ছাত্রলীগ সভাপতির রহস্যজনক প্রয়াণ!
সাদাকালো নিউজ
শুক্রবার মধ্যরাত। ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে ভিড় করছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সবার চোখেই জল। কেউ হারিয়েছেন বন্ধু কেউ বা রাজনৈতিক অভিভাবক। রাজধানীর কবি নজরুল কলেজের ছাত্রলীগ সভাপতি ওয়াসিম রানার রহস্যজনক প্রয়াণে স্তুম্ভিত সবাই।
দোশরা জুন রাত সাড়ে ১২টার দিকে দরজা ভেঙে ওয়াসিমের নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে, চিকিৎসকরা জানান তিনি আর নেই। তার বয়স হয়েছিলো ৩০ বছর। হঠাৎ করে ছাত্রলীগ নেতার পরপারে পাড়ি দেয়ার ঘটনা কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না তার বন্ধুরা।
জানা গেছে, ওয়াসিম রানা কবি নজরুল কলেজের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র ছিলেন। রাজধানীর নিমতলীর চানখাঁরপুল এলাকায় একটি বাসায় থাকতেন ওয়াসিম। তার বাড়ি বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলায়।
ঠিক কি কারণে ওয়াসিম রানা না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন তা নিশ্চিত হওয়া যায় নি। কেউ কি তাকে শেষ করে দিয়েছে, নাকি নিজেই নিজেকে শেষ করে দিয়েছেন সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনি পুলিশও।
ওয়াসিম রানার বন্ধুরা বলছেন, সে সবসময় হতাশাগ্রস্থ থাকতো। তবে কী কারণে হতাশাগ্রস্থ থাকতো তা কখনো জানতে পারেননি তারা। এক বছর আগে দুনিয়া ছাড়েন ওয়াসিম রানার বাবা। তার এক ভাই ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ছাড়েন। টানা তিন বছর কষ্ট করার পর গেল বছরের নভেম্বরে ছাত্রলীগের সভাপতি হয়েছিলো সে।
আবার কেউ বলছেন, কলেজ শাখা ছাত্রলীগের এক নেত্রীকে বিয়ে করেছিলেন ওয়াসিম রানা। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে সেটা প্রকাশ্যে আসেনি। তবে বেশ কিছুদিন ধরে তাদের মধ্যে বিবাদ চলছিলো। এর জেরে স্ত্রীকে ভিডিওকলে রেখে নিজেকে শেষ করে দিয়েছেন তিনি। তবে ঘটনা যায় হোক না কেন রহস্য উন্মোচন করে বিচারের দাবি জানিয়েছে তার বন্ধুরা।
বিভিন্ন সূত্রের বরাতে পুলিশ জানিয়েছে, ব্যক্তিগত জীবনে কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন ওয়াসিম রানা। হতাশা গ্রাস করে ফেলেছিলো তাকে। যে কারণে চরম পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হন তিনি। যদিও কোনো চিরকুট নোট উদ্ধার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বংশাল থানার ওসি মজিবুর রহমান জানিয়েছেন, ঘটনাস্থল থেকে সিআইডির ফরেনসিক টিম বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছে। দেহ পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য। সেই রিপোর্ট হাতে আসার পরি সঠিক কারণ জানা যাবে।