পাবজি থেকে ভারতীয়র প্রেমে পাকিস্তানের মেয়ে
সাদাকালো নিউজ
পাকিস্তানের মেয়ে, ভারতের ছেলে। তাদের প্রেমকাহিনি এখন সাড়া ফেলে দিয়েছে। চার সন্তানকে নিয়ে প্রেমিকের কাছে ভারতে এসেছেন সীমা। সীমার কাহিনি বলিউডের গল্পকেও হার মানায়। অনলাইন গেমসের মাধ্যমে দুইজনের পরিচয়, প্রেম। সীমার স্বামী বিদেশে চাকরি করেন। কিন্তু সীমা তার সঙ্গে থাকতে চান না। পাকিস্তানেও থাকতে চান না। তিনি চার সন্তান নিয়ে নাম বদল করে ভুয়া পরিচয়পত্র নিয়ে পাকিস্তান থেকে নেপালের পোখরা হয়ে সোজা চলে এসেছেন দিল্লি লাগোয়া উত্তরপ্রদেশের শহর গ্রেটার নয়ডায়। তার প্রেমিক শচিনের বাড়িতে। এরপর পুলিশ তাকে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের দায়ে গ্রেপ্তার করে। শচিনকেও গ্রেপ্তার করা হয় সীমাকে আশ্রয় দেয়ার জন্য। দুজনকেই কোর্ট জামিন দেয়। তারপর তারা এক সঙ্গেই থাকছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, তারা বিষয়টি সম্পর্কে জানেন। এখন পুরো বিষয়টা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। গত ১৩ মে সীমা সিন্ধু প্রদেশে তার বাসস্থান ছেড়ে বাচ্চাদের নিয়ে নেপালে ঢুকে পোখরা হয়ে নয়ডা আসেন। সেই সময় ভুয়ো নাম ও পরিচয়পত্র ব্যবহার করেছেন তিনি। নিজেকে তিনি প্রীতি বলে পরিচয় দেন। তার সঙ্গে একটা আধার কার্ড ছিল। বাসের চারটি টিকিট কেটেছিলেন তিনি। টাকা কম পড়ায় তিনি কাছ থেকে টাকা চেয়ে পাঠান।
কাঠমান্ডুর এক হোটেল মালিক জানিয়েছেন, গত মার্চেও শচিন ও সীমা একসঙ্গে হোটেলে আটদিন ছিলেন। সংবাদসংস্থা এএনআইকে হোটেলের মালিক গণেশ জানিয়েছেন, তখন শচিন নিজেকে শিবাংশ বলে পরিচয় দেন। তারা বেশিরভাগ সময় হোটেলের ঘরেই থাকতেন। সন্ধ্যায় বেরিয়ে আবার রাত দশটার মধ্যে হোটেলে ঢুকে যেতেন। রহস্য বাড়ছে সীমা ও শচিনের দাবি, তাদের পরিচয় হয়েছিল ২০১৯ সালে। অনলাইন গেম পাবজি খেলার সময়। তখন সীমার বয়স ৩০ বছর। শচিনের ২২। সীমার দাবি, প্রেমিকের জন্য তিনি ঘরবাড়ি ফেলে ছুটে এসেছেন। চার সন্তানকে সঙ্গে এনেছেন। গ্রেটার নয়ডায় শচিনের বাড়ি পৌঁছানোর পর সীমা, শচিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। জামিনে মুক্ত হওয়ার পর সীমা হিন্দুধর্ম নিয়েছেন বলেও দাবি করেছেন।
তিনি বলেছেন, তার নাম শুধু সীমা। আর বাচ্চাদের নামও বদল করে হিন্দু নাম হয়ে গেছে। তিনি নিরামিষ খাচ্ছেন। বড়দের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করছেন।
পাকিস্তানের তরফ থেকে ইতোমধ্যে জানানো হয়েছে, নিছক প্রেমের টানেই সীমা ভারতে বেআইনিভাবে প্রবেশ করেছে। এর পিছনে আর কোনো কাহিনী নেই। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের এটিএস বা সন্ত্রাস বিরোধী শাখা এখন পুরো ঘটনাটা তদন্ত করে দেখছে। শুধুই প্রেম, নাকি এর পিছনে গুপ্তচরবৃত্তি বা অন্য কোনো গল্প আছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ভুয়ো নাম ও পরিচয়পত্র দেখিয়ে ভারতে ঢোকা সন্দেহ আরও বাড়িয়েছে। এই সপ্তাহের গোড়াতেও তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
উত্তরপ্রদেশ পুলিশ জানিয়েছে, সীমার কাছ থেকে পাঁচটি পাকিস্তানি পাসপোর্ট পাওয়া গেছে। তার মধ্যে একটা পাসপোর্ট কখনো ব্যবহার করা হয়নি। একটা পরিচয়পত্রও পাওয়া গেছে।
উত্তরপ্রদেশের ডিসিপি-কে প্রশ্ন করা হয়েছিল, সীমা কি পাকিস্তানি চর, জবাবে তিনি বলেছেন, এখনো কিছুই বলা যাচ্ছে না। দুই দেশের বিষয়। যতক্ষণ উপযুক্ত প্রমাণ না পাওয়া যাচ্ছে, ততক্ষণ কিছু বলা যাবে না।