গভীর রাতে চরমোনাই পীরের দরবারে জাহাঙ্গীর!
সাদাকালো নিউজ
সম্প্রতি শেষ হওয়া বরিশাল সিটি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতা মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম। নির্বাচনের দিন দুপুরে হাত পাখার এই প্রার্থীর ওপর চড়াও হন বেশ কয়েকজন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোকদ্দমা দায়ের না হলেও দুইজনকে ধরেছে পুলিশ।
ফয়জুল করিমের ওপর চড়াও হওয়ার ঘটনায় গেল শুক্রবার দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ইসলামী আন্দোলন। এই সমাবেশে নির্বাচন কমিশনের অপসারণ ও সরকারের পদত্যাগ দাবি করেছে দলটি। দেশজুড়ে এ নিয়ে যখন আলোচনা আর সমালোচনা ঠিক সেই মুহূর্তে আলোচনার পালে নতুন করে হাওয়া দিলো আওয়ামী লীগ থেকে বহিস্কৃত জাহাঙ্গীর আলম।
হঠাৎ করেই গাজীপুরের সাবেক এই মেয়রকে চরমোনাই পীরের দরবারে দেখা গেছে। সেখানে গিয়ে মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিমের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। এর ফলে সর্ব মহলে প্রশ্ন উঠেছে- কেন চরমোনাই পীরের সাথে জাহাঙ্গীর আলমের এমন সাক্ষাৎ ও বৈঠক।
গেল ১৫ই জুন রাতে বরিশালের কীর্তন খোলা নদীতে চরমোনাই শরীফে গিয়ে সাক্ষাৎ করেন জাহাঙ্গীর আলম। সেখানে বরিশাল নির্বাচনে অনাকাঙ্খিত ঘটনার শিকার মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিমের শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নেন তিনি। একিসঙ্গে জানান সমবেদনা। পাশাপাশি এদিন গভীর রাতে দুই নেতা একান্তে কিছু সময় বৈঠকও করেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মিডিয়া উপ-কমিটির সদস্য কে এম শরীয়াতুল্লাহ সংবাদমাধ্যমকে জানান, বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে জাহাঙ্গীর আলম চরমোনাইয়ের দরবার শরীফে এসে পৌঁছান। সেখানে প্রায় ১ ঘণ্টার মতো তিনি অবস্থান করেন। এসময় তিনি ফয়জুল করিমের শারিরীক অবস্থার খোঁজ-খবর নেন।
ফয়জুল করিমের সাথে জাহাঙ্গীর একান্তে বৈঠক করেন বলে জানান কে এম শরীয়াতুল্লাহ। তবে তাদের মধ্যে কি বিষয়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে সে বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি তিনি। তবে দাবি করেন, এটি কোনো রাজনৈতিক সাক্ষাৎ ছিলো না। মুফতি ফয়জুল করিমের কক্ষ থেকে বেরিয়ে জাহাঙ্গীর আলম গাজীপুরে ফিরে যান।
মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের সংখ্যা ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটুক্তির অভিযোগে ২০২১ সালের নভেম্বরে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয় জাহাঙ্গীরকে। একিসঙ্গে মেয়র পদ থেকেও তাকে সরিয়ে দেয়া হয়। পরবর্তীতে সাধারণ ক্ষমা চাওয়ায় ফের জাহাঙ্গীরকে দলে নেয় আওয়ামী লীগ।
দীর্ঘ ৬ বছর গাজীপুর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন জাহাঙ্গীর আলম। ২০১৮ সালে নৌকা প্রতীক পান তিনি। আর সেই নৌকা নিয়ে সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন। তবে সম্প্রতি শেষ হওয়া গাজীপুর সিটি নির্বাচনেও দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন জাহাঙ্গীর, সেটা না পেয়ে মাকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটে দাঁড় করান। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীকে পরাজিত করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিপুল ভোটে জয়ী হন জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন।