টেকসই অর্থনীতির জন্য মেধাস্বত্ব আইনের প্রয়োগ অপরিহার্য
মেধাস্বত্ব আইনের (আইপিআর) বিষয়ে ব্যাপক সচেতনতার ঘাটতি রয়েছে। দেশের ৫০ শতাংশ ব্যবসায়ীরই এ বিষয়ে ধারণা নেই। তবে টেকসই অর্থনীতির জন্য এই আইনের কার্যকর প্রয়োগ অপরিহার্য। আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (অ্যামচ্যাম) আয়োজিত সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ‘আইপিআর ফ্রেমওয়ার্ক শক্তিশালীকরণ : চ্যালেঞ্জ এবং উত্তরণের পথ’ শীর্ষক এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
অ্যামচ্যামের সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদের সভাপতিত্বে সংলাপে অতিথি ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (কাস্টমস) হোসেন আহমেদ। আইপির পলিসি অ্যাডভাইজার ও সিনিয়র কমার্শিয়াল স্পেশালিস্ট শিল্পী ঝা এর সঞ্চালনায় সংলাপে বক্তব্য দেন, বাংলাদেশ আইপি ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ, ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ড. মো. হাবিব, ইকোনমিক ফোরাম অব বাংলাদেশের (ইআরএফ) সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মৃধা, ফরেন ইনভেস্টর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ফিকি) সভাপতি জাভেদ আখতার, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) আশরাফ আহমেদসহ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও শিল্প মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা।
বক্তারা বলেন, সরকার আমাদের দেশীয় প্যাটার্নের সুরক্ষা দেবে এটিই স্বাভাবিক। কিন্তু বিদেশি প্যাটার্নের সুরক্ষা আগে দেওয়া কতটা যৌক্তিক। স্থানীয় শিল্প বাণিজ্য সুরক্ষায় মেধাস্বত্ব আইনের প্রয়োগ জরুরি। আমাদের দেশে অনেক আইন আছে কিন্তু প্রয়োগ নেই। এভাবে চলাটা ঠিক নয়। এছাড়া বিদেশি বিনিয়োগ চাইলে আমাদের এই আইনের প্রয়োগ করতে হবে। আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা মেধাস্বত্ব আইন নিয়ে সচেতন নয়। সেই সঙ্গে ডিজাইন আইন, কপিরাইট আইন ইত্যাদি বিষয়গুলোর গুরুত্ব অনেকেই জানেন না। এজন্য ব্যাপক প্রচারের কার্যক্রম থাকতে হবে। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা এবং মাস্টার্স কোর্স চালু করা যেতে পারে। বক্তারা আরও বলেন, মেধাস্বত্ব আইন, কপিরাইট আইন, প্যাটার্ন আইনসহ বিভিন্ন আইন যুগোপযোগী করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দ এরশাদ আহমেদ বলেন, টেকসই অর্থনীতির জন্য মেধাস্বত্ব আইনের প্রয়োগ অপরিহার্য। বিশ্বব্যাপী ব্যবসার জন্য একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসাবে গড়ে তুলতে হলে আইপিআর বিষয়ে প্রচার বাড়াতে হবে। তিনি জানান, পেটেন্ট আইনের প্রবিধান নিয়ে কাজ করছে সরকার। এক্ষেত্রে ইংরেজি সংস্করণ তৈরির কাজও চলছে। এছাড়া ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডিজাইন আইন সংশোধনের জন্য একটি খসড়া তৈরি করা হচ্ছে। তিনি জানান, বিভাগীয় পর্যায়ে এসব আইনের বিষয়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম থাকলেও জেলা পর্যায়ে এখনো চালু করা হয়নি। শিল্প মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যেই মেধাস্বত্ব এবং বার্ষিক ট্রেডমার্ক কোর্সের ওপর সংক্ষিপ্ত কোর্স করার সুযোগ দিচ্ছে।
অতিথির বক্তব্যে হোসেন আহমেদ বলেন, সংলাপে বলা হয়েছে কাস্টমসের রেজিস্ট্রেশনের জন্য প্রায় শতাধিক আবেদন আটকে আছে। এটা কমিউনিকেশন গ্যাপের কারণে হতে পারে। আমরা অটোমেটেড সিস্টেম চালু করেছি। আশা করা যাচ্ছে দ্রুত এসব সমস্যার সমাধান হবে। এছাড়া ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো চালু করতে ইতোমধ্যেই ২৯টি সরকারি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। এগুলো হয়ে গেলে ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীরা সুবিধা পাবেন।