বিয়ের প্রতি আগ্রহ কমছে চীনাদের
সাদাকালো নিউজ
চীন গত বছর সর্বনিম্ন সংখ্যক বিবাহ হয়েছে। দেশটিতে বিয়ের হার কমে যাওয়ার রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। চীনাদের বিয়ের প্রতি আগ্রহ কমে যাওয়ায় দেশটিতে জন্মহার দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। এ কারণে জনসংখ্যা কমে যাওয়ার শঙ্কা থাকায় বিষয়টি নিয়ে দেশটির সরকারও উদ্বিগ্ন।
সম্প্রতি চীনের ‘ন্যাশনাল বুর্যো অব স্ট্যাটিসটিক্স’-এর প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, দেশটির তরুণ প্রজন্ম ক্রমশ বিয়ে-বিমুখ হয়ে যাচ্ছে।
তথ্য অনুসারে, ২০১৩ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে প্রথমবার বিয়ে করছেন, এমন মানুষের সংখ্যা কমেছে ৪১ শতাংশ। কিন্তু সংসার পাততে অনীহা কেন? রিপোর্ট বলছে, দাম্পত্য জীবনে প্রবেশে বিমুখতার মূল কারণ গার্হস্থ্য হিংসার প্রতি ভয়। এছাড়া জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার হ্রাস, লিঙ্গ বৈষম্যের মতো কারণও রয়েছে।
প্রশাসনিক সূত্রগুলো বলছে, গত ১০ বছরে বিয়ের হার কমেছে চীনে। গত বছর রেকর্ড সংখ্যক কম বিয়ে হয়েছে এক সময় বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যার দেশটিতে। বিয়ের হারের ক্রমবর্ধমান অধোগতির প্রধান কারণ যে গাহর্স্থ্য হিংসা, তা মেনে নিয়েছেন বিশেষজ্ঞ থেকে আমজনতা। এ কারণে জনসংখ্যা কমে যাওয়ার শঙ্কা থাকায় বিষয়টি নিয়ে দেশটির সরকারও উদ্বিগ্ন।
প্রসঙ্গত, কয়েক দিন আগে চীনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে একটি ভিডিও। তাতে দেখা যায়, এক নারীর ওপর দিয়ে বারবার গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছেন এক ব্যক্তি। এক সময় গাড়ি থামিয়ে ওই ব্যক্তি দেখার চেষ্টা করছেন, তার স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে কিনা। বৈবাবহিক জীবনে অশান্তির কারণেই তিনি এমনটি করেছিলেন বলে পরে জানা যায়।
এই ঘটনা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে চীনের পুলিশ। তবে ‘ট্রেন্ডিং’ এই ভিডিও দেখে অনেকে, বিশেষত নারীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাম্পত্য জীবনের অসহায়তার কথা জানিয়েছেন। অনেকের মন্তব্য, গার্হস্থ্য সহিংসতায় বিপর্যস্ত তাদের জীবন।
এক নারী নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানাতে গিয়ে লিখেন, স্বামীর মারধরের ফলে বেশ কিছু সপ্তাহ হাসপাতালে কাটাতে হয়েছে তাকে। তিনি জানান, বিয়ের প্রথম ২৪ মাসের মধ্যে ১৬ বার স্বামীর হাতে নিগৃহীত হতে হয়েছে তাকে। বিবাহবিচ্ছেদের চেষ্টা করলেও জুটেছে অত্যাচার-নিপীড়ন। এই ঘটনা ছাড়াও, গার্হস্থ্য সহিংসতার জেরে স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে, এমন ঘটনাও চীনের সমাজে এখন বেশ পরিচিত ঘটনা।
অবশ্য, গত বছর চীনে বিবাহবিচ্ছেদের হার ছিল বেশ কম। তবুও তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নানান মহল। তাদের দাবি, কঠোর বিধি-নিষেধের ফলেই কমেছে বিবাহবিচ্ছেদের সংখ্যা। তবে এর প্রভাবও পড়েছে বিয়ের ওপর।