোবাইল ফোন সবার হাতে পৌঁছে দিয়েছে। প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশটা এগিয়ে যাচ্ছে। এগিয়ে যাবে, সেটাই আমরা চাই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আগে দেশের তরুণ-যুবকরা কৃষি কাজ করতে লজ্বাবোধ করত। আমরা সেই লজ্জা ভেঙ্গে দিয়েছি। আগে কৃষক পরিচয় দিতে লজ্জাবোধ করত, এখন গর্ববোধ হয়। আমি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদেরও মাঠে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। তারা মাঠে গিয়ে কৃষকের ধান কেটে দিয়েছে।’
সরকার প্রধান বলেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। খাদ্য নিরাপত্তায় কৃষিতে গবেষণা বাড়াতে হবে। কৃষিতে গবেষণা ছাড়া উৎকর্ষ সাধন সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে খাদ্য ঘাটতির দেশ থেকে খাদ্য উদ্বৃত্তে পরিণত করে অন্ধকার সময় কাটাতে সক্ষম হয়েছে। দেশের মানুষের যাতে খাদ্য কষ্ট না হয় সেটাই সরকারের প্রধান লক্ষ্য।
কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন কানাডার গ্লোবাল ইনস্টিটিউট অব ফুড সিকিউরিটির (সিইইউ) নির্বাহী পরিচালক ড. স্টেভিন ওয়েব, ফিলিপাইনের ইন্টারন্যাশনাল রাইস রিচার্স ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর জেনারেল ড. জেইন বালিই, ব্রির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার।
অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার আগে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু-পিয়েরে ট্রুডো কৃষিপ্রযুক্তি কেন্দ্র উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পর তিনি এই কৃষিপ্রযুক্তি কেন্দ্রের ইনোভেশনস পরিদর্শন করেন।
আর অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের পাঁচটি প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী।