দুর্গত এলাকায় মানবিক বিপর্যয়
অনেকটা হঠাৎ করেই তলিয়ে গেছে দেশের ১১ জেলা। কারও কোনো প্রস্তুতি ছিল না। ফলে ঘরবাড়ি, সহায়সম্বল ফেলে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে ছোটেন মানুষ। ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও কুমিল্লার প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ সেই সুযোগও পাননি। এসব অঞ্চলে নিজ বাড়িতেই আটকা পড়েছেন লাখো মানুষ। বন্যার্ত ১০ জেলার প্রায় ১১ শতাংশ মোবাইল টাওয়ার অচল হয়ে পড়েছে। শুধু ফেনীতেই অচল ৯২ শতাংশ টাওয়ার। বন্ধ রয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগও। কেউ কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে পারলেও অনেকে নিরুপায় হয়ে বাড়ির ছাদ, টিনের চাল বা খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছেন। খাবার নেই। বিশুদ্ধ পানি নেই। রাত নামলেই বিদঘুটে অন্ধকার আর সুনসান নীরবতা। চারদিকে থইথই পানি। মানবিক বিপর্যয়ের চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছেছে কোনো কোনো এলাকা।
এদিকে বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় পানিতে তলিয়ে গেছে ফসলের মাঠ, মাছের খামার। ভেসে গেছে গৃহপালিত ও খামারের গবাদিপশু, হাঁস-মুরগি, আসবাবপত্র। পানির তোড়ে অনেকের বাড়িঘরও ভেঙে গেছে। সব হারিয়ে নিঃস্ব এসব মানুষের মাঝে এখন শুধু বাঁচার আকুতি। কুমিল্লার বুড়িচংয়ে গোমতী নদীর বাঁধ ভেঙে প্রায় ২০০ পরিবার নিখোঁজ রয়েছে। দুর্গত এলাকাগুলোয় স্থানীয় প্রশাসন, সেনাবাহিনী, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবী দল উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে। ত্রাণ সহায়তাও দিচ্ছে। তবে বানভাসিরা বলছেন, প্রয়োজনের তুলনায় তা খুবই কম। তাছাড়া শহরের আশপাশেই তারা বেশি তৎপর। ঝুঁকি নিয়ে অনেকেই দূর-দূরান্তের গ্রামীণ জনপদে যেতে পারছেন না।
শুক্রবার সচিবালয়ে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব জানান, বন্যায় দেশের ১১ জেলায় ৭৭ উপজেলা প্লাবিত এবং ৫৮৪টি ইউনিয়ন ও পৌরসভা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত ১৩ ব্যক্তি মারা গেছেন। এদের মধ্যে কুমিল্লায় ৪ জন, ফেনীতে একজন, চট্টগ্রামে ২ জন, নোয়াখালীতে একজন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন, লক্ষ্মীপুরে একজন ও কক্সবাজারে তিনজন মারা গেছেন। বন্যার কারণে বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৪৪ লাখ ৯৭ হাজার ৫৩৫ জন। তিনি বলেন, বন্যা তীব্র আকার ধারণ করেছে ফেনীতে। এছাড়া চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নোয়াখালী, সিলেট, মৌলভীবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষ্মীপুর, খাগড়াছড়ি ও কক্সবাজার বন্যাকবলিত হয়েছে।
দুর্যোগ সচিব বলেন, এ পর্যন্ত ৩ হাজার ১৬০টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে এক লাখ ৮৮ হাজার ৭৩৯ জন আশ্রয় নিয়েছেন। ১১ জেলার ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসাসেবা প্রদানের জন্য মোট ৬৩৭টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। তথ্য ও সহযোগিতার জন্য ০২৫৫১০১১১৫ নম্বর চালু রয়েছে।
ফেনী : যেন পানিতে ভাসছে ফেনী। জেলার প্রায় সব এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। দুদিন ধরে মোবাইল নেটওয়ার্ক, ইন্টারনেট ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন। ফলে পরিবারের সদস্যদের অবস্থাও জানতে পারছেন না জেলার বাইরে থাকা স্বজনরা। এ অবস্থায় অনেকে নাম-ঠিকানা দিয়ে পরিবারের খোঁজ জানতে এবং উদ্ধার তৎপরতার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিচ্ছেন।
স্থানীয়রা বলছেন, ফেনীতে এমন ভয়াবহ বন্যা আগে কখনো দেখেননি তারা। বিশেষ করে ফেনী শহরে পানি ওঠায় রীতিমতো অবাক সবাই। জেলার প্রতিটি উপজেলা বন্যাকবলিত। তবে ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী ও পরশুরাম এই তিন উপজেলা পুরোটাই পানির নিচে। পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলা একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এখানে সবচেয়ে বেশি মানুষ দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন। পানিবন্দি মানুষরা জানান, তাদের খাবার ও সুপেয় পানি অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। বানভাসি মানুষকে উদ্ধার করতে কাজ করছে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), ফায়ার সার্ভিস ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
শুক্রবার ফেনী সদরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ স্থানেই পানিতে ডুবে আছে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, চাষের জমি। অনেক গ্রামে বাড়িঘর খালি পড়ে আছে। বেশির ভাগ ভবনের নিচতলায় পানি ঢুকেছে। কেউ কেউ দোতলা ও তিনতলায় আশ্রয় নিয়ে বারান্দা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছেন খাবার ও পানির সন্ধানে।
কুমিল্লা, বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া, তিতাস ও চান্দিনা : বৃহস্পতিবার রাতে গোমতী ও কাকড়ি নদীর বাঁধ ভেঙে নাঙ্গলকোট, মনোহরগঞ্জ, বুড়িচং, চৌদ্দগ্রাম ও লাকসামসহ ১৪ উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। এতে কয়েক লাখ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। নদীতীরবর্তী বাসিন্দারা নির্ঘুম রাত কাটান। স্থানীয় হাজি বিল্লাল হোসেন চেয়ারম্যান জানান, গোমতী বাঁধ ভেঙে প্রায় ২০০ পরিবার নিখোঁজ হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে দুর্গত এলাকায় আটকে পড়া লোকজনকে উদ্ধারে কাজ করছে সেনাবাহিনী ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরা। তবে বিকাল পর্যন্ত জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার সহায়তার হাত বাড়ানো হয়নি বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। তলিয়ে গেছে ফসলের মাঠ। ভেসে গেছে গৃহপালিত ও খামারের গবাদিপশু, হাঁস-মুরগি, আসবাবপত্র। সব হারিয়ে ক্ষতির মুখে কুমিল্লার ১০ লাখ মানুষ। জেলা সদরের সঙ্গে উপজেলা সদরের প্রধান সড়কের যোগাযোগও বন্ধ হয়ে গেছে।
বন্যাকবলিত এলাকায় শত শত মাছের ঘের, হেক্টরের পর হেক্টর জমির পাকা আউশ ধান, আমন ধানের বীজতলা এবং শাকসবজিসহ অন্যান্য ফসলের খেত তলিয়ে গেছে। খেতের ফসল হারিয়ে চাষি ও কৃষক পড়েছেন অবর্ণনীয় ক্ষতির মুখে।
নাঙ্গলকোটের কাশিপুর গ্রামের বাসিন্দা বেলাল হোসেন বলেন, আমাদের পুরো গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বেশির ভাগ বাড়িঘরে পানি ঢুকেছে। বন্যা আগেও দেখেছি, তবে এমন বন্যা কখনো দেখিনি।
কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক পঙ্কজ বড়ুয়া বলেন, জেলায় এখন পর্যন্ত ১৪ উপজেলা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। বন্যাদুর্গত ৫০ হাজার মানুষ ৭২৪টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। এ পর্যন্ত ৩০০ মে. চাল ও ১৫ লাখ টাকা বিতরণ করেছে প্রশাসন। এদিকে পানিতে ডুবে এবং বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে কয়েকদিনে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
রামগতি ও রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) : মেঘনা নদীর তীর রক্ষা বাঁধ না থাকায় অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে চরফলকন, সাহেবেরহাট, পাটারিরহাট, চরমার্টিন, চরলরেন্স, চরকালকিনি ইউনিয়ন। তোরাবগঞ্জ ও হাজিরহাট ইউনিয়নের মানুষও পানিবন্দি। কমলনগর উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়নের চরঠিকা ও ভুলুয়া নদীর আশপাশের গ্রামগুলোতে পানিবন্দি মানুষের দুঃখের যেন শেষ নেই।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন জানান, রায়পুরসহ ৫ উপজেলায় মেঘনার জোয়ার ও টানা দশ দিনের ভারি বর্ষণে প্রায় ৪৫ হাজার পুকুর ডুবে চাষাবাদের মাছ ভেসে গেছে।
মীরসরাই (চট্টগ্রাম) : উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের অন্তত ১০ গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ বিভিন্ন স্কুল, মাদ্রাসা, কমিউনিটি সেন্টার ও ব্যক্তিগত মানবিক আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। এছাড়া বন্যাদুর্গত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৮০ হাজার। ব্যক্তিগত পর্যায়ে কেউ কেউ খাবার, পানিসহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করলেও এখনো হাজার হাজার মানুষ ত্রাণের বাইরে। করেরহাটের স্বেচ্ছাসেবী কামরুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন স্কুল-মাদ্রাসায় আশ্রয় নেওয়া মানুষের জন্য পর্যাপ্ত খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধ প্রয়োজন।
হবিগঞ্জ ও চুনারুঘাট : জেলার ১৪ হাজার ৩৪০টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। অনেকে পরিবার-পরিজন ও গবাদিপশু নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে গেছেন। সাবেক ইউপি মেম্বার মো. রইছ আলী বলেন, নদীর বাঁধ ভাঙা থাকায় আমাদের এলাকার ২০-২৫টি গ্রামের বহু বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে গেছে। রিচি, জালালাবাদ, ছোট বহুলা, সুলতান মাহমুদপুর, নোয়াগাঁওসহ আশপাশের গ্রামগুলোর হাওড়ের বিস্তীর্ণ আমন ধানের জমি ভেসে গেছে। এতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। রিচি উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেওয়া উমরা খাতুন বলেন, বৃহস্পতিবার সারাদিন কিছুই খাইনি। রাতে একটু ভাত খেয়েছি।
আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) : হাওড়া নদীর পানি কমতে শুরু করায় দুর্ভোগে থাকা মানুষরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে। তবে এখনো উপজেলার বেশকিছু এলাকার বাসিন্দারা পানিবন্দি রয়েছেন।
খাগড়াছড়ি : দীঘিনালার মেরুং ইউনিয়নের বেশির ভাগ মানুষ পানিবন্দি। মেরুং ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সমীরণ চাকমা বলেন, আমার ওয়ার্ডের প্রায় ৭ গ্রাম এখনো বন্যার পানিতে ডুবে আছে। সোমবার রাত থেকে তারা পানিবন্দি। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুক্রবার দুর্গম এলাকার পরিবারগুলোকে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) : বাঁশের ভেলা নিয়ে বিল পার হতে গিয়ে স্রোতে ভেসে যাওয়া তরুণের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তার নাম মো. রনি (১৭)। সে উপজেলার দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়নের ফুলবাগিচা গ্রামের আবু বক্করের ছেলে। নিখোঁজের প্রায় ৭ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তার লাশ পাওয়া যায়।
রাঙামাটি : কাপ্তাই হ্রদের পানি বেড়ে যাওয়ায় ডুবে গেছে রাঙামাটির মনোরম ঝুলন্ত সেতু। তবে বৃষ্টিপাত কমায় জেলায় বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে। ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিও। বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরীন আক্তার বলেন, বাঘাইছড়ি উপজেলায় ১০ হাজারের বেশি মানুষ বন্যাকবলিত। তাদের মধ্যে প্রায় দুই হাজার দুর্গত মানুষ সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন।
হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) : হালদা নদীর নতুন ব্রিজসংলগ্ন এলাকায় হালদার বাঁধ ভেঙে উপজেলার ফরহাদাবাদ ও ধলই ইউনিয়নের ৩০টিরও বেশি গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়া উপজেলার আওতাধীন ১৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার প্রায় দুই লক্ষাধিক লোক পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১নং ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের ৬টি ওয়ার্ডের লোকজন। শুক্রবার ভোর থেকে বন্যাদুর্গতদের নৌকা, সাম্পান দিয়ে উদ্ধার করতে দেখা গেছে স্বেচ্ছাসেবীদের। দুর্গত লোকজনের মাঝে ত্রাণ হিসাবে শুকনা খাবার, সুপেয় পানি ও খিচুড়ি বিতরণ করা হয়েছে।
কোম্পানীগঞ্জ (নোয়াখালী) : জেলার ৮টি উপজেলায় পানিবন্দি প্রায় বিশ লাখ মানুষ। এর মধ্যে ৫০২টি আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন প্রায় ৭৬ হাজার বন্যাকবলিত মানুষ। জেলাজুড়ে দেখা দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট। আশ্রয়কেন্দ্রে আসা লোকজনের অভিযোগ, সরকারিভাবে তাদের খাবার প্রদানসহ পর্যাপ্ত সহযোগিতা করা হচ্ছে না। তবে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রের আশপাশে থাকা লোকজন ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সহযোগিতায় লোকজনকে খাবার দেওয়া হচ্ছে।
মৌলভীবাজার ও কুলাউড়া : জেলার দুই লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন আবার কেউ কেউ ঝুঁকি নিয়ে পানির মধ্যেই বাড়িতে অবস্থান করছেন। বন্যার চরম অবনতিতে খাদ্য সংকটে পড়েছেন স্থানীয়রা। কেউ কেউ ঘরে রান্না করতে পারছেন না। আবার অনেকেই সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় বাজার করতে পারছেন না। বন্যার্তদের অভিযোগ, সরকারিভাবে তাদের তেমন ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে না। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বন্যায় ২১২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে, আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে ৪৭টি, আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন ৭ হাজার ১৪৫ জন ও মেডিকেল টিম রয়েছে ৬০টি। ৫১৬ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাবেদ ইকবাল বলেন, মনু ও ধলাই নদীতে পানি কমেছে। নিচের দিকে পানি বাড়ছে। রাতে মনু নদীর উজানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বৃষ্টি কমে গেলে পানি নেমে যাবে।
এদিকে রাজনগরে বানের পানিতে মাছ ধরতে গিয়ে সাদিক হোসেন হৃদয় (১৯) নামের এক যুবক নিখোঁজ হয়েছেন।