খেলা জমে যাবে, আমি উল্টো ওদের নামে অভিযোগ করব: পরীমণি
নাফিজা আক্তার
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে নিজের অশ্লীল ছবি ও ভিডিও সরানোর জন্য আইনি নোটিশ পেয়েছেন বর্তমান সময়ে ঢালিউডের আলোচিত তারকা পরীমণি।
সোমবার তাঁর ঠিকানায় এ নোটিশ পাঠিয়েছেন দুই আইনজীবী। যদিও নোটিশটি সোমবার রাত পর্যন্ত হাতে পান নি নায়িকা পরীমণি। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় পরীমণির প্রচারিত সব ধরনের অশ্লীল ছবি ও ভিডিও অপসারণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং পাশাপাশি যেসব ছবি বা ভিডিওর কোনো শৈল্পিক বা শিক্ষাগত মূল্য নেই, ভবিষ্যতে সেসব করা থেকে সম্পূর্ণরূপে বিরত থাকার জন্য লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
হাতে না পেলেও গণমাধ্যমে নোটিশের বিস্তারিত দেখেছেন পরী। লিগ্যাল নোটিশটি হাতে পেলে বেশ কয়েকটি পক্ষের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহন করবেন বলে জানান পরীমণি।
এ বিষয়ে প্রথম আলোকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে পরীমণি বলেন, ‘আমার পেজে এমন কোনো ভিডিও নেই যেটা আমাকে সরাতে হবে। কেউ যদি সেটা দেখিয়ে বলতে পারেন, আমি অবশ্যই তা সরিয়ে ফেলবো। ফাইভ স্টার হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানের কোনো ভিডিও বা স্টিল ছবি কি আমি ফেসবুক ছেড়েছি? আমার অনুমতি ব্যতিত এগুলো ছাড়া হয়েছে। কোথায় কে কোন ভিডিও দেখল, সেই ভিডিও তো আমার ঘাড়ে চাপাতে পারেন না।’
আলোচিত এই অভিনেত্রী পাল্টা প্রশ্নে বলেন, ‘ফেসবুক একাউন্ট খোলার পর থেকে এখন পর্যন্ত যেসব ভিডিও বা ছবি আপলোড করেছি, সেগুলোতো সবাই দেখেছেন। আমার ফেসবুকে কোথাও কি কোনো অশ্লীল ছবি আছে? যেসব ছবির ইঙ্গিত করে, আমাকে সেগুলো সরানোর জন্য লিগ্যাল নোটিশ দেয়া হয়েছে, সেসব ছবি কি আমি আপ করেছি? আমার আপ করা এমন একটি ছবিও কেউ দেখাতে পারবেন? এর আগে হাতে সিগারেটসহ দুটি ছবি আদালত থেকে সরাতে বলা হয়েছিল, এক ঘণ্টার মধ্যে সরিয়েছি।’
পরীমণি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘সবাই আমার পেছনে লাগে কেন রে ভাই? জন্মদিনের অনুষ্ঠানের পর আমাকে অপমান করে বানানো ভিডিও গুলোতে অনুষ্ঠানের গান বাদ দিয়ে অশ্লীল গান জুড়ে দিয়ে ভিডিওগুলো ভাইরাল করা হয়েছে। এখন খেলা জমে যাবে। যারা এ কাজ করেছে আমি উল্টো নামে অভিযোগ করব। আমার ব্যক্তিগত ভিডিও নিয়ে যারা অশ্লীল গান জুড়ে ভাইরাল করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেব।’
পরীমণি বলেন, একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেল আমার সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে, আমাকে অপমান করেছে। তিনি বলেন, ‘একটি দায়িত্বশীল চ্যানেল আমার জন্মদিনের অনুষ্ঠানের মূল গান বাদ দিয়ে অশ্লীল বাংলা গান জুড়ে ভিডিও প্রকাশ করেছে। কীভাবে করল এটা? তারা কী চায়? অনুষ্ঠানটি ছিল আমার ব্যক্তিগত, চার দেয়ালের মাঝে। আমার অনুমতি ছাড়া কেন আমার অনুষ্ঠানের ভিডিও প্রকাশ করা হলো? এখন যদি আমি তাদের নামে অভিযোগ করি, তাহলে এর বিচার করবে কে? আমি অবশ্যই ওদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলব।’
‘আমার তো বেকার সময় নেই। জেলখানা থেকে এসে জমে থাকা বহু কাজ করতে হয়েছে। ভেবেছিলাম, সব ছেড়ে কাজকে ধ্যান-জ্ঞান করব। তাই যখন ভিডিও গুলো ভাইরাল হয় তখন কোন অভিযোগ করিনি।
কিন্তু এখন এ আমি কী দেখছি? পরীমণি এখন কাজ করছে, কারও ভালো লাগছে না। আমি জাস্ট কাজের মধ্যে থাকতে চেয়েছিলাম। আমাকে কাজ করতে দেওয়া হলো না। ঠিক আছে, আমিও খেলব এবার। যারা এসব করছে, তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করব। ভিডিও ধরে ধরে সবগুলোর নামে অভিযোগ আনব।’
পাল্টা নোটিশ পাঠিয়ে দুই আইনজীবীর নামে ক্ষতিপূরণ দাবি করবেন পরীমণি। তিনি বলেন, ‘আমি এখন ওই দুই উকিলের নামে নোটিশ পাঠাব। আমাকে ডিস্টার্ব করেছেন তাঁরা, আমার কাজ হ্যাম্পার করেছেন। আমি এখন তাঁদের কাছে ক্ষতিপূরণ চাইব। আমার মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করেছেন তারা, যার ক্ষতিপূরণ অবশ্যই দিতে হবে তাঁদের। এই নোটিশের খবর দেখে আমি ট্রমায় চলে গেছি। আগামী দুই মাস তো কাজই করতে পারব না।