ভার্সিটি থেকে বাদ পড়েও ইংরেজি সাহিত্যে চমক দেখালেন সাবিলা নূর
সাদাকালো নিউজ
ইংরেজি সাহিত্যে সিজিপিএ ৪ এর মধ্যে ৩.৯৭ পেয়ে আলোচনায় এসেছেন অভিনেত্রী সাবিলা নূর। অভিনয়ের পাশাপাশি শিক্ষার্থী হিসেবে তিনি কিভাবে এই অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছেন তা নিয়ে চলছে নানাজনের নানান সমালোচনা। যদিও তার এই অর্জন নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। কিন্ত সম্প্রতি কিছু ব্যক্তি সাবিলাকে ট্রল করছেন।
আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (এআইইউবি) থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করায় ১৯ মার্চ রবিবার ২১তম সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ‘ড. আনোয়ারুল আবেদিন লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’-এ ভূষিত করে। এর মধ্যে তাকে নিয়ে নানা নেতিবাচক কথা প্রচারিত হচ্ছে।
অভিনয় করে কীভাবে ৩.৯৭ পাওয়া সম্ভব, যাকে কিনা নর্থ সাউথ ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে- এমন অভিযোগের সরাসরি জবাব দিয়েছেন সাবিলা নূর। সেই সঙ্গে ফলাফলের গ্রেডশিটও প্রকাশ নিজ ফেসবুক একাউন্টে পোস্ট দিয়ে তার কড়া জবাব দিয়েছেন এ অভিনেত্রী।
সাবিলা বলেন, যারা বলছেন আমাকে এনএসইউ এবং ব্র্যাক থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল, তাদের জন্য এই পোস্ট। আমার এআইইউবি এবং ব্র্যাক দুটোর গ্রেডশিট আমি পোস্টে দিয়েছি, আশা করি এই প্রশ্নের জবাব আপনারা পেয়ে যাবেন।
অমনোযোগী হওয়ায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ও বিবিএ দুটোই পরিবর্তন করেছেন জানিয়ে সাবিলা নূর বলেন, এনএসইউতে আমার গ্রেড ভালো ছিল না, কিন্তু আমাকে বের করে দেওয়া হয়েছিল, সেটা ভুল। তখন আমি মাত্রই নাটকে কাজ শুরু করি এবং পড়াশোনায় অমনোযোগী হয়ে গিয়েছিলাম। এছাড়া এমন একটা ডিপার্টমেন্টে ভর্তি হয়েছিলাম যেখানে আমার পড়ার আগ্রহ ছিল না। পরিবারের চাপে ভর্তি হয়েছিলাম। আমি কিছু সময়ের জন্য আমেরিকা চলে যাই এবং ফিরে এসে আমার মেজর এবং ইউনিভার্সিটি দুটোই পাল্টানোর সিদ্ধান্ত নিই।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার বিষয়ে সাবিলা বলেন, ব্র্যাকে আমি তিন সেমিস্টার ছিলাম এবং বহুল আকাঙ্ক্ষিত ভিসি তালিকাভুক্ত ছাত্রীও ছিলাম। কিন্তু যখন আমাকে বলা হলো টার্কে (সাভারে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস) যেতেই হবে, আমি পুরোপুরি ভেঙে পড়ি। শুধু মিডিয়ার কাজের জন্য নয়, আমি তখন ডিপ্রেশনে ভুগছিলাম এবং আমি জানতাম পরিবার ছাড়া তিন মাস থাকা আমার পক্ষে সম্ভব হতো না। তারপরই আমি এআইইউবিতে ক্রেডিট ট্রান্সফার করি এবং আমার জন্য সেটাই সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল।
একই প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, ‘এই পথচলায় আমার যত বাধা এসেছে, ততই আমার জিদ চেপে গিয়েছিল পড়াশোনার। সকালের ক্লাসগুলো করে আমি নাটকের কাজে যেতাম, অনেক রাতে বাড়ি ফিরে পড়াশোনা করতাম, দু-এক ঘণ্টা ঘুমিয়ে আবার ক্লাস করতাম। আমার সিজিপিএ আমার হার না মানা পরিশ্রম-সংকল্প আর আমার পরিবার ও শিক্ষকদের অনুপ্রেরণার ফসল।’
মানুষের আত্মপ্রত্যয় নিয়ে প্রশ্ন তুলে সাবিলা নূর বলেন, মানুষ কি নতুন করে শুরু করে সফল হতে পারে না? বদলাতে পারে না? নিজের লক্ষ্য অর্জনে নিজের সবটা দিয়ে উঠেপড়ে লেগে পড়তে পারে না? আমরা কি এতটাই অসহনশীল হয়ে পড়েছি যে কোনো রকম কারণ ছাড়াই একজনের ভীষণ পরিশ্রমের একটা ভালো খবরকে দুঃস্বপ্ন বানিয়ে দিতে একটুও দ্বিধা করছি না?