ডিজিটালাইজেশনকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে সরকার: ফখরুল
সাদাকালো নিউজ
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার ডিজিটালাইজেশনকে জনগণের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপির শীর্ষ এই নেতা বলেছেন, বর্তমান এই সরকার ডিজিটালাইজেশনকে জনগণের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। ডিজিটাল মাধ্যমে নিপীড়ন, জনগণের ওপর নজরদারি, ফোনকল রেকর্ড, অনলাইনে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন, অনলাইনে নারীদের প্রতি সহিংসতাকে উস্কে দেওয়া, ভিন্ন মতাবলম্বীদের ব্ল্যাকমেইল করা, ভুল তথ্য, অপতথ্য ও বিকৃত তথ্য-কন্টেন্ট জালিয়াতির মাধ্যমে প্রোপাগান্ডা চালানোসহ নানা অপরাধ করে চলেছে আওয়ামী লীগ সরকার।
রোববার (২৩ জুলাই) বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।
ইন্টারনেট সাঁটডাউনসহ সকল ডিজিটাল নির্যাতনের প্রতিবাদে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিএনপি মিডিয়া সেল।
মির্জা ফখরুল বলেন, একদিকে এই অবৈধ সরকার কখনো স্মার্ট বাংলাদেশের নামে সকল রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে নাগরিকদের সাইবার জগতের সকল ও সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। অন্যদিকে তাদেরই অযোগ্যতা এবং চরম অদক্ষতার দরুন প্রায় ৫ কোটি নাগরিকের ব্যক্তিগত, স্পর্শকাতর তথ্য ফাঁস হয়ে গেছে- যা বিদেশের একটি গণমাধ্যমের সূত্রে আমরা সবাই জানতে পেরেছি।
বিএনপির শীর্ষ এই নেতা বলেন, নাগরিকদের সেবা প্রদান এবং তাদের অধিকার সংরক্ষণের জন্য দেশে একাধিক প্রতিষ্ঠান আছে। তেমনি একটি প্রতিষ্ঠানের নাম বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি)। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় চলা এই প্রতিষ্ঠানটির কাজ হলো দেশের টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, পরিচালনা এবং সেবার মান দেখভাল করা। কিন্তু জনগণের টাকায় প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানটিকে বর্তমান স্বৈরাচারী সরকার জনগণের বিরুদ্ধে নিপীড়নের আরেকটি আধুনিক হাতিয়ার হিসেবে কাজে লাগাচ্ছে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, সরকার গণঅভ্যুত্থানের ভয়ে নতুন চক্রান্ত শুরু করেছে, ডিজিটাল শাঁটডাউনের মাধ্যমে মানুষের অধিকার হরণ করছে। বিএনপির কর্মসূচি ব্যাঘাত ঘটাতে সমাবেশের দিন ইন্টারনেট পরিসেবা বন্ধ রাখছে। বিটিআরসিকে সরকার জনগণের বিরুদ্ধে নিপীড়নের বিরুদ্ধে নতুন আধুনিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। এটি সুস্পষ্টভাবে ব্যক্তির নাগরিক অধিকারের লঙ্ঘন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ক্ষমতাসীন সরকার গণঅভ্যুত্থানের ভয়ে ভীত হয়ে প্রয়োগ করছে নতুন ডিজিটাল অস্ত্র ইন্টারনেট শাঁটডাউন। নির্যাতনকারী পুলিশ কেড়ে নিচ্ছে মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের ব্যক্তিগত ডিভাইস মোবাইল ফোন। মানুষকে আটকে তাদের ব্যক্তিগত মোবাইল তল্লাশির নামে গণহয়রানি করা হচ্ছে।
এ সময় ইন্টারনেট শাঁটডাউনের ঘটনাকে নাগরিক অধিকারের ভয়ংকর লঙ্ঘন উল্লেখ করে আগামী দিনের রাজনীতিকে সামনে রেখে মানুষের ডিজিটাল অধিকারকে আরও সংকুচিত করার আশঙ্কা প্রকাশ করেন বিএনপির মহাসচিব।
ফখরুল বলেন, চূড়ান্ত ফয়সালার সময়ে অনুপ্রবেশ করতে যাচ্ছে বিএনপির আন্দোলন। সরকারের সকল নির্যাতনকে ব্যর্থ করে আন্দোলন এগিয়ে চলছে।
সংবাদ সম্মেলন অন্যদের মধ্যে বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন ছাড়াও সদস্য সচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এনি, সদস্য শাম্মী আক্তার, রুমিন ফারহানা, কাদের গণি চৌধুরী, মীর হেলাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।