ছাত্রদল নেতা জিসানের মোবাইলে ১১ অস্ত্রের ছবি
সাদাকালো নিউজ
ছাত্রদলের ছয় নেতার আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেপ্তার নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলেছে সরকার পতনের আন্দোলনে থাকা রাজনৈতিক দল বিএনপি। অকেজো অস্ত্র দিয়ে পুলিশ নাটক সাজিয়েছে, এ কথা বলছেন দলটির শীর্ষ নেতারা। এমন পরিস্থিতিতে এই মামলা গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করতে এবং দৃশ্যমান প্রমাণ সামনে আনতে তদন্তকারী গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) নির্দেশ দিয়েছেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
তদন্তে নেমে গ্রেপ্তার ছাত্রদল নেতাদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মমিনুল ইসলাম ওরফে জিসানের মোবাইল ফোন ঘেটে ১১টি বিদেশি অস্ত্রের ছবি পেয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। তথ্য পেয়েছে অস্ত্র সরবরাহকারী দুই ডিলার সম্পর্কেও।
গ্রেপ্তারদের মধ্যে জিসান এবং ছাত্রদলের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক মো. আরিফ বিল্লাহকে প্রথম দফায় দুই দিনের রিমাণ্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে ও তাদের জব্দ মোবাইল ফোনে চাঞ্চল্যকর কথোপকথন ও বার্তা পাওয়ার তথ্য জানিয়েছে ডিবি পুলিশ।
মামলার তদন্ত তদারককারী ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) রিফাত রহমান শামীম বলেন, জিসানের কাছ থেকে জব্দ করা মোবাইল ফোনে যে ১১টি অস্ত্রের ছবি পাওয়া গেছে, এর সঙ্গে তাদের কাছ থেকে উদ্ধার ৩টি আগ্নেয়াস্ত্রের হুবহু মিল রয়েছে। অস্ত্রের ডিলার জিসানের মোবাইলে জুন-জুলাই মাসে বার্তা পাঠিয়েছে এসব অস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে।
ডিবি পুলিশ বলছে, উদ্ধার হওয়া তিনটি নয়, ১১টি অস্ত্র সংগ্রহ করে ঢাকায় মজুদ করেছিল ওই ছাত্রদল নেতারা। অস্ত্রগুলো টেকনাফের একজন ডিলার ও পাবনার আরেকজন ডিলারের কাছ থেকে সংগ্রহ করার তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে। বাকি আটটি অস্ত্র উদ্ধারের তথ্য পেতে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
রাজধানীর লালবাগে ‘নাশকতার প্রস্তুতিকালে’ গত ১৯ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও মহানগর ছাত্রদলের ছয় নেতাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। পুলিশ জানায়, তাদের কাছে তিনটি বিদেশি পিস্তল ও ৩৬টি গুলি পাওয়া গেছে। এরপর আদালতের আদেশে গ্রেপ্তার ছয়জনের মধ্যে ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মমিনুল ইসলাম ওরফে জিসান ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক মো. আরিফ বিল্লাহকে দুই দিনের রিমাণ্ডে পায় ডিবি পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বুধবার তাদের আদালতে হাজির করে লালবাগ থানায় দায়ের হওয়া এই অস্ত্র মামলায় ফের ৫দিন রিমাণ্ডের আবেদন করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক আসাদুজ্জামান। পরে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকী-আল-ফারাবীর আদালত শুনানি শেষে জিসান ও আরিফের দুই দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেন।
দ্বিতীয় দফা রিমাণ্ডের প্রথম দিন বৃহস্পতিবার তাদের কাছ থেকে অবশিষ্ট আটটি আগ্নেয়াস্ত্রের বিষয়ে খোঁজ পাওয়ার চেষ্টা চালিয়েছে ডিবি পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদকারীদের একটি সূত্র জানায়, ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মমিনুল ইসলাম জিসানের সঙ্গে অস্ত্র সরবরাহকারীদের সঙ্গে কথোপকথনের তথ্য মিলেছে। রিমাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে ডিবি পুলিশের ডিসি রিফাত রহমান শামীম বলেন, গ্রেপ্তাররা ঢাকায় অস্ত্র মজুদ করছিলেন। রাজনৈতিক মাঠে শক্তি প্রদর্শন কিংবা মহড়ার প্রয়োজনে অস্ত্র ব্যবহারের পরিকল্পনা ছিল।