বন্ধুর সঙ্গেই চলে গেল আরেক বন্ধু
নাঈম, সিয়াম ও রিতু। তিনজনেই ভালো বন্ধু। রেল সেতুর উপর দিয়ে হেঁটে কোচিংয়ে যাচ্ছিলেন তাঁরা। ঠিক এই সময় ঘটে বিপত্তি। তাঁদের কাছাকাছি চলে আসে দ্রুত গতির একটি ট্রেন। তিনজনের মধ্যে একজন বেঁচে ফিরলেও দুইজন পরপারে চলে যান। ঘটনাটি ঘটেছে কুষ্টিয়ার মিরপুরে। কুষ্টিয়ার মিরপুর পৌরসভার নওপাড়া গ্রামের আজিম আলির ছেলে নাঈম। একি উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়নের পাহাড়পুর গ্রামের রবিউলের মেয়ে রিতু।
১৫ বছর বয়সী নাঈম মিরপুর বডার গার্ড পাবলিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। ১৪ বছর বয়সী রিতু মিরপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিল। দুইজনেই দশম শ্রেণিতে পড়াশোনা করতো। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে স্থানীয় ব্রাইট কোচিং সেন্টারের পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক রাজু বলেন, রেল ব্রিজের ওপর দিয়ে কোচিং সেন্টারের দিকে হেঁটে আসছিলো নাঈম, সিয়াম ও রিতু। ঠিক তখনি ঘটনাস্থল অতিক্রম করছিলো চিলাহাটি থেকে খুলনাগামী আন্তঃনগর রূপসা এক্সপ্রেস ট্রেন।
এ সময় সিয়াম রেল ব্রিজের নিচে অবস্থান নেয়। নাঈমও পার হয়ে যায় রেল ব্রিজ। তবে বিপত্তি ঘটে রিপার। তাড়াহুড়ো করে চলতে গিয়ে পায়ে বোরকা আটকে পড়ে যায় রিপা। এ সময় নিজের জীবন বিপন্ন করে বন্ধুকে উদ্ধার করতে চলন্ত ট্রেনের দিকে এগিয়ে যায় নাঈম। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি তাঁদের। ট্রেনের চাকায় পড়ে প্রাণ হারাতে হয় দু’জনকেই।
জানা গেছে, প্রায় চার বছর ধরে ব্রাইট কোচিং সেন্টারের শিক্ষার্থী ছিলো তাঁরা। ৪ সেপ্টেম্বর বিকেলেও পড়ার জন্য তাঁরা রেলসেতু পার হয়ে কোচিংয়ের দিকেই আসছিল। কিন্তু পথেই শেষ হয়ে গেল তাঁরা। এদিন বিকেল সোয়া ৩টার দিকে মিরপুর রেলগেট সংলগ্ন এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটে। গণমাধ্যমকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন পোড়াদহ রেলওয়ে থানার ওসি মনজের আলী।
রবিবার এশার নামাজের পরে নাঈমকে শেষ নিদ্রায় শায়িত করা হয়। অপরদিকে, রাত ৯টার দিকে রিতুকে শেষ নিদ্রায় শায়িত করা হয়। নাঈম-রিতুর একসঙ্গে চলে যাওয়ার ঘটনায় এলাকায় এখন চলছে শোকের মাতম। স্থানীয়রা বলছেন, নর্ম-ভদ্র ও শান্ত প্রকৃতির শিক্ষার্থী ছিলো তাঁরা। কারও সাথে কোনদিন উচ্চস্বরে কথা বলেনি। সবাই তাঁদের অনেক স্নেহ করতো।
সাদাকালো নিউজ