দিনের আলোয় সেহরি ও ইফতার!
সাদাকালো নিউজ
চলছে সিয়াম সাধনার মাস। মুসলমানদের অতি পবিত্রতার মাস। রমজান মাসের ৩০ দিনের প্রতিদিনি সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত না খেয়ে সিয়াম সাধনা করার নিয়ম রয়েছে। বিশ্বব্যাপী মুসলমানরা তা পালন করে থাকেন।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, বিশ্বের এমন অনেক অঞ্চল রয়েছে যেখানে দীর্ঘদিন ধরে সূর্য ডোবে না। এমন দেশ ও অঞ্চলের মুসলিমরা দিনের আলোতে রোজা পালন করে থাকেন। কিন্তু কীভাবে তারা রোজা পালন করেন?
দ্য ইসলামিক ইনফরমেশন ডটকম ও আল-জাজিরার তথ্য মতে কয়েকটি দেশ ও কিছু কিছু অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে সূর্য ডোবে না। সূর্য অস্ত গেলেও দেখা যায় দিনের আলো। এসব দেশ ও অঞ্চলগুলো হলো- নরওয়ে, ফিনল্যান্ড, সুইডেন, আলাস্কা, আইসল্যান্ড ও কানাডা।
নিশিথ সূর্যের দেশ অথবা মধ্যরাতের সূর্যের দেশ বলা হয় নরওয়েকে। অতি উচ্চ ভূ-প্রাকৃতিক অবস্থানের কারণে রাতেও সূর্যের আলো দেখা যায় সেখানে। দেশটিতে মে মাস থেকে জুন পর্যন্ত টানা ৭৬ দিন কখনও সূর্য ডোবে না। তবে সেখানে ২০ ঘণ্টা সূর্যের আলো খুব বেশি থাকে আর বাকি ৪ ঘণ্টা সূর্যের আলো কিছুটা কম থাকে।
আইসল্যান্ডেও সূর্য সম্পূর্ণ ডোবে না। এখানে সারারাত দিগন্তজুড়ে অনুভূমিকভাবে সূর্য পরিভ্রমণ করে। ইউরোপের এই বিশাল আইসল্যান্ডের মানুষরা মে মাস থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত অন্ধকার দেখতে পায় না। গ্রীষ্মের সময় এখানে মধ্য রাতে সূর্য অস্ত যায় এবং ভোর ৩টায় আবার সূর্যোদয় হয়।
ফিনল্যান্ডের বেশীরভাগ অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে টানা ৭৩ ঘণ্টা সূর্য ডোবে না। দেশের অবস্থান এমন যে, শীতকালে দেশের নাগরিকরা সূর্যের আলো থেকে বঞ্চিত হয় আবার সূর্য ওঠলে যেন তা আর ডুবতে চায় না। আবার সূর্য ডুবলে তা আর ওঠতে চায় না।
কানাডার ইনুভিক এবং উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলগুলোর মধ্যে কিছু জায়গায় গ্রীষ্মের সময় প্রায় টানা ৫০ দিন সূর্যের আলো দেখা যায়। দেশটি সারা বছরই তুষারে ঢাকা থাকে। আবার সুইডেনে মে মাস থেকে আগস্টের শেষ পর্যন্ত প্রায় মধ্যরাতে সূর্য ডোবে। ভোর চারটায় সূর্য ওঠে। দেশটিতে ৬ মাস দেরিতে উঠে সূর্য। আবার বাকি ৬ মাস দেরিতে ডুবে সূর্য।
আর্কটিক অক্ষের দক্ষিণের আরও একটি অঞ্চল আলাস্কা। মে মাসের শেষ থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত এখানে সূর্য ডোবেই না। শুধু এসব দেশ বা অঞ্চলই নই বিশ্বে এমন কিছু দেশ আছে যেখানকার কিছু কিছু অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে সূর্য ডোবে না। সেসব দেশের মসুলিমরাও কিন্তু নিয়ম মেনে রোজা পালন করে থাকেন। করেন সেহরি ও ইফতার।
জানা গেছে, যেসব অঞ্চলে সূর্য ভালোভাবে ডোবে না। দিনের আলো দেখা যায়। তারা পার্শ্ববর্তী দেশের সেহরি ও ইফতারের সঙ্গে মিল রেখে রোজা পালন করে থাকেন। পার্শ্ববর্তী দেশের সেহরির সময়ে সেহরি এবং ইফতারের সময় ইফতার করেন। তাদের হিসাবের সঙ্গে মিল রেখেই রোজা শুরু করেন এবং ঈদুল ফিতর উদযাপন করেন।
এসব দেশের মুসলিমদের করণীয় সম্পর্কে ফতোয়া দিয়েছেন ইউরোপিয়ান কাউন্সিল অব ফতোয়া অ্যান্ড রিসার্চ। তাদের ঘোষণা হলো- এসব দেশ ও অঞ্চলে বসবাসরত অধিকাংশ মুসলিম পার্শ্ববর্তী যেসব দেশে রাত-দিন সংঘঠিত হয়; সেসব দেশের রাত-দিন ও সময়ের সঙ্গে মিল রেখেই সেহরি ও ইফতার করবেন। সে দেশের চাঁদের হিসাব অনুযায়ী রোজা রাখা এবং ঈদ উদযাপন করবেন।