বাংলাদেশের মানুষ নিজের সমস্যা নিজেই সমাধান করতে পারে: জয়
সাদাকালো নিউজ
কোভিড-১৯ সংকট মোকাবিলা ও নানা সংকট মোকাবিলার উদাহরণ টেনে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা এবং সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) চেয়ারপার্সন সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, ‘আমার বিশ্বাস ছিল বাংলার মানুষ নিজেদের সমস্যা নিজেরাই সমাধান করতে পারে।’
শনিবার (১২ নভেম্বর) সাভারে শেখ হাসিনা জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটে আয়োজিত জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ডের ষষ্ঠ আসরের পুরষ্কার বিতরণী শেষে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সারাদেশ থেকে আবেদন করা দেশ গঠনে এগিয়ে আসা তরুণদের ৬০০টিরও বেশি সংগঠন থেকে যাচাই বাছাই শেষে শীর্ষ ১০ তরুণ সংগঠনের হাতে ওঠে জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড। এ বছর ৫টি ক্যাটাগরির প্রতিটিতে দুটি করে ১০টি সংগঠনকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়। এছাড়া দেশের জন্য বিশেষ অবদান রাখায় দুজন পেয়েছেন ‘লাইফ টাইম’ বা আজীবন সম্মাননা অ্যাওয়ার্ড। এই অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সিআরআই ট্রাস্টি নসরুল হামিদ বিপু।
সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘আজকে যারা পুরস্কৃত হয়েছেন শুধু তারাই না যারা আমাদের ফাইনালিস্ট এবং এই যে ৬০০টি সংগঠন যারা যোগদান করেছে৷ আপনারা সকলেই আজকে বিজয়ী। আপনাদের সকলের প্রতি বিশেষ করে যারা ফাইনালিস্ট ও পুরস্কৃত হয়েছেন আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। আপনারা দেশের জন্য এবং দেশের মানুষের জন্য যেভাবে সেবা করছেন এটা আমাদের সকল নাগরিক ও বিশ্বের প্রতি উদাহরণ। আপনাদের মতো তরুণ-তরুণীরা নিজের চিন্তাধারায় এবং প্রচেষ্টায় কারো কাছে হাত না পেতে নিজের মতো করে অল্প বা বেশি যেই পরিসরেই হোক কাজ শুরু করেছেন এটাই আমাদের চেতনা।’
তিনি বলেন, ‘আমার এই বিশ্বাসটি ছিল যে বাংলাদেশের মানুষ, আমরা নিজেদের সমস্যা নিজেরাই সমাধান করতে পারি। সারা বিশ্বেই এখন সংকট চলছে, যুদ্ধ চলছে। আমরা ২ বছর আগেই কোভিড মোকাবিলা করলাম। কোভিড যেতে না যেতেই যুদ্ধ, সন্ত্রাস এসবের জন্য অর্থনৈতিক চাপ বাড়ছে। এসবের খবর শুনে অনেকেই ভয়ে থাকে যে এ সমস্যা আমাদের দেশ কীভাবে মোকাবিলা করবে! আপনারাই (তরুণরা) সেই সমস্যা সমাধানের উদাহরণ।’
সমস্যার কোনোদিন শেষ থাকে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই যে ১৪/১৫ বছর যে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়, আমরা কী কী সমস্যা দেখেছি। প্রথমেই ছিল বিদ্যুতের সমস্যা। তখন সবাই চিন্তা করতো ৮ ঘণ্টার লোডশেডিংয়ের সমস্যা আমরা কীভাবে সমাধান করব। তারপর অর্থনীতির, এত মানুষকে কিভাবে খাওয়ানো হবে। অর্থনীতি কীভাবে আগানো যায়। সেগুলো আমরা করে দেখিয়েছি। তারপর আসলো কোভিড। কোভিড নিয়ে সবাই ভয়ে ছিল, সবার আতঙ্কে ছিল। সারা বিশ্ব আতঙ্কে ছিল। বাংলাদেশ নিজেদের মতো করে নিজেদের প্রচেষ্টায় বিশ্বের অনেক ধনী দেশের চেয়েও ভালোভাবে কোভিড মোকাবিলা করেছে।’
ইয়াং বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড প্রদানের সময় গর্ববোধ করেন জানিয়ে সজীব ওয়াজেদ বলেন, ‘এতগুলো সংগঠন (দেশ গঠনে) এগিয়ে আসে, আবেদন করে। গত ৭ বছর ধরেই আমরা দেখছি। প্রথমে যখন শুরু করি তখন ২০০র মতো সংগঠন ছিল। প্রতি বছর এই সংখ্যা বাড়ছে। এখন সারাদেশে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ সদস্য রয়েছে ইয়াং বাংলার।’
উপস্থিত বিজয়ীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আজকে এত আনন্দ লাগছে এটা দেখে যে, আমাদের দেশে আপনারা রোবটিক হাত বানাচ্ছেন। এটা অসাধারণ। আমাদের দেশ থেকে ইউএন এ প্রতিনিধি পাঠাচ্ছেন আপনারা ক্লাইমেট চেঞ্জের দাবি করার জন্য। আপনারা সবাই অসাধারণ কাজ করছেন। আপনারা অসাধারণ। বাংলার মানুষ, আমাদের দেশ একটি অসাধারণ দেশ। অল্প জায়গার মধ্যে আমরা ১৬ কোটি মানুষ। আমরা নিজেরা লড়াই করে, রক্ত দিয়ে স্বাধীন করেছি এই দেশ। ১৬ কোটি মানুষকে খাওয়াতে সক্ষম হয়েছি। ১০-১৫ বছরের মধ্যে আমরা এই দেশকে একটি দরিদ্র দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে প্রতিষ্ঠিত করেছি। তরুণ-তরুণীরা, ইয়াং বাংলার অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তরা আপনারাই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ। আপনারা বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন। আমার আশা ও বিশ্বাস আছে আপনারাই বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে প্রতিষ্ঠিত করবেন।’
এসময় ফের নিজেদের সমস্যা নিজেদের সমাধানের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা নিজেদের পরিশ্রম ও মেধা দিয়ে নিজেদের সমস্যা সমাধান করব। নিজের মধ্যে যদি আত্মবিশ্বাস ও দেশপ্রেম থাকে তাহলে দেশ ও দেশের মানুষের জন্য সবকিছু করা যায়। নিজের মধ্যে যদি দেশপ্রেম ও স্বাধীনতার চেতনা না থাকে, তাহলে আমি দেশের ভালো কীভাবে চাইতে পারি! আপনারা তরুণরা একসঙ্গে শুধু আজকের বাংলাদেশ না, ভবিষ্যতের বাংলাদেশকেও গড়ে তোলার পাশাপাশি এগিয়ে নিয়ে যাবেন। সবাইকে আমরা আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। আপনারা ৬০০টি সংগঠন যারা পরিশ্রম করছেন তারা এগিয়ে যান। আপনাদের মেধা, মানুষের সেবা বাড়াতে থাকেন। আরও তরুণ-তরুণীদের বলবো আপনারাও এগিয়ে আসেন।’
এসময় ইয়াং বাংলার আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে সজীব ওয়াজেদ জয় নিয়মিত এই অ্যাওয়ার্ড প্রদান জারি থাকার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।