পালিয়ে যাওয়ার গুজব নিয়ে মুখ খুললেন ডিবি হারুন
সাদাকালো নিউজ
সম্প্রতি বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওতে বলা হচ্ছে, মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সরকারি কয়েকজন কর্মকর্তা দেশ ছাড়বেন এবং আর দেশে ফিরবেন না। এ বিষয়ে চৌঠা জুন নিজ কার্যালয়ে কথা বলেছেন ডিবি প্রধান।
দেশ থেকে বিদেশে পালিয়ে যাবার যে প্রচারণা চালানো হচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন হারুন অর রশীদ। তিনি জানিয়েছেন একটি অশুভ চক্র এ ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে; যা সম্পূর্ণ গুজব। তিনি জানান, বেশ কিছুদিন ধরে একটি গ্রুপ দেশের বাইরে থেকে এ ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে। নিজস্ব মনগড়া তথ্য দিয়ে ফেসবুকে ভিউ বাড়াতেই এমনটা করা হচ্ছে।
হারুন অর রশীদ জানান, শুধু তিনি নয়, দেশের আরও বেশকিছু সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ে এই গুজব রটানো হচ্ছে। একজন সরকারি কর্মকর্তার বিদেশে যাওয়ার ছুটি পেতে অনেক দিন লাগে। অনেক স্তর পার হতে হয়। এসব যারা করছে তাদের মূল উদ্দেশ্যে টাকা কামানো ও পুলিশের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করা।
হারুন জানান, যারা সরকারি চাকরি করে তাদের পরিবার আছে। বিশেষ প্রয়োজন আছে। তাদেরও ছুটির প্রয়োজন হয়। কেউ যদি মনে করে, এ ধরনের ভিডিও বানিয়ে পুলিশের মনোবল ভেঙে দেবে, তাহলে তারা বোকার স্বর্গে বাস করে। পুলিশের বিরুদ্ধে এসব ছড়ালে তারা হয়তো ভিউ পেতে পারে, টাকা আয় করতে পারে, কিন্তু এগুলো করে পুলিশের মনোবল ভাঙতে পারবে না।
সম্প্রতি নিজের ও স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যেতে ১৩ দিনের ছুটি নিয়েছিলেন ডিবি কর্মকর্তা হারুন। ছুটি মঞ্জুরের আদেশটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে, তিনি আর দেশে ফিরবেন না বলে গুজব ওঠে।
জানা গেছে, কিশোরগঞ্জের মিঠামইন হাওরপাড়ের মেধাবী ও সাহসী সন্তান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। কর্মদক্ষতায় এই পুলিশ কর্মকর্তা পরিচিতি পেয়েছেন ‘এসপি হারুন’, ‘বাংলার সিংহাম’, ‘সিংহ পুরুষ’, ‘গরীবের বন্ধু’, ‘ডিআইজি হারুন’, ‘অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হারুন’, ‘ডিবি হারুন’ কিংবা ‘ডিবিপ্রধান হারুন’ হিসেবে।
হারুন অর রশীদ ১৯৭৪ সালে কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন থানার হোসেনপুর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা আবদুল হাসেম ও মা জহুরা খাতুন। বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হারুন ছোটবেলা থেকেই ছিলেন অসম্ভব মেধাবী। প্রথম শ্রেণি থেকে শুরু করে স্কুল-কলেজের যেকোনো পরীক্ষায় সবসময় প্রথম স্থান অর্জন করতেন।
কলেজের গণ্ডি পেরুনোর পর, হারুন তাঁর মেধার স্বাক্ষর রেখে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। সেখান থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি এবং এলএলবি সম্পন্ন করেন।
পরবর্তীতে বাংলাদেশ ক্যাডার সার্ভিসের পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে ২০তম ব্যাচে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে কর্মজীবন শুরু করেন হারুন-অর-রশীদ।