সিজার করলেন পশু চিকিৎসক, মা-নবজাতকের মৃত্যু
সাদাকালো নিউজ
নেত্রকোনার বারহাট্টায় পশু চিকিৎসকের সিজারের (এফিশিওটমি) পর সন্তানসহ শরীফা আক্তার নামে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পর এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। অভিযুক্ত পশু চিকিৎসক আবুল কাশেম নিজেই বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
গতকাল দুপুর দুইটার দিকে ওই উপজেলার চন্দ্রপুর গ্রামের দক্ষিণপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। প্রসূতি শরীফা একই গ্রামের বাক প্রতিবন্ধী হাইছ উদ্দিনের মেয়ে।
অভিযুক্ত ওই পশু চিকিৎসক একই উপজেলার জীবনপুর গ্রামের আবুল কাশেম। তিনি স্থানীয় এলাকার একজন পশু চিকিৎসক হিসেবে পরিচিত।
স্থানীয়রা জানায়, কিছুদিন ধরে তিনি পশুর পাশাপাশি মানুষের চিকিৎসাও করেন। আবুল কাশেম গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে হেরে যান।
নিহতের পরিবার থেকে জানা গেছে, শরীফা বারহাট্টা সরকারি কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পাশ করেছে। গত বছর পার্শ্ববর্তী সুনামগঞ্জ জেলার তাহেরপুর এলাকায় বিয়ে হয় শরীফার। তার স্বামীর নাম মহসিন মিয়া। সন্তান প্রসবের সময় ঘনিয়ে এলে গত সপ্তাহে স্বামীর বাড়ি থেকে চন্দ্রপুর বাবার বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।
ভুক্তভোগীর মা মাফিয়া আক্তার খাতুন জানান, সকালে শরীফার প্রসব ব্যথা শুরু হলে কাশেম ডাক্তারকে খবর দেওয়া হয়। তিনি রোগীকে দেখে বললেন, সবকিছু স্বাভাবিক আছে কোন সমস্যা নাই। আমরা নেত্রকোনা নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম কিন্তু তার কথায় ভরসা পেয়ে আর নেইনি।
বারহাট্টার সিংধা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাসিম তালুকদার বলেন, ‘কাশেম একজন পশুর চিকিৎসক। মানুষের চিকিৎসা বিশেষ করে সিজার করা তো তার একেবারেই উচিত হয়নি।’
অভিযুক্ত পশু চিকিৎসক আবুল কাশেম বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘সিজারের পর ওষুধ আনতে পাঠানো হয়েছিল। দূরের পথ ওষুধ ও সেলাই আনতে দেরি হওয়ায় এ ঘটনা ঘটেছে।’
তবে শুধু পশু নয় মানুষের চিকিৎসার সনদও তাঁর আছে বলে দাবি করেন তিনি। এমনকি দীর্ঘদিন থেকে মানুষের চিকিৎসা করছেন বলেও জানান।