জাপান গার্ডেন সিটিকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা
সাদাকালো নিউজ
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে রাজধানীর প্রতিটি ওয়ার্ডে একযোগে চিরুনি অভিযান শুরু করছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। এ সময় এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় মোহাম্মদপুরের জাপান গার্ডেন সিটি কর্তৃপক্ষকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
শনিবার (৮ জুলাই) সকালে এইডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় জাপান গার্ডেন সিটিকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাসির উদ্দিন মাহমুদ।
এদিন সকালে ওই আবাসিক এলাকায় আকস্মিক পরিদর্শনে আসেন ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম। আর তখনই জাপান গার্ডেন সিটির বেইজমেন্ট এইডিস মশার লার্ভা দেখতে পান তিনি।
ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, জাপান গার্ডেন সিটিতে গিয়ে কয়েকটি ভবনের বেইজমেন্টে দেখতে পাই গাড়ি ধোয়ার পর জমে থাকা পানিতে এইডিস মশার অসংখ্য লার্ভা। জীবন্ত মশাও সেখানে ওড়াউড়ি করছিল।
মেয়র বলেন, এসময় জাপান গার্ডেন সিটি ফ্ল্যাট ওনার্স কল্যাণ সমিতির প্রতিনিধিদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, এখানে এত মশা কীভাবে এল? তখন সমিতির সাধারণ সম্পাদক শহীদুর রহমান বলেন, আমরা নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখি। কিন্তু সিটি কর্পোরেশনের লোকজন কখনও এখানে মশা মারতে আসে না। নিয়মিত পরিষ্কার করলে মশার লার্ভা কীভাবে জমল- মেয়রের এই প্রশ্নে কোনো উত্তর দিতে পারেননি শহিদুর রহমান।
তখন আতিকুল ইসলাম বলেন, ভবনের ভেতরে জমে থাকা পানি সিটি কর্পোরেশন পরিষ্কার করবে না। এসব ভবনে আমাদের কর্মীরা ঢুকতে পারে না। শুধু এই এলাকা না ঢাকার অনেক ভবনে, বাড়িতে আমাদের কর্মীদের ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাসির উদ্দিন মাহমুদ বলেন, এখানে প্রচুর এইডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। এ কারণে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে কল্যাণ সমিতির সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদককে তিন মাসের কারাদণ্ড হবে।
চলতি বছর রাজধানীতে এইডিস মশার বিস্তার গত পাঁচ বছরের তুলনায় সবচেয়ে বেশি হওয়ায় ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি বছরের প্রথম দিন (১ জানুয়ারি) থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মোট ১১ হাজার ২৯৮ জন। এরমধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৯ হাজার ৬৮ জন। আর মারা গেছেন ৬৫ জন।
প্রতিবছর বর্ষাকালে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। ২০১৯ সালে দেশব্যাপী ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন। ওই সময়ে চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীসহ প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালে করোনা মহামারিকালে ডেঙ্গুর সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারাদেশে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। ওই বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এ ছাড়া ২০২২ সালে ডেঙ্গু নিয়ে মোট ৬২ হাজার ৩৮২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এরমধ্যে গত বছর মশাবাহিত রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে ২৮১ জন মারা গেছেন।