ব্যালন ডি’অরের দৌড়ে মেসি-হালান্ড-এমবাপ্পে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
ইন্টার মিলানকে ১-০ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জয়ের মধ্যদিয়ে শেষ হয়েছে চলতি মৌসুমে উয়েফার সব খেলা। অবশ্য আগেই শেষ হয়েছিল ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের খেলা।
পাঁচ লিগের খেলা ও উয়েফার আসরগুলো শেষ হওয়ার পর এবার আলোচনায় ফুটবলারদের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ মর্যাদাকর পুরস্কার ব্যালন ডি’অর। কার হাতে উঠছে এবারের ট্রফিটি। ধারণা করা হচ্ছে এ ট্রফির জন্য মূলত লড়াইটা হবে ৩৬ বছর পর আর্জেন্টিনাকে ফুটবল বিশ্বকাপ এনে দেয়া লিওনেল মেসি ও গতরাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতা নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার আর্লিং হালান্ডের মধ্যে।
ইতোমধ্যে ফরাসি ম্যাগাজিন ‘ফ্রান্স ফুটবল’ এবারের ব্যালন ডি’অর পুরস্কার প্রদানের তারিখ ঘোষণা করেছে। আগামী ৩০ অক্টোবর প্যারিসে আয়োজিত হবে ব্যালন ডি’অরের অনুষ্ঠান। যেখানে ২০২২-২৩ মৌসুমের বর্ষসেরাদের তালিকা প্রকাশ করা হবে।
ফ্রান্স ম্যাগাজিন এখন পর্যন্ত তাদের বর্ষসেরাদের তালিকা প্রকাশ না করলেও পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে ২০ জনের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে ফুটবল বিষয়ক জনপ্রিয় গণমাধ্যম গোলডটকম। যেখানে প্রথম তিনজনের তালিকাতে রয়েছেন লিওনেল মেসি, আর্লিং হালান্ড ও কিলিয়ান এমবাপ্পে। এছাড়াও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ী ম্যানচেস্টার সিটি থেকে সুযোগ পেয়েছেন ৮জন খেলোয়াড়।
গোলডটকম তাদের তালিকার শীর্ষে এখনো রেখেছে বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক লিওনেল মেসিকে। তারপরেই রয়েছে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগজয়ী ম্যানচেস্টার সিটির নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার আর্লিং হালান্ড। তৃতীয় স্থানে রয়েছেন পিএসজির ফরাসি স্ট্রাইকার কিলিয়ান এমবাপ্পে।
লিওনেল মেসি (আর্জেন্টিনা/ইন্টার মিয়ামি)
চলতি মৌসুমে মেসি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে আর্জেন্টিনাকে ৩৬ বছর পর ফুটবল বিশ্বকাপ শিরোপা উপহার দেন। বিশ্বকাপ জয়ের পাশাপাশি ৩৮টি গোল এবং ২৫টি অ্যাসিস্ট রয়েছে মেসির। বিশ্বকাপ ছাড়াও লিগ ওয়ান এবং ট্রফি দেস চ্যাম্পিয়ন শিরোপাও রয়েছে তার। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তার দল দাপট দেখাতে ব্যর্থ হয়ে শেষ ষোলো থেকে ছিটকে যায়।
আর্লিং হালান্ড (নরওয়ে/ম্যানচেস্টার সিটি)
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের ক্ষেত্রে ধারণা করা হয়েছি হালান্ড তুরুপের তাস হবেন। কিন্তু তিনি ছিলেন পুরোটাই নিষ্প্রভ। পুরো ম্যাচে এ নরওয়েজিয়ান তারকা প্রতিপক্ষের গোলপোস্ট বরাবর মাত্র একটি শট করতে সক্ষম হন। পাশাপাশি পুরো ম্যাচে মাত্র একবার একটি ড্রিবল সম্পন্ন করেন। তিনি তার আটটি পাসের মধ্যে মাত্র তিনটি সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছেন। সেই সঙ্গে একটি বড় সুযোগও মিস করেন হালান্ড।
এছাড়াও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল এবং ফাইনালে তিনি দলের হয়ে বড় কোনো প্রভাব রাখতে পারেননি। এ দুই ম্যাচে তিনি ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে। যদিও নরওয়েজিয়ান তারকা তার দলের জন্য একটি অসাধারণ মৌসুম কাটিয়েছেন। চলতি মৌসুমে সবমিলিয়ে তিনি ৫৩ গোল করেন। পাশাপাশি তিনি ৯টি অ্যাসিস্টও করেন। সিটির জার্সিতে প্রিমিয়ার লিগের পাশাপাশি জিতেছেন এফএ কাপ ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা।
হালান্ড চলতি মৌসুমে অগণিত রেকর্ড ভাঙলেও তার শেষ আটটি খেলায় মাত্র একটি গোল করতে সক্ষম হন। তাই ধারণা করা হচ্ছে ব্যালন জয়ের ক্ষেত্রে তিনি কিছুটা পিছিয়ে পড়েছেন।
কিলিয়ান এমবাপ্পে (ফ্রান্স/পিএসজি)
চলতি মৌসুমে দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন তিনি। তৃতীয়স্থানে আসতে তাকে লড়তে হয়েছে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের সঙ্গে। চলতি মৌসুমে এমবাপ্পে ৫৩টি গোল, ১৪টি অ্যাসিস্ট করেছেন। রয়েছে একটি মাত্র শিরোপা।
তিনি ক্লাব এবং দেশের হয়ে ৫০টিরও বেশি গোল করেছেন। কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে হ্যাটট্রিক করেছেন। পুরো বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ৮ গোল করে জিতেছে গোল্ডেন বুটের শিরোপা।
এ তিনজন ছাড়া বাকিরা হলেন-
ভিনিসিয়ুস জুনিয়র (রিয়াল মাদ্রিদ), কেভিন ডি ব্রুইনা (ম্যানচেস্টার সিটি), ইল্কায় গুন্দোয়ান (ম্যানচেস্টার সিটি), ভিক্টর ওসিমেন (নাপোলি), রড্রি (ম্যানচেস্টার সিটি), রবার্ট লেভানদোভস্কি (বার্সেলোনা), জুলিয়ান আলভারেজ (ম্যানচেস্টার সিটি), বার্নার্ডো সিলভা (ম্যানচেস্টার সিটি), করিম বেনজেমা (আল-ইত্তিহাদ), খভিচা কোয়ারাটশেলিয়া (নাপোলি), মার্কাস রাশফোর্ড (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড), জুড বেলিংহাম (বরুশিয়া ডর্টমুন্ড), লাউতারো মার্টিনেজ (ইন্টার), বুকায়ো সাকা (আর্সেনাল), জন স্টোনস (ম্যানচেস্টার সিটি), জ্যাক গ্রিলিশ (ম্যানচেস্টার সিটি) ও ক্যাসেমিরো (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড)।