বাংলাদেশে প্রথম বৈদ্যুতিক গম্বুজের মসজিদ
সাদাকালো নিউজ
সৌদি আরবের মসজিদে নববির আদলে স্থাপনা তৈরি হচ্ছে বাংলাদেশের ময়মনসিংহে। দৃষ্টিনন্দন এই স্থাপনাটি গড়ে উঠছে সদর উপজেলার চরখরিচা গ্রামে। বলা হচ্ছে- বাংলাদেশের একমাত্র বৈদ্যুতিক গম্বুজের মসজিদ এটি।
২০১১ সালে জামিয়া-মাহমুদিয়া-আরবিয়া ইসলামিক মাদ্রাসার প্রাঙ্গনে মসজিদটি তৈরির কাজ শুরু হয়। প্রায় ৮ একর জায়গা জুড়ে মসজিদটি নির্মাণের উদ্যোগ নেন মাদ্রাসাটির প্রতিষ্ঠাতা আল্লামা মাহমুদুল হাসান।
মসজিদটির কারুকাজে ব্যবহৃত হয়েছে মারবেল পাথর আর কাঠ। মুসল্লিদের সুবিধার জন্য রাখা হয়েছে একটি চলন্ত ও তিনটি পায়ে হাঁটা সিঁড়ি। চার তলা মসজিদটির প্রতিটি তলায় রয়েছে ১৯টি করে কাতার। প্রতি কাতারে ১১০ জন করে মুসল্লি নামাজের জন্য দাঁড়াতে পারবে। সেই হিসাবে মোট ৮ হাজার ৪০ জন্য মুসল্লি একসাথে নামাজ আদায় করতে পারবে।
মসজিদটি ঘুরে দেখার পাশাপাশি নামাজ পড়তে বিভিন্ন জায়গা থেকে ছুটে আসছেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। স্থানীয়রা বলছেন, ছোট্ট একটা গ্রামের মধ্যে এতো সুন্দর মসজিদ এটা আসলেই অবিশ্বাস্যকর। এটা শুধু ময়মনসিংহের জন্য নয়, পুরো বাংলাদেশের জন্য গর্ব।
আবার কেউ বলছেন, মদিনায় আমরা যেতে পারি না কিন্তু মদিনার আদলে নির্মিত একটা মসজিদের পাশে আমরা থাকতে পারছি। এখানে নামাজ পড়লেই মনে হয় মসজিদে নববিতে নামাজ পড়ছি। সৌন্দর্য ও নান্দনিকতার দিক থেকে মসজিদটি ইতিহাসের পাতায় স্থান পাবে।
চোখ জুড়ানো এই মসজিদে রয়েছে পাঁচটি গম্বুজ। এর মধ্যে একটি বৈদ্যুতিক বাকি চারটি স্থির। বৈদ্যুতিক গম্বুজের উচ্চতা চার তলার উপর থেকে ১৬০ ফুট। অত্যাধুনিকতার মধ্য দিয়ে বৈদ্যুতিক গম্বুজের এ মসজিদ বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অনন্য সংযোজন। সুইচ অন করলেই সরে যাবে এর গম্বুজ। তখন মসজিদের ভেতর থেকে দেখা যাবে আকাশ।
বৈদ্যুতিক গম্বুজটি দেখা শোনার জন্য আলাদা কর্মীও নিয়োগ দেয়া হয়েছে। মসজিদটি নির্মাণে বিশেষ ধরনের টাইলস তৈরির পাশাপাশি মারবেল পাথরসহ সব কিছুই আনা হয়েছে দেশের বাইরে থেকে।
প্রায় ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মসজিদের কাজ এরি মধ্যে ৮০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। তবে নামাজের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেয়া হয়েছে মসজিদটি। দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদের নাম রাখা হয়েছে মদিনা মসজিদ।
মসজিদ নির্মাণ প্রসঙ্গে আল্লামা মাহমুদুল হাসান বলেন, মসজিদ মহান রাব্বুল আলামিনের ঘর। অথচ আল্লাহর ঘরকে সুন্দর করার দিকে মনযোগী হই না। এটা ঠিক না। প্রত্যেক মানুষের আল্লাহর প্রতি অপরিসীম প্রেম ও ভালোবাসা থাকতে হবে। সেই মহব্বত ও ভালোবাসা থেকে আল্লাহর ঘর নির্মাণের উদ্যোগ আল্লাহ আমার মাধ্যমে শুরু করিয়েছেন। এর পেছনে অগণিত মুসলমান ধর্মপ্রাণ মানুষের শ্রম-ঘাম রয়েছে।