প্রায় চার যুগ ধরে মসজিদুল হারামে আজান দিচ্ছেন যিনি (ভিডিও)

সাদাকালো নিউজ

পবিত্র মসজিদুল হারামে ৪৮ বছর ধরে সুমধুর সুরে আযান দিয়ে আসছেন শায়খ আলী আহমদ মোল্লা। ১৯৭৫ সালে মাত্র ১৪ বছর বয়সে মসজিদুল হারামের মুয়াজ্জিন হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে নিয়োগ পান তিনি। দীর্ঘকাল আজান দেয়ায় তাকে ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন বিলাল (রা.)-এর নামের সঙ্গে মিলিয়ে ‘বিলাল আল-হারাম’ বা হারাম শরিফের বিলাল উপাধি দেওয়া হয়।

শায়খ আলী আহমদ মোল্লা ১৯৪৫ সালের ৫ জুলাই মক্কা নগরীর প্রসিদ্ধ সুক আল-লাইল এলাকায় এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পবিত্র মসজিদুল হারামে আজান দেওয়াই তার পূর্বপুরুষদের অন্যতম ঐতিহ্য। তার দাদা, বাবা, চাচা, ভাইসহ বংশের অনেকেই এই দায়িত্ব পালন করেন।

শায়খ আলী মোল্লা শৈশবে মসজিদুল হারামে শায়খ আশুরের কাছে প্রাথমিক পড়াশোনা শুরু করেন। এরপর মাসআয় অবস্থিত রহমানিয়া মাদরাসায় পড়েন। ১৯৭১ সালে রিয়াদের ইনস্টিটিউট অব টেকনিক্যাল এডুকেশন থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। ১৯৭৫ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি মসজিদুল হারামের মুয়াজ্জিন হিসেবে নিয়োগ পান। মসজিদে আজান দেওয়ার পাশাপাশি নিজস্ব ব্যবসাও দেখাশোনা করেন তিনি।

১৩৯৫ হিজরিতে মাত্র ১৩ বছর বয়সে তিনি বাব আল জিয়াদায় ফজরের প্রথম আজান দেন। তখন মাইক্রফোনের ব্যবহার ছিল না। তাই আশপাশের কিছু লোক তা শুনতে পেত। এরপর তিনি বাব আল মাহাকামার মুয়াজ্জিন হিসেবে নিযুক্ত হোন। পরবর্তী সময়ে তিনি পুরো মসজিদুল হারামে মুয়াজ্জিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

বর্তমানে তিনি ‘শায়খুল মুয়াজ্জিনিন’ প্রধান মুয়াজ্জিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। চাচাতো ভাই শায়খ আবদুল মালিক মোল্লার মৃত্যুর পর তিনি মসজিদুল হারামের প্রধান মুয়াজ্জিন নিযুক্ত হন।

শায়খ আলী মোল্লা, যাকে মক্কার ‘বিলাল’ হিসাবে গণ্য করা হয়, তিনি এখন পর্যন্ত মসজিদুল হারামে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে দায়িত্ব পালনকারী মুয়াজ্জিন।

শায়খ আলী মোল্লা বলেছেন, আমার জীবনের সবচেয়ে বড় সুসংবাদ ছিল যেদিন আমার বাবা জানালেন যে আমি একদিন মসজিদুল হারামের মুয়াজ্জিন হব। বিলাল আল-হারাম উপাধি পেয়ে আমি খুবই অভিভূত। সৌদির সহায়তায় নির্মিত মসজিদ উদ্বোধনে ব্রিটেনে গেলে সেখানকার মুসলিমরা আমাকে এই উপাধি দেয়। সংবাদপত্রে তা প্রচারিত হলে এই উপাধি সবার মধ্যে পরিচিতি লাভ করে।